প্রতিনিধি ১৪ জুন ২০২৩ , ৫:৩৭:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের পর তরুণীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র; পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বুধবার সকালে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, অপহরণ করে মুক্তিপণও দাবি করা হয়েছিল।পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে খিলগাঁও থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান মতিঝিল বিভাগের খিলগাঁও জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার আরিফুল ইসলাম সরকার।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- দীন ইসলাম (২৭) ও সাইফুল ইসলাম অপূর্ব (২৮)।
জরুরি সেবা নম্বরের দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান,সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল থেকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম ৯৯৯- এ ফোন করেন।তিনি পুলিশকে জানান,তার হলের জুনিয়র এক শিক্ষার্থী মঙ্গলবার রাতে মালিবাগে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল।ভোরে জানা যায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে এবং ফোন নম্বর বন্ধ থাকলেও মেসেঞ্জার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে পরিচিতজনদের কাছে থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছিল।
মিনহাজুলের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সাত্তার বলেন, “মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আটক শিক্ষার্থী জানাচ্ছিলেন তাকে খুব মারধর করা হয়েছে এবং উলঙ্গ করে ছবি তোলা হয়েছে। এখন এক লাখ টাকা না পেলে ছাড়া হবে না।”
পরে প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসা শনাক্ত করে খিলগাঁও থানা পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে (২৩) উদ্ধার এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল জানান, দুপুরে পরীক্ষা থাকায় ওই শিক্ষার্থী চলে গেছে; তাই বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তার সঙ্গে দেখা করতে খিলগাঁও এলাকা এসেছিলেন ওই শিক্ষার্থী।তারপরেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন।
তিনি বলেন, “পরীক্ষা শেষে তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এরপরেই তার সঙ্গে কথা বলার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।”
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মিনহাজুল জানান,পরীক্ষার বিষয়ে কথা বলতে রাতে ওই শিক্ষার্থীর কয়েকজন বন্ধু ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পায়নি।পরে তাকে তারা বিষয়টি জানান। এরপর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তারা শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন; একই সঙ্গে ৯৯৯- এ ফোন করে অবহিত করা হয়।
তিনি বলেন, “সকালে শাহবাগ থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে জানা যায় ওই শিক্ষার্থীর ফোনের লোকেশন দক্ষিণ গোড়ানে। এরপরই ৯৯৯- এ লোকেশনের বিষয়টি জানানোর পর তারা খিলগাঁও থানায় যোগাযোগ করিয়ে দেয়। পরে আমরা কয়েকজন খিলগাঁও থানা পুলিশের সার্বক্ষণিক সহায়তা নিয়ে দক্ষিণ গোড়ান এলাকায় গিয়ে দেখি দুই অপহরণকারীর সঙ্গে ওই শিক্ষার্থী হেঁটে আসছেন।এরপরেই পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে।”
অপহরণকারীরা ওই শিক্ষার্থীকে সারারাত একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে আটকে রেখে তার মেসেঞ্জার ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আদায়ও করেছে জানিয়ে মিনহাজুল বলেন,সর্বশেষ সকালে মুক্তিপণ হিসেবে দুই হাজার টাকাও চেয়েছিল।টাকা দিতে অস্বীকার করায় অপহরণকারীরা এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে গোড়ানের একটি জায়গা থেকে বুঝে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল।
“কিন্তু মোবাইলের লোকেশন অনুযায়ী আমরা বেলা ১১টার দিকে তাদের রাস্তায় পেয়ে যাই।”
এ অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ সদস্য জানান, গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দলনেতাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ একটি বাড়িতে অভিযান চালায়।কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি।দলনেতা ওই বাড়িতে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন।ধারণা করা হচ্ছে দলনেতা ওই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত।