আবহাওয়া বার্তা

ফেব্রুয়ারি মাসেই ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে

  প্রতিনিধি ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:১৩:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সাধারণত মার্চের শেষে বা এপ্রিলের শুরুতে দেশে ঝড়বৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসেই ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে।আবহাওয়া অফিসও বলছে,নানা কারণে দীর্ঘ মেয়াদে বৃষ্টিপাতের পরিমাণগত দিক ও স্থানের পার্থক্য ঘটেছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) গনমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক জানান,এ ধরনের বৃষ্টিপাত খুব বেশি অস্বাভাবিক নয়; বরং দেশের জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্যেরই অংশ।তবে এটা ঠিক যে, বৃষ্টিপাতের বৈশিষ্ট্যের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।

তিনি বলেন,দেশে সাধারণত ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসে দেশে শীতকালীন বৃষ্টিপাত হয়।তবে এর কোনো ধারাবাহিকতা নেই। এটা কোনো বছর হয়,কোনো বছর হয় না।আবার এই বৃষ্টি কোনো কোনো জেলায় হয়,কোনো জেলায় হয় না।ফেব্রুয়ারি মাসের বৃষ্টিটাও তেমন।আবার প্রতিবছরই যে ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টিপাত হয় সেটিও নির্দিষ্ট নয়।

দীর্ঘমেয়াদী তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন,শীতকালীন বৃষ্টিপাত হওয়ার সঙ্গে সময় ও স্থানের পার্থক্য আছে।আমরা যদি ১৯৫০ থেকে বর্তমান পর্যন্ত জলবায়ুর তথ্যের দিকে তাকাই, তবে প্রতিবছরই যে ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে ব্যাপারটা তেমন নয়।কোনো বছর হয়েছে কোনো বছর হয়নি।আবার অন্যভাবে বলা যায়,গত ৭৫ বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫ মিলিমিটার।শুধু সিলেটে এই গড় ৩৬ মিলিমিটার।’

কিন্তু এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ময়মনসিংহে ১১ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ১৯ মিলিমিটার,সিলেটে ৫ মিলিমিটার, কিশোরগঞ্জে ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।এ ছাড়া আরও কয়েকটি জেলায় সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে।তবুও গড়ে ২৫ মিলিমিটার হচ্ছে না।আবার সিলেটেও মাত্র ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।অর্থাৎ শীতকালে কোথায় কখন বৃষ্টি হবে,কতটা বৃষ্টি হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা ভীষণ কঠিন।বৃষ্টিপাতের স্থান বদলের সঙ্গে সঙ্গে পরিমাণও কমবেশি হয়,বলেন তিনি।

ড. আবুল কালাম বলেন, ‘সাধারণত পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে বাংলাদেশে শীতকালে,বিশেষ করে ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসে বৃষ্টিপাত হয়।তবে এ বছর সেটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাসে।কিন্তু বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে তা পুরোপুরি ঠিক নয়।বরং অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা বিস্তৃত এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে।’

তার মতে,বৈশ্বিক বায়ুপ্রবাহ,জলবায়ু পরিবর্তন,সমুদ্র স্রোতের পরিবর্তন,বনাঞ্চল ধ্বংস প্রভৃতি কারণে বৃষ্টির পরিমাণগত দিক ও বৃষ্টিপাতের স্থান ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে।এর কারণে শীত শুরু বা বিদায় নেয়ার সময়ের ক্ষেত্রেও পার্থক্য হচ্ছে।তবে গত ৭৫ বছরের তথ্যে দেখা যায়,বেশির ভাগ বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়,অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের সিলেট,সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ জেলার দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ছাড়া শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।পাশাপাশি সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ যশোরে ৩৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শুক্রবার ঢাকায় সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৫টা ৫৮ মিনিটে এবং শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সূর্যোদয় ভোর ৬টা ২৫ মিনিটে।

আরও খবর

Sponsered content