সারাদেশের খবর

পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় দুই মাস ইলিশের পোনা জাটকাসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ

  প্রতিনিধি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৪:৩৫:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি।।পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশের পোনা জাটকাসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার (১ মার্চ) থেকে অভয়াশ্রম কার্যক্রম শুরু হবে।

এ সময়ে চাঁদপুরের জেলার ৪৪ হাজারের অধিক জেলে বেকার হয়ে পড়বে।তবে জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা নিবন্ধিত জেলেদের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ৪ মাস খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

জাতীয় সম্পদ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স সচেতনামূলক প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে,ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা রক্ষায় চাঁদপুর,শরীয়তপুর,লক্ষীপুর,বরিশাল ভোলার পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের ৬টি নদী অঞ্চলে মার্চ-এপ্রিল অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।এ সময় সকল প্রকার জাল দিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।

চাঁদপুর জেলা সদর,হাইমচর,মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমের অন্তর্ভুক্ত।অভয়াশ্রমের কার্যক্রম শুরুর সাথে এ চার উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়বে।সরকার জেলার নিবন্ধিত ৪৪ হাজার জেলের মধ্যে ৪০ হাজার জেলের জন্য প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চার মাসের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে।

চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি ছোট প্রজাতির মাছের পোনা রক্ষায় কম্বিং অপারেশনের সমন্বয় করে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।জানুয়ারি মাসের চাল বিতরণ করা হয়েছে, জানুয়ারির চাল বিতরণ চলছে।

তবে ৪ হাজার জেলের চাল বরাদ্দ না আসায় তাদের পরিবার পরিজনের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর,কল্যাণপুর,তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার,শহরের বড় স্টেশন টিলাবাড়ী,পুরাণবাজার রনাগোয়াল ও দোকানঘর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, জেলেরা তাদের নৌকা ডাঙ্গায় তুলে আনছেন।অনেকে আবার তাদের নৌকা এবং নৌকার ইঞ্জিন মেরামত করছেন।

তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার এলাকার জেলে নুর উদ্দিন জানান, সরকার নদীতে অভিযান দিলে মাছ ধরতে নদীতে নামেন না তিনি।কিন্তু জেলার বাহির থেকে অন্য জেলেরা এসে জাটকা ধরে নিয়ে যায়।এ কাজটি নিয়ন্ত্রণ করার দাবি জানান তিনি।

চাঁদপুর কান্ট্রি ফিসিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক জানান,আমরা আড়ৎদার ও বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে জাল-নৌকা মেরামত,অংশীদার জেলেদের অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকি।এছাড়া অনেক অংশীদার জেলে সাংসারিক প্রয়োজনে লোন নিয়ে থাকেন।অভয়াশ্রমের সময় কিস্তির টাকা পরিশোধে তারা চরম বেকায়দায় পড়ে।

এছাড়া বরাদ্দ না আসায় জেলার ৪ হাজার নিবন্ধিত জেলে চাল পায়নি।তিনি চাল সহায়তা থেকে বঞ্চিত নিবন্ধিত ৪ হাজার জেলের জন্য দ্রুত সহায়তার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান। পাশাপাশি অভয়াশ্রমের সময় কিস্তি আদায় বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা টাস্কফোর্সের সভাপতি ও জেলা প্রশাকের নিকট দাবি জানান।

চাঁদপুরের মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, মেঘনার ৭০ কিলোমিটার নদীঅঞ্চলে অভয়াশ্রম কার্যক্রম বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স প্রস্তুতি নিয়েছে।আমাদের জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা,নৌ-পুলিশ,কোস্টগার্ড,নৌ-বাহিনী ও মৎস্য বিভাগ দুই মাস নদীতে নিয়মিত অভিযান চালাবে।আশা করি জেলেরা জাটকা নিজেদের সম্পদ বিবেচনা করে আহরণ থেকে বিরত থাকবে।

আরও খবর

Sponsered content