সারাদেশ

পদ্মা তীরের মানুষের রাতে ঘুম নেই-নদী কবলগ্রাসে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে লৌহজং

  প্রতিনিধি ২৩ মে ২০২৩ , ২:২৩:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি।।মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অসময়ে পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।এতে পদ্মা তীরের মানুষের রাতে ঘুম নেই।দিশেহারা অবস্থায় শেষ সম্বলটুকু রক্ষার চেষ্টা করছে বাসিন্দারা।এদিকে এ ভাঙনরোধে মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে পুরোদমে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে,৩২ কোটি টাকার নতুন প্রকল্পে সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ২৫০ কেজির প্রায় ৮ লাখ বালুর বস্তা ফেলা হবে।এরপর বালু ও সিমেন্ট মিশ্রিত ১২৫ কেজির আরও পৌনে ২ লাখ বস্তা ফেলা হবে পদ্মা সেতুর বাম তীরে।বস্তা ফেলায় নদী তীরের আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্ষার আগেই স্থায়ী ব্যবস্থা এবং পদ্মা সেতুর কাছে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি লৌহজং-টেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া এলাকায় বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লৌহজং উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মো. ওসমান গণি তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল আউয়াল, মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাকিবুর রহমান প্রমুখ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,এ বছর বর্ষা শুরু হবার আগেই পদ্মা ভাঙনে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে বেজগাঁও, গাঁওদিয়া,লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের হাজারো মানুষ। এসব এলাকার মানুষ তাদের শেষ সম্বল রক্ষা করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে।তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির তৎপরতা এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় দ্রুত গতিতে (বালি ভর্তি) জিও ব্যাগের ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে লৌহজংয়ের খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ির দিঘিরপাড় পর্যন্ত ৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় পদ্মার ভাঙন রোধে সরকার প্রায় ৪৪৬ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে গত বছরের এপ্রিল থেকে।২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার কথা।কাজের অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ।এ কাজ ধীর গতিতে এগুচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।এতে স্থানীয় জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।তাদের দাবি অতি দ্রুত এ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন রোধে ৪৪৬ কোটি টাকায় বাঁধ নির্মাণ চলছে। এর বাইরে আরও সাড়ে ৪ কিলোমিটারে ভাঙন দেখা দেয়ায় নতুন ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।তবে বর্ষার আগেই আকস্মিক নদী ভাঙন দেখা দেয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হয়েছে।’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী ভাঙা লোকদের রক্ষায় সব চেষ্টা চালাচ্ছেন। শুধু বালুর বস্তা ফেলেই নয় ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন,যারা পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে বালু কাটছে তাদের কোনো ছাড় নেই।অবৈধ বালু লুটকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান,পদ্মার ভাঙন রোধে ৪৪৬ কোটি টাকার ৯ পয়েন্ট স্থায়ী বাঁধ নিমাণ প্রকল্পের কাজ চলছে।এর সঙ্গে আরও ৪ পয়েন্ট ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।বর্তমানে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content