বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংবাদ

ফ্রিল্যান্সিংয়ে মাসিক ২লাখ টাকা আয়-১৪ হাজার বেকার মানুষকে শিখিয়েছেন

  প্রতিনিধি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩:৪০:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মাদারীপুরের মেহেদি হাসান শুভ।মাত্র ৫ বছরে ১৪ হাজার বেকার মানুষকে শিখিয়েছেন ফ্রিল্যান্সিং।পেয়েছেন আইসিটি খাতে দেশি-বিদেশি অর্ধশত পদক।নিজে মাসে আয় করছেন দুই লাখ টাকার বেশি,তেমনি অন্যদেরও সুযোগ করে দিয়েছেন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের।শুভ’র এমন কর্মকাণ্ডে খুশি পরিবারের সদস্যরাও।এতে বাড়ছে দেশের রেমিট্যান্সও।

বাসায় বসে কম্পিউটারের মাধ্যমে মাত্র ৪ ঘণ্টা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন শুভ।এতে যোগ দিচ্ছেন বেকার যুবক-যুবতীরা। কীভাবে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায় সেই নির্দেশনা পাচ্ছেন তারা। ৩-৬ মাসের কোর্সের জন্য জনপ্রতি দিতে হয় ৮-১০ হাজার টাকা।রয়েছে দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য ফ্রিতে শেখার সুযোগও।চাকরিরের পেছনে না ছুটে চাকরির ক্ষেত্রে তৈরি করতে পারছে অনেকেই।ফিরেছে স্বচ্ছলতাও।

সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের পশ্চিম মাদ্রা গ্রামের আব্দুল কাদের সরদারের ছেলে শুভ।২০১৫ এইচএসসি পাস করার পর নিজে শেখেন ফ্রিল্যান্সিং।পরে চর্চা চরে ২০১৯ সালে অন্যদের শেখানোর জন্য পরিপূর্ণভাবে এই ফ্রিল্যান্সিং কার্যক্রম শুরু করেন।

জানা যায়,১৪ হাজার মানুষকে শিখিয়েছেন কীভাবে করতে হয় ফ্রিল্যান্সিং।নিজেও মাসে আয় করছেন গড়ে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা।পেয়েছেন জাতীয় পর্যায়ে রাইজিং ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড,মাদার তেরেসা পদক,মহাত্মা গান্ধি ইয়ুর্থ অ্যাওয়ার্ডসহ দেশি-বিদেশি আইসিটি খাতে অর্ধশত পদক। সেই ।

মেহেদি হাসান শুভ’র ছোট বোন সাথি আক্তার বলেন, ‘আমরা দুইভাই একবোন।আমার ভাইয়া ফ্রিল্যান্সিং করে, নিজে অন্যদের শিখাচ্ছেন।ভাইয়া এখন দেশ সেরা ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে একজন।এটা ভাবতেই গর্ব বোধ করি।’

শুভ’র মা খালেদা বেগম বলেন,‘পুরো পরিবারের দায়িত্ব এখন শুভ নিয়েছে।ওর বাবা আগে একটি ঢাকায় চাকরি করতো।সামান্য অর্থ দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হতো।ছেলের এমন আয়-উন্নতি দেখে এখন চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে আমরা এখন অনেক সুখে আছি।’

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুরুমদি এলাকার তুষার সরদার নামে এক যুবক জানান,স্নাতক পাস করার পর চিন্তা করেছিলাম কী করবো,মাথায় কাজ করছিল না।পরে অনলাইনের মাধ্যমে জানতে পারি,ফ্রিল্যান্সিং করলে ঘরে বসে আয় করা যায়।তাই আর দেরি না করে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পন্ন করে এখন মাসে এক লাখ টাকার বেশি আয় করছি। এজন্য কারো কাছে ধরনা ধরতে হয় না।কাজ শেষে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডলার চলে আসে,পরে বাংলাদেশে ব্যাংকের মাধ্যমে দেশীয় টাকা উঠাতে পারছি।’

মাদারীপুরের কালকিনির উত্তর রমজানপুর গ্রামের আসাদুজ্জামান আসাদ পাইক বলেন,ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রশিক্ষণ নেই।এখন মোটামুটি আয় করছি,এটার পেছনে লেগে থাকলে ভবিষ্যতে আরও আয় বাড়বে।

বরগুনার আমতলী নতুন বাজার এলাকার আরিফ হোসেন খলিফা বলেন,অনলাইনে ৬ মাসের একটি পরিপূর্ণ কোর্স করে এখন বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার) আয় করছি।এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুবই ভালই আছি।এক্ষেত্রে কারো কাছে হাত পাততে হয় না।’

ফ্রিল্যান্সার মেহেদি হাসান শুভ বলেন, ‘শহর কিংবা গ্রাম, যেকোনো জায়গায় বসে একটি ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব।এতে একদিকে ভাগ্যের পরিবর্তন,অন্যদিকে দেশের রেমিট্যান্স বাড়ানো সম্ভব।নিজে প্রতিষ্ঠিত হবার পাশাপাশি বেকারদের সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলাই মূল্য লক্ষ্য।কারো অর্থনৈতিক সমস্যা হলে,ফ্রিতেও রয়েছে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।’

আরও খবর

Sponsered content