ব্যবসা ও বাণিজ্য সংবাদ

৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকায় শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে শেয়ার জমা করার আবেদন নাকচ

  প্রতিনিধি ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ , ১:৩৯:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুমোদনের পরও শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ (স্টক ডিভিডেন্ড) দিতে পারছে না সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি কনফিডেন্স সিমেন্ট।উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকায় শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে শেয়ার জমা করার আবেদন গ্রহণ করেনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে ডিএসইর সংশ্নিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান,উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার না থাকলে ২০১৯ সালের ২১ মে এবং ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারির দুই নির্দেশনার কারণে কোনো কোম্পানি বোনাস শেয়ার ইস্যু করেও মূলধন বাড়াতে পারবে না।গত অক্টোবর থেকে কনফিডেন্স সিমেন্টের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ধারণের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। এ কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ বোনাস শেয়ার ইস্যুর অনুমোদনে ছাড়পত্র দেয়নি।

ডিএসই বোনাস শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন না দিলেও গত ৫ ডিসেম্বরের লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের পর কনফিডেন্স সিমেন্টের শেয়ারদর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।এ কারণে শেয়ারটির দর সাড়ে ৯৩ টাকা থেকে কমে ৮৯ টাকায় নামে।এখন বোনাস শেয়ার না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শেয়ারহোল্ডাররা।বিএসইসির নির্দেশনা লঙ্ঘন করে গত ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার সুপারিশ করে পর্ষদ।এ সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এজিএমে তা পাসও হয়।

এজিএম শেষে গত ১২ জানুয়ারি ডিএসইর কাছে বোনাস শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে পাঠাতে ছাড়পত্র পেতে আবেদন করেন কনফিডেন্স সিমেন্ট।তবে বিএসইসির নির্দেশনা লঙ্ঘন হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে বোনাস শেয়ার ইস্যুর বিষয়ে ছাড়পত্র প্রদানে অপারগতা জানিয়ে ফিরতি চিঠি দেয় ডিএসই।

সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়,বিএসইসির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা ঠিক হয়নি।আবার লভ্যাংশ ঘোষণার পরপরই দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের যে কোনো একটির মার্কেট অপারেশনস বিভাগ আইনি বিধান লঙ্ঘনের বিষয়টি কোম্পানিকে অবহিত করলেও তা আগে সংশোধন করে নেওয়ার সুযোগ ছিল,এজিএমেও তা পাস হতো না।

জানতে চাইলে কনফিডেন্স সিমেন্টের কোম্পানি সচিব দেলোয়ার হোসেন বলেন,গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কনফিডেন্স সিমেন্টের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের মোট শেয়ার ৩০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ছিল।সাবেক উদ্যোক্তা-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ হাসান গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মুত্যুর পর পর্ষদ থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ায় এর পরিমাণ কমে ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশে নামে।শাহ মোহাম্মদ হাসানের শেয়ার ছিল ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ।কথা ছিল তাঁর উত্তরাধিকারীদের একজন সব শেয়ার নিয়ে পরিচালক হবেন।প্রক্রিয়াটি শেষ করতে তাঁরা দেরি করায় এ সমস্যা হয়েছে।

এ অবস্থায় সমাধান কী হতে পারে জানতে চাইলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান,বিএসইসি যদি কোম্পানিকে ওই নির্দেশনা পরিপালন থেকে এ বছরের জন্য ছাড় দেয়,তবে এ লভ্যাংশ প্রদানে বাধা থাকবে না।অন্যথায় কোম্পানিকে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের শর্ত পূরণ করেই এ লভ্যাংশ প্রদানের ছাড়পত্র নিতে হবে।এ দুইয়ের বিকল্প নেই।

কনফিডেন্স সিমেন্টের সিএফও নেওয়াজ মোহাম্মদ ইকবাল ইউসুফ বলেন,প্রয়াত শাহ মোহাম্মদ হাসানের ২৯ লাখ ১২ হাজার ৫৮৭টি শেয়ার তাঁর উত্তরসূরি স্ত্রী,ছেলে ও মেয়ে পেয়েছেন।এখন তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে তাঁদের ভাগে পাওয়া সব শেয়ার ছেলের নামে হস্তান্তর করছেন।ওই ছেলেকে কনফিডেন্স সিমেন্ট পরিচালক পদে নিয়ে আসতে চাচ্ছে।এ জন্য ৩০ জানুয়ারি পর্ষদ সভা আহ্বান করেছে।

আরও খবর

Sponsered content