প্রতিনিধি ২ মার্চ ২০২৩ , ৩:৩৯:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
খুলনা প্রতিনিধি।।এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগে দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি পালন করছেন খুলনা বিভাগের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা।হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে। তবে জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন,তাদের কর্মবিরতি বুধবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টা পালনের কথা ছিল।কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ,তারাই উল্টো চিকিৎসকের নামে মামলা করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন চিকিৎসকরা।যে কারণে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শেখ নিশাত আবদুল্লাহ নামের এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ ওঠে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে কর্মরত এএসআই নাঈমুজ্জামানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।ওই চিকিৎসক আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।
চিকিৎসকদের অভিযোগ,শেখ নিশাতকে মারধরের পাশাপাশি অপারেশন থিয়েটারে ভাঙচুর চালানো হয়।এ অভিযোগে তারা মামলা দায়ের করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।উল্টো চিকিৎসকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে চিকিৎসকের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠার পর বুধবার এএসআই নাঈমুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন,এএসআই নাঈমুজ্জামানের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে পরদিন সকাল থেকে তারা ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকরা।সংবাদ সম্মেলনের পর রাতেই এএসআই নাঈমুজ্জামান ও তার স্ত্রীর নামে মামলা দায়ের করেন তারা।
কিন্তু বুধবার দুপুরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে একই থানায় পাল্টা মামলা করেন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী।এদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,আগুনে দগ্ধ মেয়েকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাম হাতের কয়েকটি আঙুল জোড়া লেগে যাওয়ায় শেখ আবু নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক নিশাত আব্দুল্লাহর কাছে নিয়েছিলেন।তার পরামর্শে মেয়েকে নগরীর হক নার্সিং হোমে ভর্তি করান।
সেখানে ওই চিকিৎসক তাকে ‘কু-প্রস্তাব’ দেন অভিযোগ করে তিনি বলেন,“ওই হাসপাতালে আমার মেয়ের অপারেশন হয়।চিকিৎসকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার ছয় বছরের মেয়ের বাম হাতের একটি আঙুল হারিয়েছি।”
ওই নারী জানান,কয়েক দফায় তাকে একা ওই চিকিৎসকের চেম্বারে ডাকা হলেও না গিয়ে এক পর্যায়ে তিনি স্বামীকে বিষয়টি জানান।পরে চিকিৎসার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি শিশুর বাবার সঙ্গে তিনি ওই নার্সিং হোমে যান।সেখানে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হলে ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ আনেন তার স্বামী।পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ঘটনাটি সেখানেই মীমাংসা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
তার ভাষ্য, “অপারেশন করে ছেড়ে দেওয়া হলেও আমাকে প্রায়ই হোয়াটসঅ্যাপে এসএমএস দিতেন চিকিৎসক নিশাত। যেখানে আমার মেয়ের অঙ্গহানির জন্য আমরা মামলা করব, সেখানে উল্টো আমাদেরই আজ ভিকটিম হতে হচ্ছে। আমাদের ওপর হামলা করে ডা. নিশাত এখন নিজেকে বাঁচাতে নতুন নাটক শুরু করেছেন।”