অপরাধ-আইন-আদালত

দোষী সাব্যস্ত হলে বেনজীরকে দেশে ফিরতেই হবে-সরকার কোনো ছাড় দেবে না-

  প্রতিনিধি ৩ জুন ২০২৪ , ৪:২১:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় গত ১৮ এপ্রিল।এরপর সংস্থাটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিপুল সম্পদ।কিন্তু অনুসন্ধান চলার মধ্যেই গত ৪ মে সপরিবার দেশ ছেড়েছেন বেনজীর।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতা শেখ আবদুল হাইয়েরও কোনো খোঁজ নেই।তিনিও সপরিবার দেশ ছেড়েছেন বলে দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে।দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতে ধরা পড়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার।

প্রশ্ন উঠেছে,দুদক,গোয়েন্দা সংস্থা,পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থাকে ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এই আলোচিত ব্যক্তিরা বিদেশে চলে গেলেন? নাকি তাঁদের বিদেশ চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং এখন চলছে লোকদেখানো অনুসন্ধান ও আইনি ব্যবস্থা। পর্যবেক্ষক মহল মনে করে,বেনজীর আগেও সরকারের ছাড় পেয়েছেন। এখনো পাচ্ছেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন,বিদেশ চলে যাওয়া বোঝাপড়ার অংশ হিসেবে ঘটছে কি না,সে প্রশ্ন ওঠা যৌক্তিক।সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার চোখ এড়িয়ে সপরিবার বিদেশ চলে যাওয়ার সুযোগ নেই।বিশেষ করে আলোচিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন,বেনজীরকে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি তাঁকে যাঁরা সহায়তা করেছেন, সুরক্ষা দিয়েছেন,তাঁদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। সেই সামর্থ্য কি সরকারের আছে?

বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন।এর আগে তিনি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়।

সরকার-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ অবসরের পরও পুলিশি নিরাপত্তা পেয়েছেন।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেই সময়ের বিজ্ঞপ্তি বলছে,তাঁকে গাড়িসহ সাদাপোশাকের ছয়জন পুলিশ সদস্যের একটি দল নিরাপত্তা দেবে।তিনি দুজন সশস্ত্র দেহরক্ষী পাবেন। তাঁর বাসায় তিনজন পাহারাদার থাকবে।

এদিকে দুদক অনুসন্ধান চালিয়ে এখন পর্যন্ত বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের ৬২১ বিঘা জমি,১৯টি কোম্পানির শেয়ার,গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট,৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র,৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) খুঁজে পেয়েছে।দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন।বেনজীর ও তাঁর পরিবারের বিভিন্ন জায়গায় আরও জমি আছে বলে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে।

বেনজীর,তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক তলবও করেছে। ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা ও তিন মেয়েকে ডাকা হয়েছে ৯ জুন।

দুদকের অনুসন্ধান শুরুর আগে থেকেই বেনজীর অনেকটা আড়ালে ছিলেন।গত ২৭ মে গুলশানে বেনজীর পরিবারের বাসভবনে গিয়েও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।বাসার একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেছিলেন,তিনি মাসখানেক বেনজীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেখেননি।পুলিশ সূত্রে জানা যায়,বেনজীর সপরিবার ৪ মে দেশ ছাড়েন।

বেনজীর,তাঁর স্ত্রী ও তিন মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক তলবও করেছে। ৬ জুন বেনজীর আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা ও তিন মেয়েকে ডাকা হয়েছে ৯ জুন।

দেশ ছাড়ার আগে বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সূত্রে।

বেনজীরের দেশে থাকা না–থাকা নিয়ে গত শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ‘তাঁকে (বেনজীর) আমরা এখনো নিষেধাজ্ঞা দিইনি।সে যদি নিষেধাজ্ঞার আগে চলে গিয়ে থাকে…৷ আমি এখনো কিন্তু সঠিক জানি না,সে আছে নাকি চলে গেছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বেনজীর বিষয়ে প্রতিদিনই সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করছেন।প্রতিদিনই তিনি কথা বলছেন। গতকাল রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,বেনজীর বিদেশে থাকলেও তাঁর বিচার চলবে।দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে দেশে ফিরতেই হবে।সরকার কোনো ছাড় দেবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন,তাঁকে (বেনজীর) আমরা এখনো নিষেধাজ্ঞা দিইনি।সে যদি নিষেধাজ্ঞার আগে চলে গিয়ে থাকে…৷ আমি এখনো কিন্তু সঠিক জানি না,সে আছে নাকি চলে গেছে।’

এর আগে গত শুক্রবার ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন,বেনজীরের দেশত্যাগের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বিষয়টি স্পষ্ট নয়।গত শনিবার তিনি বলেছিলেন,বেনজীরের অপরাধ ব্যক্তিগত।সে অপরাধের জন্য তাঁদের শাস্তি পেতেই হবে। আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করছে।

প্রশ্ন উঠেছে,বেনজীরের অপরাধের দায় শুধু ব্যক্তিগত কি? তিনি সম্পদ গড়েছেন,জোর করে হিন্দুদের জমি কিনেছেন, সেই জমিতে র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যদের নিয়োজিত রেখেছেন র‍্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপি থাকার সময়। সরকার তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাঁকে অবসরের পরও নিরাপত্তা দিয়েছে।বেনজীর যে বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনছেন,নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন,এটা সরকারের অজানা থাকার কথা নয়।

বেনজীর ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিলেন,বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে গেলেন,তাঁর মতো একজন ব্যক্তির গতিবিধি গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিল না,এসব বিষয় বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মনে করে পর্যবেক্ষক মহল।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন,মন্ত্রীদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়।বেনজীর বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যাবেন,সেটা সরকার জানবে না,এটা হয় না।

প্রশ্ন উঠেছে,বেনজীরের অপরাধের দায় শুধু ব্যক্তিগত কি? তিনি সম্পদ গড়েছেন,জোর করে হিন্দুদের জমি কিনেছেন, সেই জমিতে র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যদের নিয়োজিত রেখেছেন র‍্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপি থাকার সময়।
বেনজীরকে কি আটকানো যেত

দুদক আইনে অনুসন্ধান বা তদন্ত পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কিছু বলা নেই।২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর দুদক এক চিঠিতে আতাউর রহমান নামের এক ব্যক্তি যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ সুপার (এয়ারপোর্ট) বরাবর চিঠি দিয়েছিল।দুদক বলেছিল,আতাউরের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান আছে।

চিঠির বৈধতা নিয়ে আতাউর হাইকোর্টে রিট করেন। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ হাইকোর্ট একটি রায় দেন।এতে বলা হয়, এ বিষয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি প্রণয়ন না হচ্ছে,ততক্ষণ অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ে কাউকে বিদেশ যেতে বিরত রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে।আদালত আরও বলেছিলেন,বিদেশ যেতে কাউকে বিরত রাখতে যথাযথ আইন বা বিধি প্রণয়নের এখনই সময়।

দুদক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছিল। ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ পর্যবেক্ষণসহ আপিল নিষ্পত্তি করেন।

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানিয়েছিলেন,কারও দেশত্যাগে বিধিনিষেধ আরোপের তিন কার্যদিবসের মধ্যে তা যথাযথ আদালতকে জানিয়ে অনুমোদন নিতে হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন,মন্ত্রীদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়।বেনজীর বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যাবেন,সেটা সরকার জানবে না,এটা হয় না।

বেনজীরের বিদেশ ঠেকাতে দুদক আদালতে কোনো আবেদন এখনো করেনি।সংস্থাটির আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন,বেনজীরের আয় অপরাধলব্ধ কি না,তার কিছু তথ্যপ্রমাণ না থাকলে বিদেশ যাওয়া রোধ করার আবেদন করা সম্ভব হয় না।দুদক এখনো জানে না তাঁর আয় অপরাধলব্ধ কি না।

অবশ্য বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির হোতা আবদুল হাইয়ের আয় যে অপরাধলব্ধ তার প্রমাণ পেয়েছে দুদক।তাঁর বিরুদ্ধে ৫৮টি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ারা জারি আছে।কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

দুদকের কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় বলেছেন,আবদুল হাই কোথায় আছেন,তা তাঁরা জানেন না।তিনি দেশে না দেশের বাইরে,সে বিষয়টিও দুদকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কখনো স্পষ্ট করেনি।আবদুল হাইকে গ্রেপ্তারের বিষয়েও জোরালো কোনো উদ্যোগ কখনো দেখা যায়নি।

জাতীয় পার্টির আঞ্চলিক পর্যায়ের নেতা আবদুল হাইকে ২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় আওয়ামী লীগ সরকার।অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতে তিনি পদত্যাগ করেন।পরে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আবদুল হাই চেয়ারম্যান থাকার সময় বেসিক ব্যাংক থেকে ২ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার হয়।

গণমাধ্যমে আবদুল হাইয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির বহু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে কোনো কোনো সংস্থা গণমাধ্যমকে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত রাখার জন্য চাপ দিত।

অর্থ আত্মসাতের এসব ঘটনা সরকারের জ্ঞাতসারেই হচ্ছিল। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে ও সংসদের বাইরে বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎকে ডাকাতির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ২০১৯ সালে বলেছিলেন,এত বড় কেলেঙ্কারির পর আবদুল হাইকে গ্রেপ্তার না করা দুদকের ব্যর্থতা।

গণমাধ্যমে আবদুল হাইয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির বহু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে কোনো কোনো সংস্থা গণমাধ্যমকে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত রাখার জন্য চাপ দিত।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদক ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে।তবে মামলায় আবদুল হাইকে আসামি করা হয়নি। ২০২৩ সালের জুনে এসে আবদুল হাইকে মোট ৫৮টি মামলার অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়।এর মধ্যে পেরিয়ে গেছে আট বছর।এই দীর্ঘ সময়ে দুদক আবদুল হাইকে গ্রেপ্তার করেনি। তাঁর বিদেশ যাওয়াও আটকাতে পারেনি।

শাহদীন মালিক আরও বলেন,অবস্থাটি চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ার মতো।বেনজীর আহমেদের বিষয়ে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে,সেটা এক দিনের বিষয় নয়।এটা সরকারের কেউ জানবে না, সংস্থাগুলো জানবে না; তাহলে তাদের পোষার দরকার কি?

আবদুল হাই ও বেনজীরকে বিদেশ যেতে কোনো বাধা না দেওয়া হলেও সরকারবিরোধীদের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার বাইরেও তৎপরতা দেখা গেছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ গত ১২ ডিসেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন।তাঁর বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

হাফিজ উদ্দিন তখন জানান,বাধা দেওয়ার পরদিন তিনি হাইকোর্টে একটি রিট করেন।পরে (১৪ ডিসেম্বর) তিনি বিদেশ যান। তখন আর বাধা দেওয়া হয়নি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন,দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা আলোচিত ব্যক্তিদের বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে চাইলে সরকারের হাতে অনেক কৌশল থাকে।সরকারই তাঁদের আটকাতে চায়নি। বেনজীর অথবা আবদুল হাইকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে,এটা কেউ বিশ্বাস করেন না। ষএর মাধ্যমে আলোচিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।

সুপ্রিম কোর্টের শাহদীন মালিক বলেন,অবস্থাটি চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ার মতো।বেনজীর আহমেদের বিষয়ে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে,সেটা এক দিনের বিষয় নয়। এটা সরকারের কেউ জানবে না,সংস্থাগুলো জানবে না; তাহলে তাদের পোষার দরকার কি?

আরও খবর

Sponsered content