প্রতিনিধি ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ , ২:১১:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
ব্রাহ্মণপাড়া প্রতিনিধি।।কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউপি’র অলুয়া গ্রামের সাউদ আফ্রিকা প্রবাসী নেছার আহাম্মেদ এর বাড়িতে সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলা, বাড়িঘরের বাউন্ডারি দেয়াল ভাংচুর ও মারধরসহ ২ প্রবাসী’র স্ত্রী’র অশ্লিলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৬ ডিসেম্বর দুপুরে ভুক্তভোগী অলুয়া আইনুদ্দি বাড়ির ফরিদ উদ্দিনের বসতে এঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত হয়েছেন প্রবাসীর বৃদ্ধ পিতা মোঃ: ফরিদ উদ্দিন (৬২)। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে বর্তমানে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
ঘটনার সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ, এলাকাবাসী,ভুক্তভোগী পরিবার ও থানায় লিখিত অভিযোগের৷ ভিত্তিতে জানা যায়,প্রতিপক্ষ একই এলাকার দুলু মিয়া, নজরুল ইসলাম,মেহেদী, জাহাঙ্গীর ও সোলেমান সহ তাদের সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন উছিলায় কিংবা অহেতুক নানা ভাবে প্রবাসী পরিবারটির ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে।
ফরিদ উদ্দিনের তিন ছেলে প্রবাসে থাকায় বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে অভিযুক্তরা। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় প্রতিপক্ষের সাথে কোন প্রকার বিরোধ না থাকলের অহেতুক কারনে বাড়িঘরে ঢুকে মারধর ভাংচুর চালিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের পর কোন কারন ছাড়াই ৩০/৪০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রবাসীদের বাড়িতে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করতে থাকে। এসময় ভাংচুরে করে ইট ও টিন নিয়ে যাওয়ার সময় বাঁধা দিয়ে এ ঘটনার ভিডিও করতে গেলে প্রবাস থেকে ছুটিতে আসা সাদ্দাম হোসেনের ওপর হামলা করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় অভিযুক্তদের কয়েকজন।ছেলেকে রক্ষা করতে এলে হামলাকারীরা প্রবাসীর পিতাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ঘর থেকে প্রবাসী দুই ভাইয়ের স্ত্রী’রা সাদ্দাম ও শশুরকে রক্ষা করতে এলে তারাও রক্ষা পায়নি হামলা থেকে।
হামলাকারীরা বেশ কয়েকবার গায়ে হাত তোলা সহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।
সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী সাদ্দাম জানায়, “কোন কারন না পেয়ে গ্রামের সরকারী সড়কের জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল তুলেছি বলে বাড়িতে ঢুকে ভাংচুর করে টিন ও ইট নিয়ে যায়।এসময় বাঁধ দিলে আমাকে এবং আমার বাবাকে মারধর করে।বাড়ীর নারীরা এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করে। কোন বিবাদ না থাকলেও এর আগেও বেশ কয়েকবার হামলা করেছে তারা।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার সহ এলাকাবাসীর দেখানো জায়গায় গত দুবছর আগে বাড়ির নিরাপত্তার জন্য দেয়াল নির্মাণ ও টিন দিয়ে বেড়া দেই।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে একই এলাকার চান মিয়ার ছেলে অভিযুক্ত দুলো মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
নজরুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তিনি মারধরের কথা অস্বীকার করলেও ভাংচুরের কথা স্বীকার করে জানান, তারা সরকারি জমির অংশে বাউন্ডারি দেয়ার করায় তা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।ভাংচুর বা সরকারি জমি উদ্ধারের অধিকার রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন এই অধিকার তাদের রয়েছে বলে জোড়ালো ভাবেই জানান।
মালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ খন্দকার ও সদস্য ইউনুস মুঠোফোনে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের ঝামেলা চলছে।এর আগে সমাধানও করা হয়েছে কয়েকবার। শুক্রবারের ঘটনাটি দুঃখজনক।এবিষয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে মিমাংসার ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান তারা।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান রুবেল বলেন, বিষয়টি শুনেছি। দুই পক্ষের লোকজনই অভিযোগ করেছেন।শনিবার বিকেলে এসআই বেলায়েত ফোর্স সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।