সারাদেশ

একজন জনপ্রতিনিধি ও দুই কর্মকর্তার কাছে এডিপির প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের ওপর প্রমাণসহ ব্যাখ্যা চেয়েছেন-স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়

  প্রতিনিধি ১৪ আগস্ট ২০২৩ , ৩:৪১:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

খানসামা উপজেলা প্রতিনিধি।।দিনাজপুরের খানসামায় (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) এডিপির প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের ওপর প্রমাণসহ ব্যাখ্যা চেয়ে একজন জনপ্রতিনিধি ও দুই কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

গত (৬ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগ,দিনাজপুরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমানের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ব্যাখ্যা চেয়ে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ আবু নাছের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উপজেলা চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন,তৎকালীন ইউএনও রাশিদা আক্তার এবং প্রকৌশলী শাহ ওবায়দুর রহমানকে প্রমাণসহ ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।

এর আগে ৩ জুলাই উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জিল আফরোজ পারভীনসহ আরও ৬ জন ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং ডিডিএলজি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।খানসামা উপজেলার বর্তমান নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাজউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে জানা যায়,গত ১২ জুলাই খানসামা উপজেলা পরিষদের কার্যালয় সরেজমিনে তদন্ত করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান।তদন্ত শেষে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান উল্লেখ করেন,প্রকল্প গ্রহণের সময় বিশেষ কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকার কারণে সভা পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি),যা সঠিক হয়নি।গুরুত্বপূর্ণ এ সভা পিছিয়ে দেওয়া যেত।উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুপস্থিতিতে প্রকল্পগুলো গ্রহণ করা হয় এবং উপজেলা প্রকৌশলী সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই প্রকল্প গ্রহণ করেন।উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন বরাদ্দের ৩০ শতাংশ পিআইসি এবং কোটেশনের মাধ্যমে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ১০ লাখ এবং বছরে মোট ৬০ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে।এতে সর্বশেষ বরাদ্দকৃত ৫০ লাখ টাকার পুরোটাই পিআইসি ও কোটেশনের মাধ্যমে প্রকল্প ও বাস্তবায়ন সঠিক হয়নি।কারণ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে পূর্বেও পিআইসি ও কোটেশনের মাধ্যমে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন,উপজেলা পরিষদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়ালের ২০ অনুচ্ছেদে (পৃষ্ঠা নং ৩৬) পিআইসি চেয়ারম্যান/সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কথা বলা হয়েছে এবং উক্ত কমিটিকে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু এ প্রকল্পগুলো গ্রহণে তা করা হয়নি।পিআইসি কমিটির সদস্য কর্তৃক কাজ শুরুর ও শেষের সভা সংক্রান্ত কোন রেজুলেশন নথিতে পাওয়া যায়নি।চূড়ান্ত বিলের জন্য করা আবেদনে প্রকল্প কমিটির সভাপতি কর্তৃক স্বাক্ষর হয়নি অথচ এ আবেদনের ভিত্তিতে প্রকল্পের বিল পরিশোধ করা হয়েছে। নথিতে প্রকল্পের শুরুর ও শেষের ছবি নেই।তাই প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রায় প্রকল্পের কাজই সমাপ্ত হয়নি অথচ পুরো বিল পরিশোধ করা হয়েছে,যা গুরুতর আর্থিক অনিয়ম।

সে কারণে জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে তদন্ত করে দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের মন্তব্যের ওপর প্রমাণসহ ব্যাখ্যা ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান,তৎকালীন ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলীকে প্রমাণসহ ব্যাখ্যা দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন ও উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মো. ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।

তৎকালীন ইউএনও রাশিদা আক্তার বলেন,তিনি এখনো চিঠি হাতে পাননি।তবে শুনেছেন।এটা তদন্তের বিষয় তাই আমি কিছু বলতে পারবনা।যদি কেউ অপরাধ করে তাকে তাহলে অবশ্যই তার শাস্তি হবে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন,আমি চিঠি পেয়েছি।গতমাসে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।পরবর্তীতে প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মন্ত্রণালয় থেকে প্রমাণসহ ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content