রাজনীতি

আমি একজন প্রার্থী,কথা বলার স্বাধীনতা আমার আছে-এস এম শফিকুর

  প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২৩ , ৫:৫৯:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনা প্রতিনিধি।।খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান উচ্চ আদালত থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে তিনি নির্বাচনের পরিবেশ ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।গতকাল মঙ্গলবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত মেয়রসহ সব প্রার্থীর সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতবিনিময় সভায় তাঁর সঙ্গে ঘটা একটি ঘটনাও উঠে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে।

আজ দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে মতবিনিময় সভার ঘটনার কথা উল্লেখ করে এস এম শফিকুর বলেন,আমি একজন প্রার্থী,কথা বলার স্বাধীনতা আমার আছে। আমি সেখানে (সভায়) বলেছিলাম, বিভিন্ন ওয়ার্ডে নৌকার মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস আছে। আবার ছাত্রলীগ,যুবলীগ,স্বেচ্ছাসেবক লীগের অফিসগুলো খোলা থাকে।সন্ধ্যার পর ওই সব অফিসে অনেক লোক জড়ো হয়।এতে সাধারণ মানুষ মনে করেন,সব লোক বোধ হয় ওই দলের।এটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করে।সন্ধ্যার পর ওই সব অফিস বন্ধ রাখা যায় কি না,এমন একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম।তখন আমাকে নিয়ে কিছু মানুষ পেছন থেকে দুয়োধ্বনি দেয়।তারা কারা ছিল আমি দেখিনি;দেখতেও চাই না।এখন যে রাজনৈতিক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে,ওই ঘটনা সেটা প্রমাণ করে।আসলে আচরণগত কারণেই মানুষ রাজনীতিবিদদের অপছন্দ করে।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শফিকুর রহমান আরও বলেন,আমার কথা বলায় বাধা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় কমিশনারের মতো একজন উচ্চপদস্থ মানুষ তখন বলেছেন,গণতন্ত্রের গ নেই”।এমন পর্যায়ের মানুষ যদি এমন কথা বলেন,তখন বুঝতে হবে দেশের মানুষ কোন অবস্থায় আছে।আসলে ওই কথাটা রাজনীতিবিদদের বলার কথা ছিল।আমি আশা করেছিলাম,সদ্য সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ঘটনার সময় তাঁর সমর্থকদের থামাবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রজীবন থেকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ বলে দাবি করেন শফিকুর রহমান।গতবার জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচন করলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন,জাতীয় পার্টি সরকারের অংশীদার দল।মানুষ সরকারকে বা তাদের অংশীদারকে ভোট দিতে চায় না।তা ছাড়া জাতীয় পার্টি একটি আঞ্চলিক দল; খুলনায় তাদের ভোটার নেই।’

শিল্পকলা মিলনায়তনের ওই সভায় উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, চার-পাঁচজন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সমর্থক পেছন থেকে শফিকুরকে দুয়োধ্বনি দিচ্ছিলেন।তাঁদের একজন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ওরফে কাজল, নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ তাঁকে বাধাগ্রস্ত করছে,হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এসব বলছিলেন তিনি।একজন প্রার্থী অন্য একটা দল বা একটা গোষ্ঠীকে নিয়ে ঢালাও অভিযোগ করায় তখন সবাই পেছন থেকে ‘ভুয়া, মিথ্যা কথা’ এসব বলতে থাকেন।

যা ঘটেছিল মতবিনিময় সভায়:-মতবিনিময় সভায় গতকাল বক্তব্যের সময় শফিকুর রহমান যখন ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যালয় নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন পেছন থেকে সরকারদলীয় কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থক ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন।এরপরও কথা চালিয়ে যাওয়ায় ‘কথা সত্য না,মিথ্যা,মিথ্যা’ বলে চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা।তাঁদের চেঁচামেচিতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ অন্যরা শুনতে পাচ্ছিলেন না।স্বতন্ত্র প্রার্থী তখন বলছিলেন,আমাকে বলতে দিন প্লিজ।’

ঘটনার সময় মতবিনিময় সভার সভাপতি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী চেয়ার ছেড়ে মাইকের সামনে এসে চিৎকারকারীদের উদ্দেশে বলেন,পেশিশক্তি শো করছেন?আমি তাই মনে করি।বেশি বাড়বেন না।শোনেন, আইন হাতে নেবেন না।তিনি (স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী) কথা বলছেন,তাঁকে কথা বলতে দেন।নির্বাচন কমিশনের সচিবের অনুমতি নিয়ে তিনি কথা বলছেন,প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে।আপনি তাঁকে ভুয়া ডাকবেন কেন?এখানে তো গণতন্ত্রের গ-ও নাই।সাবধান করে দিলাম আপনাকে।আমি আপনার ছবি তুলেছি।এখানে রাষ্ট্র বসে আছে।আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করি,যে যাঁর কথা বলেন,শালীনতার সাথে বলেন,নিয়মের সাথে বলেন।নিজেকে মহামহিম মনে করবেন না।’

বিভাগীয় কমিশনার তখন আরও বলেন,এখানে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করবেন না।এটা আমরা করতে দেব না।কেউ বেশি বাড়াবাড়ি করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।নির্বাচনের সুন্দর একটি পরিবেশ আছে খুলনায়।নির্বাচনের পরিবেশকে অশান্ত করবেন না।সুন্দর একটি নির্বাচন হবে এখানে।’

মতবিনিময় সভায় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল,নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশ কমিশনার,ডিআইজি,জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content