শিক্ষা

প্রথম দিনই শিক্ষকদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি

  প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২৩ , ২:১৮:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল প্রতিনিধি।।প্রথম দিনই শিক্ষকদের আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছি।ক্যাম্পাসের প্রতিটা জায়গা আমার খুব প্রিয়।আমি প্রথম দিন থেকেই শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের আন্তরিকতা,বড়দের স্নেহ ও আমার প্রাণপ্রিয় সহপাঠীদের সহযোগিতামূলক ব্যবহারে উপলব্ধি করেছি।আমাকে কখনো একাকিত্ব উপলব্ধি করতে দেয়নি। মনে হচ্ছে এখানে এসে একটা নতুন পরিবার উপহার পেয়েছি।

ফারজানা দীপা
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ।

কলেজটিতে আগের থেকে শিক্ষার মান কমে গেছে
সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ আবেগের জায়গা। আবেগের ক্যাম্পাস।দক্ষিণ অঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে ব্রজমোহন কলেজে পড়ার।তেমনই আমারও ইচ্ছে ছিলো। এ ক্যাম্পাসের প্রতি আবেগ জন্মানোর একটা নির্দিষ্ট কারণ অবশ্যই আছে।আমি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলায় থাকি।এসএসসি পরীক্ষার পর পরই বিএম কলেজের নাম শুনেছি ব্যাপক হারে।এর আগে তেমন শুনিনি।যখন এইচএসসি পরীক্ষা দিলাম,তখন অনার্স লাইফ নিয়ে চিন্তিত হলাম।বিএম কলেজের নাম যেহেতু অনেক শুনেছি,সেহেতু বিএম কলেজে পড়ার একটা ইচ্ছে লালন করতে থাকি।

ধীরে ধীরে বিএম কলেজ সম্পর্কে খোজ খবর নিলাম গুগল, ফেসবুক ইত্যাদি ব্যবহার করে।সে সময় সঠিক পথ দেখানোর মতো মানুষ ছিলো না।নিজে থেকে সবকিছু চেষ্টা করেছি। একটাই সিদ্ধান্ত ফাইনাল করেছি যে,আমার বিএম কলেজে পড়তে হবে।যেই ভাবা সেই কাজ।আবেদন এর সময় যখন আসলো,তখনই কোনো পাঁচ সাত না ভেবে বিএম কলেজে আবেদন করলাম।

কলেজে ফার্স্ট চয়েজ দিলাম ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি। কারণ এ সাবজেক্টের প্রতি একটা ভালোবাসা ছিল।আবেদন করার পর,আবেদন কপি জমা দিতে আসলাম বরিশাল। আমি এবং আমার এক বন্ধু।বন্ধুর এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে বরিশাল শহরে আসলাম।তখন আমরা দু’জনেই বরিশাল শহরে প্রথমবার,কাউকেই চিনি না।তাই বড় ভাইকে নিয়ে ক্যাম্পাসে আসলাম।বড় ভাই প্রথমে আমাদেরকে শহীদ মিনার গেটে নিয়ে গেলেন।যেখানে আবেদন কপি জমা নেওয়া হয়। আমরা দুজনে আমাদের আবেদন কপি জমা দিলাম।

আবেদন কপি জমা দেওয়ার পর বন্ধুটা বলে উঠল,হে আল্লাহ!আমি যেন এ কলেজে চান্স না পাই।যদি চান্স পাই তাহলে আমি আমার ঈমান ধরে রাখতে পারবো না।আগে জানলে এ কলেজে আবেদন করতাম না।আমি বললাম,হঠাৎ এ কথা কেন?বন্ধু উত্তরে বলল,এখানকার ছেলের-মেয়েদের চলাফেরার যা অবস্থা দেখতেছি,সেটা কোনো সভ্য সন্তানদের চলাফেরা না।

আমি বললাম দেখো,কে কেমন চলাফেরা করলো সেটা আমাদের দেখে লাভ নাই।যদি আমরা চান্স পাই আমাদের ফোকাস থাকবে ক্যারিয়ারের উপর।কারণ সবাই এখানে ফ্রী, কেউ কাকে বাধা দেওয়ার মতো নেই।যে যেরকম কাটাবে, তার সাথে সেরকমই হবে।কথা বলতে বলতে সিনিয়র ভাই আমাদের পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখালো।ক্যাম্পাসটা এত বড় লাগলো যে,হাটতে হাটতে পা ব্যাথা হয়ে গেছিলো।

কিন্তু প্রথম দেখাতে এর সৌন্দর্য খুবই উপভোগ করেছি।তার ঠিক কয়েকদিন পর যখন চান্স পাওয়ার মেসেজ আসলো, তখন অনেক খুশি হইছিলাম।তখন ভাবছিলাম,এবারের মতো আমার ছোট্ট স্বপ্নটা পূরন হয়ে গেছে।

এ ক্যাম্পাসে আছি এক বছর হলো।এক বছরে এ ক্যাম্পাসের প্রতি আবেগটা প্রচুর বেড়ে গেছে।প্রতিটি জায়গা এখন আপন আপন মনে হচ্ছে।আর ক্যাম্পাসের প্রতি অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।এটি ক্যাম্পাস অপেক্ষা পার্ক হিসেবে বেশি পরিচিত।ক্যাম্পাসে যখনই যাই,তখনই কোনো না কোনো নতুন মানুষকে দেখা যায়। ক্যাম্পাসকে একটা পার্ক পার্ক ফিল হয়।

ক্যাম্পাসের প্রতি চিন্তাভাবনা নেগেটিভ-পজিটিভ মিলিয়ে। আগে শুনেছি,বিএম কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ৩-এর মধ্যে থাকতো।এসে জানতে পারি,এটি সেরা ১০-এর মধ্যেও নাই।মূলত পড়াশোনা মানসম্মত হচ্ছে না।স্টুডেন্টদের প্রতি তেমন একটা নজর দেয়া হচ্ছে না।মাত্র কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া,স্টুডেন্টদের নিয়ে তেমন কেউই ভাবে না।

এ ক্যাম্পাসের পড়াশোনার মান আগের মতো নেই।এটা অবশ্য কলেজ প্রশাসনের অবহেলার কারণে হতে পারে।আরও কারণ হতে পারে শিক্ষকদের পড়ার প্রতি আগ্রহ কম এবং স্টুডেন্টদের ইচ্ছেও কম।যদি এসব সমস্যা থেকে বের হওয়া যায় এবং সেই অনুযায়ী সমাধান করা হয় তাহলে অবশ্যই বিএম কলেজ তার হারানো জৌলুশ ফিরে পাবে।

রাকিবুল হাসান সাইমুন
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানে নিজকে মেলে ধরার স্থান
বিএম কলেজের জীবন সুন্দর এক স্বপ্নের নাম।উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে অনেকটা যুদ্ধময় পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।বিএম কলেজ মানেই ক্যাম্পাস,বিএম কলেজ মানেই বন্ধু,আড্ডা,বড় ভাইয়া-আপুদের অকৃত্রিম ভালোবাসা আর বিস্তৃর পরিসরে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরা।এই অনুভূতিগুলো আসলে বিরল।

একজন বিএম কলেজের ছাত্র হিসেবে আমার ক্ষেত্রেও অনুভূতিগুলো একই রকমের।প্রিয় ক্যাম্পাস,প্রিয় লাল-নীল বাস,বন্ধু,আড্ডা এবং নিজেকে মেলে ধরার মধ্যে আমি আমার জীবনের তৃপ্তি খুঁজে পাচ্ছি।

বিএম কলেজের প্রতিটি সকাল যেন সোনালী আলোর মতো দীপ্ত। প্রতিটা দিন যেন মুক্তঝরা দিন।এমন মনে হয়,যদি দিনটা না শেষ হতো,তাহলে বুঝি ভালোই হতো।বিএম কলেজে প্রত্যেকটি আঙিনা এখন আমার মনের সাথে সম্পৃক্ত। আমার জীবনের মধ্যে বড় একটা প্রাপ্তি হলো,আমি একজন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সবুজ সমহরের রঙিন এই বিএম কলেজের ছাত্র।

হাফেজ মো. মাহাজাবিল আল নাঈম খাঁন,
ইসলাম শিক্ষা বিভাগ

আরও খবর

Sponsered content