আরো

পর্যটনে ৭৫০ কোটি টাকার ব্যবসা ৩ দিনে

  প্রতিনিধি ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ , ১:২৯:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।তিন দিনের সরকারি ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায়।এর মধ্যে কক্সবাজার,রাঙামাটি, কুয়াকাটা, সুন্দরবন ও সিলেটে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।পর্যটকের চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বন বিভাগ, ট্যুরিস্ট কম্পানি ও হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষকে।তিন দিনে শুধু এই পাঁচ এলাকার পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে।

কক্সবাজার : কক্সবাজারে অন্তত ৩৬০ কোটি টাকার বাণিজ্যের অংশীদার হয়েছেন স্থানীয় হকার, যানবাহনের শ্রমিক, মালিক থেকে শুরু করে হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষসহ আরো অনেকে।সাপ্তাহিক ছুটিসহ গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উদযাপন পর্যন্ত টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে সরগরম হয়ে ওঠে কক্সবাজার।ছুটি শুরুর আগের রাত বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজারে আসতে থাকে পর্যটকরা। সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টসহ মেরিন ড্রাইভের হিমছড়ি, দরিয়ানগর,ইনানী পাথুরে সৈকত,ইনানী গাজীরটেক ও পাটুয়ারটেক সৈকতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন,‘দৈনিক একজন পর্যটকের থাকা-খাওয়া,কেনাকাটাসহ সব কিছু মিলে তিন হাজার টাকা করে খরচ হবে।সেই হিসাবে তিন দিনে জনপ্রতি খরচ হবে ৯ হাজার টাকা।এভাবে চার লাখ পর্যটকের খরচ দাঁড়াবে ৩৬০ কোটি টাকা।’

রাঙামাটি : হ্রদ-পাহাড়ের শহর রাঙামাটিতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক ভ্রমণ করেছে।এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।তাঁদের মতে, রাঙামাটি শহর ও সাজেকে গত তিন দিনে প্রায় চার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে।

জেলা পুলিশের পরিচালিত পলওয়েল পার্ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিনই পার্কে চার থেকে পাঁচ হাজার পর্যটক প্রবেশ করেছে।সে হিসাবে তিন দিনে প্রায় ১৫ হাজার পর্যটক পার্কে প্রবেশ করে।৩০ টাকা হারে প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।আবার পার্কের কটেজ,হলরুমভাড়া,খাবারদাবারসহ সব মিলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার ব্যবসা হয়েছে।

রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দীন সেলিম বলেন,তিন দিনে শুধু হোটেলগুলোতেই প্রায় কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে।

সাজেক কটেজ-রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি রাহুল চাকমা জন বলেন, ‘ছুটি তিন দিন থাকলেও আমাদের এখানে পাঁচ দিন ভালো ব্যবসা হয়েছে।কটেজভাড়া ও রেস্টুরেন্টে খাবার বাবদ মালিকরা এই কয় দিনে প্রায় দুই কোটি টাকা রোজগার করেছেন।জিপের আসা-যাওয়া যোগ করলে সেটা আরো বেশি হবে।’

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) : পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর শীত মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাখো পর্যটকের আগমন ঘটেছে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায়।কুয়াকাটা পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী এবং হোটেল-মোটেল মালিকরা টানা তিন দিনের সরকারি ছুটিতে ৩০০ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন বলে দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।
কুয়াকাটা পৌর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহম্মেদ তপু বলেন,গত তিন দিনের সরকারি ছুটিতে কুয়াকাটায় আসা দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে।কুয়াকাটার সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন পর্যাপ্ত আবাসিক হোটেল এবং উন্নতমানের খাবার হোটেল আর বিনোদন কেন্দ্র না থাকা।এখানে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে পর্যটকের আনাগোনা আরো বাড়বে।

শরণখোলা (বাগেরহাট) : পর্যটকের ঢল নামে সুন্দরবনের ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে।খুলনা, মোংলা ও শরণখোলার ছোট-বড় ৪৫টির মতো ট্যুরিস্ট লঞ্চের সবগুলোই ছিল লোকে লোকারণ্য।তিন দিনের প্যাকে ট্যুর ও ডে ট্যুর মিলিয়ে ট্যুর কম্পানির আয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা,যা স্বাভাবিক ছুটির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

বন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে,তিন দিনের প্যাকে ট্যুর এবং ডে-ট্যুরের লঞ্চ ও পর্যটক থেকে প্রায় ২৫ লাখ রাজস্ব আয় হয়েছে,যা পুরো পর্যটন মৌসুমের প্রায় অর্ধেক;যেখানে এবারের মৌসুমের জুলাই থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছিল ৪০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।

সিলেট : সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে যেন পর্যটকদের বাঁধভাঙা স্রোত।সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও তিন দিনে এই খাতে ব্যবসা হয়েছে ৬৬ কোটি টাকার বেশি।এই তিন দিনে সাদাপাথরে শুধু গাড়ি পার্কিং আর নৌকা ভাড়া থেকেই ৩০ লাখ টাকার বেশি আয় হয়েছে বলে জানিয়েছে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের নৌকাঘাট ইজারা কর্তৃপক্ষ।

আরও খবর

Sponsered content