সারাদেশ

ঝালকাঠিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ দু’গ্রুপে সংর্ঘষে আহত ১৫ পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ,দুই গ্রুপের আটক ৪

  প্রতিনিধি ৪ আগস্ট ২০২৩ , ১:৩১:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি।।ঝালকাঠিতে সালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ দুই গ্রুপের দুই দফা সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।সংঘর্ষ চলাকালে হামলায় দুইপক্ষের তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর হয়েছে।পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় শহরের হোগলাপট্টি এলাকার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনিরের বাস ভবনে প্রথম দফায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।পরে দ্বিতীয় দফায় রাত পৌনে বারটার দিকে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহতদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলামের (৩৫) মাথায় আঘাত লেগে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

হামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুবেল (৩৫),সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পদক ফারদিন আহমেদ সান (২৫),জেলা ছাত্রলীগ সদস্য সাকিব,আবদুল্লাহ আল অভি (২২), ভৈরবপাশা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি রাজিব হোসেন (৩২)সহ ১৫জন আহত হয়েছে।ঘটনা স্থল থেকে পুলিশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান (৩৫), সাকিব (২৫) মুন্না (৩৫) ও কালু (৩৫) আটক করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়,ঝালকাঠি শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় স্থানীয় দুই ব্যবসায়ী সোহরাব হাওলাদার ও সুলতান হাওলাদারের মধ্যে কয়েক দিন আগে পারিবারিক বিরোধ হলে বৃহস্পতিবার রাতে এনিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনিরের বাসভবনে এক সালিশ বৈঠক বসে।সালিশ বৈঠকে ব্যবসায়ী সুলতানের ছেলে ছাত্রলীগের সদস্য লিসানের (২৯) পক্ষে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম পারভেজ ও ব্যবসায়ী সোহরাবের ছেলে জিহাদের পক্ষে শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হক খলিফা অবস্থান নেয়।সালিশ বৈঠকের মধ্যেই দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরলে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে।পরে সেখান থেকে উভয় পক্ষকের বসবাসের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং দুগ্রুপের বসত ঘর- ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্র আরো জানায়, এই দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে লঞ্চঘাট এলাকায় দীর্ঘ দিনের অবৈধ বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলে আসা হক খলিফা ও তার সাবেক মেয়ে জামাই মন্টু গ্রুপের সদস্যরাও পুনরায় জড়িয়ে পড়ে। যারফলে দুই গ্রুপের কয়েক শত ক্যাডার ব্যাপক লাঠিসোটা ও অস্ত্রশ্বস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিতে থাকে।উত্তেজনার রেশ ধরে রাত প্রায় ১টা পর্যন্ত লঞ্চঘাট এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে।পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে।এ সময় উভয় পক্ষের চারজনকে পুলিশ আটক করে।গুরুতর আহত ৪ জনকে বরিশাল শেরেই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হামলা-ভাঙচুর ও সংঘর্ষের পর থেকে এলাকায় এ নিয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হক খলিফা বলেন,প্রতিপক্ষরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সদস্য নুরুন্নবী লিসান বলেন,সালিশ বৈঠকে হামলা শেষে দ্বিতীয় দফায় হক খলিফা ও তার দুই ছেলেদের নেতৃতে আমাদের বাড়িঘর ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বলেন, একটি সালিশ বৈঠকে বসে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সামনে হক খলিফার দুই ছেলে আমার ভাই রফিকুল ইসলামকে হাতুড়ি পেটা করে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঝালকাঠি থানার ওসি মোঃনাসির উদ্দিন সরকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্তিতি শান্ত করতে রাবার বুলেট মারতে হয়েছে।এ ঘটনায় কোন পক্ষই মামলা দায়ের করেনি।এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪জনকে থানায় আনা হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content