প্রতিনিধি ২৮ নভেম্বর ২০২৪ , ২:৩২:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল জেলা প্রতিনিধি।।আমাদের গ্রামের সুখ শান্তি নিশ্চিত করার জন্য সকলের দায়িত্বশীল হতে হবে।গ্রাম আদালত বাস্তবায়ন করার জন্য আইন রয়েছে সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সহজ পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে গ্রামের নারী পুরুষ তাদের ন্যয্য বিচার নিশ্চিত করতে পারবে।

বরিশাল জেলা সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে ‘গ্রাম আদালত জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন’ শীর্ষক যুব কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক গৌতম বাড়ৈ এর সভাপতিত্বে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন,গ্রাম আদালত বাস্তবায়ন করতে হলে সেখানে নারী বান্ধব পরিবেশ তৈরী করতে হবে।যেখানে নারীরা সহজেই তাদের ন্যয্য বিচার নিশ্চিত করতে গ্রাম আদালত আইনে নারীর অংশগ্রহনের কথা বলা আছে।নারী পুরুষ সবাই মিলে গ্রাম আদালত সক্রিয়করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুব সমাজকে উদ্যোগী হতে হবে।এটি একটি সামাজিক কাজ। পড়া লেখার পাশাপাশি যুব সমাজকে সমাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।গ্রাম আদালত বিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রমে যুব সমাজকে আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান,স্থানীয় সরকার বিভাগ,বরিশাল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম চৌধুরী সহ বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্প গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় এর আওতাধীন স্থানীয় সরকার বিভাগ,ইউএনডিপি ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এর যৌথ অর্থায়নে “বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প’ আয়োজিত এই কর্মশালায় বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার প্রান্ত বিভিন্ন থেকে থেকে ৩০ জন যুব প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় উপপরিচালক স্থানীয় সরকার গৌতম বাড়ৈ বলেন,যুব শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে কোন পরিবর্তন সম্ভব। এ ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত সক্রিয় করতে যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।তিনি বলেন গ্রাম আদালত সঠিক ভবে বাস্তবায়ন করতে হলে পুরুষ এর পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।
অনান্য বক্তারা বলেন, ‘গ্রাম আদালত জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন’ বিষয়ক যুব কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থানীয় বিভিন্ন যুবদল যারা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার সাথে জড়িত তাদের গ্রাম আদালত ও এর এখতিয়ারভুক্ত বিচরিক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেয়ার পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধি করা।যাতে তারা নিজ পরিবার, এলাকায় ও শিক্ষাকেন্দ্রে গ্রাম আদালেতের কথা প্রচার করতে পারে।
স্থানীয় জনগণ বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী (নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) মধ্যে গ্রাম আদালত ও এর বিভিন্ন সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে যুবারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। স্থানীয় যুবদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও তাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালত কার্যক্রমকে সক্রিয় রাখা সম্ভব হয়। এতে করে অতি সহজেই বিভিন্ন বিরোধ ও বিবাদ ইউনিয়ন পর্যায়ে নিষ্পতি করতে পারবে গ্রামের মানুষজন।’
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী যুবরা বলেন, এই কর্মশালায় এসে তারা গ্রাম আদালত ও এর বিচারিক সেবা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন তারা গ্রামের মানুষজনকে গ্রাম আদালতে গিয়ে বিরোধ ও বিবাদ নিষ্পত্তিতে উৎসাহিত করতে পারবে। সকলেই স্থানীয় সরকার, ইউএনডিপি ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে এই ধরণের কর্মশালা আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত যুব প্রতিনিধিগণ গ্রাম আদালত সক্রিয়করন এবং গ্রামে আদালতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাদের উদ্যোগ নেয়ার অংগীকার করেন।
বরিশালে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ – ৩য় পর্যায় ১০টি উপজেলায় ৮৮ ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রাম আদালত সম্পর্কে যুবদের সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় প্রশাসন ও অংশীজনদের অংশগ্রহণে জেলা পর্যায়ে প্রশাসনের নের্তৃত্বে গ্রাম আদালত বিষয়ক জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
এই কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে যুবরা জেন্ডার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তাদের পরিবারে, এলাকায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রকল্পের কার্যক্রম সর্ম্পকে প্রচার-প্রচারণায় সহোযোগীতা করতে সক্ষম হবে। এতে করে স্থানীয় জনগন বিশেষ করে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী গ্রাম আদালতের সেবা গ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে সহজে, কম খরচে, দ্রুত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবেন।

















