সম্পাদকীয়

প্রথম প্রথম মৃত্যু দেখলে কষ্ট পেতাম, কান্না আসতো। এখন আর সেটা হয় না!!!

  প্রতিনিধি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২:২৬:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।প্রায় দিনই ঘুম ভাঙে কোন কোন দুঃসংবাদ শুনে। সড়ক দূর্ঘটনা, হত্যা, আত্মহত্যা, বজ্রপাত, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎপৃষ্টে মৃত্যু, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু-ইত্যাদি ইত্যাদি। পেশাগত কারণে প্রতিনিয়ত মৃত্যু সংবাদ শুনে আর লাশ দেখতে দেখতে অনুভূতিটা একদম ভোতা হয়ে গেছে। প্রথম প্রথম মৃত্যু দেখলে কষ্ট পেতাম, কান্না আসতো। এখন আর সেটা হয় না।

তবে অনেকদিন পর আজকে সকালে একটি মৃত্যু সংবাদ আমাকে পীড়া দিয়েছে। এটি কোন স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নয়, ভয়ংকর হত্যাকান্ড!এর থেকেও ভয়ংকর হত্যাকান্ডের খবর শুনেছি, লাশও দেখেছি। কিন্তু এতটা কষ্ট পাইনি।

হ্যা, আজকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ‍উপজেলার চক ঝুরঝুরি গ্রামে নাসিমা খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধুকে শ্বাসরোধে ও জোরপূর্বক গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গভীর রাতে নাসিমার স্বামী সুমন ও তার তিনজন সহযোগী বাড়ি থেকে ২/৩শ মিটার দূরের একটি পুকুরপাড়ে তাকে নিয়ে শ্বাসরোধে ও জোরপূর্বক গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করিয়ে হত্যাচেষ্টা করে।

প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে এসে একজন ব্যক্তি বিষয়টি দেখতে পান। তখন তিনি তার স্ত্রী, ভাইসহ প্রতিবেশীদের ডেকে ঘটনাস্থলে গেলে ঘাতক স্বামী ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। তখনও বেঁচে ছিলেন নাসিমা।

এরপরের ঘটনাগুলো সবচেয়ে বেশি কষ্টদায়ক:

১. অর্ধমৃত নাসিমাকে উদ্ধার করে যে স্বামী তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে সেই স্বামীর বাড়িতেই নিয়ে গেল গ্রামবাসীরা।
২. তার শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীরা বাড়ির গেইট পর্যন্ত খুললো না। তারপরও গ্রামবাসী মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরানো নাসিমাকে বাড়ির বাইরে রাস্তার উপর রেখে দিল।
৩. তার ভিডিও ধারণ করলো, জিজ্ঞাসাবাদ করলো। অথচ পাশে গিয়ে কেউ দাঁড়ালো না। হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজনও মনে করলো না।
৪. দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলো শত শত গ্রামবাসী।

কি ভয়ংকর মানবতা তাই না!

আরও খবর

Sponsered content