শিক্ষা

বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচি

  প্রতিনিধি ২ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:১১:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক বিভাগের শিক্ষক ও জেনোসাইড সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে দ্রুত অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

রবিবার (২ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগঠনটি। সমাবেশ শেষে ঢাবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল।

মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ও ‘সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ’-এর পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ নামের বইয়ের ৪০ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন— ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিজে হাজির হয়ে বঙ্গবন্ধুকে ‘জয় পাকিস্তান’ বলতে শুনেছেন।এই বইয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ বোঝাতে চেয়েছেন—বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা চাননি।তার উল্লিখিত পুস্তকে এমন কথাও লিখেছেন,যার অর্থ দাঁড়ায় এই যে,১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যা ঘটেছে,তা ১৯৪৮ সালের ‘জেনোসাইড কনভেনশনের’ আওতায় পড়ে না। জেনোসাইড কনভেনশনের সংজ্ঞাভুক্ত হতে হলে একটি মানবগোষ্ঠী কর্তৃক অন্য এক মানবগোষ্ঠীকে আক্রমণ করতে হয়।’’

মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয়,অধ্যাপক ইমতিয়াজ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা করে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে লিখেছেন,একটি মৌলিক প্রশ্ন হলো,আসলেই কি ৩০ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছিল, নাকি মৃতের সংখ্যা কম ছিল?’তার এমন দুঃসাহসিক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ লেখনীর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার অপরাধে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করার দাবি জানাচ্ছি।একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে,তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।কোনও পাকিস্তানি দালাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারে না।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন,বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে।সুযোগ পেলে এসব বিষধর সাপরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষদেরকে ছোবল দেবে।ঢাবির আইন বিভাগ থেকে বিতাড়িত হওয়া শিক্ষক রহমতুল্লাহ কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার যোগদান করলো?এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদেরকেও খুঁজে বের করে মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ যে অপরাধ করেছেন,সেটা অমার্জনীয়।তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।অধ্যাপক ইমতিয়াজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে চরমভাবে অবমাননা করেছেন।তার জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে পারে না।গণহত্যা গবেষণা কেন্দ্রে সে থাকতে পারে না।তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুনের সঞ্চালনায় ও সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে আরওও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল,বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদারসহ প্রমুখ।

আরও খবর

Sponsered content