অর্থনীতি

পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে,এটা আরও কমবে

  প্রতিনিধি ২৫ নভেম্বর ২০২৩ , ২:৫৭:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।আমদানি-রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর প্রভাব পড়েছে বাজারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন,পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে,এটা আরও কমবে।আবার রেমিট্যান্সেও গতি ফিরেছে। আগামী মাসেই মিলবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি।

সবকিছু মিলে আরও এগিয়ে যাবে অর্থনীতি।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে,বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দর কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।এর আগে গত বুধবার ডলারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা)।আমদানি-রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ করেছে।

ফলে এখন থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে পাওয়া যাবে ১১০ টাকা।আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করা হবে ১১০ টাকা ৫০ পয়সায়।গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঘোষণা করে আসছে বাফেদা এবং এবিবি।প্রথমে রেমিট্যান্সে ১০৮ টাকা এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

পরে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে উভয় ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়।আর আমদানিতে নির্ধারণ করা হয় ১১১ টাকা। তবে গত বুধবার প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা করে কমানোর ঘোষণা দেয় বাফেদা-এবিবি।

এ বিষয়ে বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ছে। বাণিজ্য ঘাটতি বেশ কমেছে।

বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট বিওপি) ঘাটতি থেকে উদ্বৃত্ত হয়েছে।সব মিলিয়ে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে।তাই আমরা ৫০ পয়সা করে কমিয়েছি।এই ধারা অব্যাহত থাকলে পর্যায়ক্রমে আরও কমানো হবে।আশা করছি,ডলারের বাজার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।আফজাল করিম বলেন,বুধবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১১ টাকা।বৃহস্পতিবার থেকে তা হয় ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ডলারের দর ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বৃহস্পতিবার থেকে এ দুই ক্ষেত্রেই ডলারের দর হয়েছে ১১০ টাকা।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, বাফেদার ডলারের দর কমানোর ঘোষণা ঠিকই আছে। কেননা,বৈদেশিক মুদ্রার দর নির্ধারিত হয় ডলারের চাহিদা ও জোগানের ওপর।ইতোমধ্যে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। নির্ধারিত দরে ডলার না পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি দিয়ে ডলার কেনায় ইতোমধ্যে কয়েক দফায় বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এখনো এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সরবরাহ বাড়ার কারণে রিজার্ভ থেকে আরও ডলার বিক্রি করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক জ্বালানি,সারসহ বিভিন্ন সরকারি আমদানির বিপরীতে ডলার বিক্রি করে। যে কারণে এখনো বিক্রি না করার পর্যায়ে আসেনি।

এদিকে বছরের মাঝামাঝি সময়ে কম আসা রেমিট্যান্স আবারও বাড়তে শুরু করেছে।অক্টোবরের পর নভেম্বরেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাসের প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসীরা ১১৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি।গত বছর এই ১৭ দিনে এসেছিল ১০০ কোটি ডলার। জানতে চাইলে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম ইসমাইল হক বলেন,বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খোলা বাজারে ডলারের দাম ১২৩ টাকায় নেমে আসে। খোলা বাজারে ডলারের দাম লাফ দিয়ে বেড়েছিল।যেভাবে বেড়েছিল সেভাবেই কমছে।ডলারের দাম আরও কমবে। ডলার সংকটের প্রভাব কাটাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ,এলসিতে শতভাগ পর্যন্ত মার্জিন,দর যাচাইসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে গত বুধবার ১৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।

আরও খবর

Sponsered content