বিনোদন

এখন সারা জীবন নানাকে ছাড়াই থাকতে হবে-পরীমণি

  প্রতিনিধি ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৬:১৭:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।মাঝে ওটিটিতে কাজ করলেও মা হওয়ার পর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য একটি সিনেমার কাজ শেষ করতে যাচ্ছেন পরীমনি।ছবির নাম ‘ডুডোর গল্প’।বর্তমান ছবিটির শেষ ধাপের কাজ চলছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে ছবিটির কাজ। বাংলাদেশ সরকারের অনুদানের ছবিটি পরিচালনা করছেন রেজা ঘটক।গত বছরর অক্টোবর মাসে শুটিং শুরু হয় ছবিটির।

পরীমনি জানালেন,আরও আগেই শেষ হতো কাজটি।কিন্তু তাঁর নানা মারা যাওয়ার কারণে কাজটি বিলম্বিত হয়েছে। পরীমনি বলেন, ‘আমার পরিবারে একমাত্র অভিভাবক নানা পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে আমার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।আমি অনেক দিন মানসিকভাবে সুস্থ ছিলাম না।নানাভাইয়ের স্মৃতি আমাকে সব সময় তাড়া করে বেড়ায়।’

এরই মধ্যে নিজেকে কিছুটা সামলে কাজে ফিরেছেন পরীমনি। গত শুক্রবার রাতে উত্তরা থেকে ছবিটির শুটিং শেষ করে ফেরার পথে পরীমনি বলেন,উত্তরা ও গাজীপুরের লোকেশনে টানা শেষ ধাপের কাজ করছি। ২৯ ফেব্রুয়ারি চলন্ত ট্রেনের মধ্যে শুটিং হবে।ওই দিনই ছবির শুটিং শেষ হয়ে যাবে।’
কেমন হলো কাজ,জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, ‘ভালো হয়েছে।আমার জন্য নতুন একটি অভিজ্ঞতার কাজ হবে।এ ধরনের চরিত্রে প্রথম কাজ করেছি।একটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজটি করতে হয়েছে আমাকে।’

কেমন সেটি,জানতে চাইলে ঢাকাই ছবির এই নায়িকা বলেন, ‘ছবিতে আমার চরিত্রের নাম কাজল।কিশোরী থেকে ৬০ বছর বয়সী নারী হিসেবে দেখানো হয়েছে কাজলকে।এক ছবিতে এক মানুষের তিন-চারটি রূপ ও সময়কালের ব্যবধান চরিত্রে উঠিয়ে আনা কম কথা নয়।হয়তো কিশোর,যুবতী চরিত্রগুলো নিজের অভিজ্ঞতা থেকে করেছি; কিন্তু ৬০ বছরের বয়স্ক একজন নারীর চরিত্র তুলে আনা কম চ্যালেঞ্জ নয়।তবে মনে হয় উতরে গেছি চরিত্রটিতে।তারপরও দর্শক দেখতে বসে সঠিক রায় দেবেন।’

যখন শুটিং থেকে ফিরছিলেন,সঙ্গে সন্তান পুণ্যও ছিল। ফোনের এ পাশ থেকে বোঝা যাচ্ছিল,ছেলের সঙ্গে দুষ্টুমি করছেন আর এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলছিলেন পরীমনি।

জানালেন,সব শুটিংয়েই পুণ্য সঙ্গে থাকে। বলেন,এখন তো আর নানাভাই নেই।কারোর কাছে রেখে আসাও সম্ভব নয়। তবে শুটিংয়ে পুণ্য উপভোগ করে।এখন তো বেশ হাঁটতে পারে। প্রতিদিন শুটিংয়ের ইউনিটের ছেলেদের সঙ্গে পুণ্য ফুটবল খেলে।খেলতে খেলতে আবার মাঝেমধ্যে চিৎকার করে ওঠে সে। হা হা হা…। বোঝা যায়, ও বেশ মজা পায়। এখন আমার যেকোনো কাজে পুণ্য অনেকটাই শুটিংয়ের অংশ হয়ে যায়।’

পুণ্য কখনো অভিনয় বা মডেলিং করবে?পরীমনি বলেন, ‘অবশ্যই চাই।যদি এই সময়েও কেউ তাকে নিয়ে কাজ করতে চান,ভালো কাজ হলে আমি রাজি।তবে বড় হয়ে ও যেটিই করতে চাইবে,সেটিতে আমার সমর্থন থাকবে।’

অনেকে বলেন,আপনি নাকি ফোন ধরেন না?এমন প্রশ্নে পরীর উত্তর, ‘নানাভাই মারা যাওয়ার পর আমি ওইভাবে ফোন কাছে রাখি না।মাঝেমধ্যে ফোনটি কোথায় পড়ে থাকে, খুঁজে বের করতে হয় আমাকে।এ কারণে অনেকেই ফোনে আমাকে পান না।আগে শুটিং বা বাইরে যেকোনো জায়গায় গেলে ফোনটা কাছে রাখতাম।নানার ফোনের আশায়।’

নানার কথা বলতে গিয়ে গলা ভারী হয়ে আসে পরীর। বলেন, জানেন,নানার সঙ্গে আমার হাজারো স্মৃতি।অনেকটাই না বোঝার বয়স থেকেই নানার আদর-যত্নে বড় হয়েছি। এখনো বিশ্বাস হয় না নানাভাই নেই।বাসায় আমার জন্য এখন আর কেউ অপেক্ষা করে না।আগে নানাভাই দেশের বাড়িতে গেলে এক সপ্তাহও ঢাকাতে থাকতে পারতাম না।ফিরতে দেরি একটু দেরি করলে আমিই সেখানে ছুটে যেতাম।আর এখন? এখন সারা জীবন নানাকে ছাড়াই থাকতে হবে।অনেক কষ্টের, অনেক বেদনার।’

রাজের সঙ্গে বিচ্ছেদ,এরপর নানার মৃত্যু—এসব হতাশা, শোক কাটিয়ে কাজের মধ্য দিয়ে এখন পেছনের সব স্মৃতি ভুলে থাকার চেষ্টা করছেন পরীমনি।বলেন,এখন কাজ আর কাজ। কাজের মধ্যেই ডুবে থাকতে চাই।এমনকি প্রেম ,বিয়ের প্যারাও আর নেব না কখনো।এখন আমার একমাত্র ভালোবাসা,প্রেম শুধুই আমার সন্তান।’

এদিকে ওটিটিতে বেশ নিয়মিত হয়েছেন পরীমনি।এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি কাজ প্রচারিত হয়েছে তাঁর।শিগগিরই অনম বিশ্বাসের ‘রঙিলা কিতাব’ সিরিজের শুটিং শুরু হবে।

এই অভিনেত্রী বলেন, ‘“ডুডোর গল্প” ছবির কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর পরপর “রঙিলা কিতাব”-এর কাজ শুরু করব।’

আরও খবর

Sponsered content