জাতীয়

টাকা দিয়ে ফরিদপুরের জনগণকে কিনতে কেউ পারে নাই,পারবে না-প্রধানমন্ত্রী,শেখ হাসিনা

  প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৩৯:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।।আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের কেউ কেউ টাকা ছড়াচ্ছে“আমি এই টাকাওয়ালাদের টাকা ছড়ানো…খুব ভালো কথা, টাকা তারা ছড়াক।কারণ যতো টাকা বানিয়েছে কিছু যাবে জনগণের হাতে।তবে একটা কথা স্মরণ করাতে চাই,ওই টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় না,টাকা দিয়ে ফরিদপুরের জনগণকে কিনতে কেউ পারে নাই,পারবে না।”

মঙ্গলবার বিকালে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য করার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি।অনেককে একেবারে সেই বলতে গেলে নর্দমা থেকে টেনে তোলা হয়েছে।তাদের পয়সা বানানোর, ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দিয়েছি; মিডিয়া চালানোর সুযোগ দিয়েছি।এখন তারা টাকা ছড়ায়; তারা মনে করে, টাকা দিয়েই সব কেনা যাবে।

তিনি আরও বলেন, “এ (ফরিদপুরের) মাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মাটি,এই মাটি খাঁটি মাটি।কাজেই একমাত্র নৌকা; এই নৌকা মার্কা-সেই দিবে আপনাদের সমাধান।কাজেই সেই কথাটাই সবাইকে মনে রাখতে হবে।”

প্রায় ৪০ মিনিটের বক্তৃতায় তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে আবারো নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

নুহু নবীর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে এই নৌকা মার্কা।এই নৌকা মার্কা ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের উন্নতি হয়।”

এর আগে তিনি ফরিদপুর,রাজবাড়ী ও মাগুরার নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

টাকা দিয়ে ফরিদপুরের মানুষকে কেনা যায় না:শেখ হাসিনা
আগে দক্ষিণের মানুষকে রাজধানীতে যাতায়াত করতে নদীপথের ঝক্কি পোহাতে হতো,সেখানে পদ্মাসেতু চালু করায় যে সুফল মিলছে তা মনে করিয়ে দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, “আজকে প্রায় সাড়ে ১১টার পরে রওনা হয়ে ফরিদপুর চলে এসেছি।মাত্র দুই ঘণ্টা,সোয়া দুই ঘণ্টার মধ্যে ফরিদপুর আর ঢাকা।আমাদের শুধু ফরিদপুর না,গোটা দক্ষিণ অঞ্চল-প্রত্যেক জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা,রাস্তাঘাট,পুল-ব্রিজ ব্যাপকভাবে করে দিয়েছি।

“যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে যাচ্ছি,আরও কাজ বাকি। আমাদেরকে এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইউক্রেইন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে আমাদের আমদানিকৃত সকল পণ্যের অধিক মূল্য দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে।যে কারণে মূল্যস্ফীতি হয়েছে।কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে অনেক।”

বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “অতিমারির সময় খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা টিসিবির মাধ্যমে ৫ কোটি মানুষকে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য দেওয়া শুরু করেছি,যা এখনো চলমান রয়েছে। এছাড়াও আমরা বিধবা,বয়স্ক,মাতৃকালীন,প্রতিবন্ধীদের কথা চিন্তা করে সরকারিভাবে ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

“ভূমিহীন ও গৃহহীনদের নিজের থাকার ব্যবস্থা করেছি,যা পৃথিবীতে মডেল।বর্তমানে দেশের ৩৩টি জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত,পর্যায়ক্রমে সব জেলাও এর আওতায় আসবে।”

বিএনপির-জামায়াত সরকারের শাসনামলের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন,“সেই সরকার দেশকে অনেক পিছিয়ে দিয়ে ছিল,দেশের গ্যাস সম্পদ বিক্রি করেই তারা ক্ষমতায় এসেছিল।২০১৪তে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি,২০১৮তে মনোনয়ন বাণিজ্য করে নিজ দলের ভরাডুবি হয়েছিল।

“আমরা ক্ষমতায় আসার পর আস্তে আস্তে দেশের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছি।আমার দলের নিবেদিত কর্মীরাই সবসময় দলের পাশে থেকেছে বলে আজ আমরা ক্ষমতায়। আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি দেশকে এগিয়ে নিতে।”

সরকার প্রধান বলেন,“দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা হাইটেক পার্কের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছি,আজ তার বাস্তবায়ন হয়েছে।এখন মানুষে হাতে হাতে মোবাইল ফোন,ইন্টারনেট।

“আমাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার জন্য প্রত্যেক স্কুলে কম্পিউটর ল্যাব স্থাপন করে দিয়েছি। এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেকে দেশে বসে থেকে বিদেশ থেকে আয় করছে।আগামী ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”

টাকা দিয়ে ফরিদপুরের মানুষকে কেনা যায় না:শেখ হাসিনা
‘এইবারে ইলেকশনে ছক্কা মেরে দিয়ো’

প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার এক পর্যায়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে দেখিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের একটা রত্ন আছে,এই রত্নটা ক্রিকেট রত্ন। মাগুরা-১ আসনে এবার আমরা নমিনেশন দিয়েছি-সাকিব আল হাসান।সে বলছে,বক্তৃতা দিতে পারে না।

“আমি বলেছি,বক্তৃতা দেওয়ার দরকার নেই।তুমি খালি বলবা যে,তুমি ছক্কা মারতে পারো,আর বল করে উইকেট ফেলে দিতে পার;তাহলেই হবে।এইবারে ইলেকশনে ছক্কা মেরে দিয়ো।”

ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান,দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার দিলীপ বড়ুয়া,সংসদ সদস্য নাদিম রাজ্জাক,সাইফুজ্জামান শেখর,শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী,নৌকার প্রার্থী জিল্লূল হাকিম,বীরেন সিকদার।

আরও খবর

Sponsered content