ইসলাম ও জীবন

আমলের মাধ্যমে রিজিক বাড়ানো সম্ভব

  প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২৩ , ৬:০২:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রিজিক নির্ধারিত থাকার পরও কিছু কাজ বা আমলের মাধ্যমে এটি বাড়ানো সম্ভব।আবার কিছু কাজে রিজিক ক্ষতিগ্রস্তও হয়।

আল্লাহ–কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি বলো!নিশ্চয় আমার রব যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সম্প্রসারিত করে দেন আর যাকে ইচ্ছা তার রিজিক সংকুচিত করে দেন,কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা সাবা, আয়াত: ৩৬)

বেশ কিছু কাজে মানুষের রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।কাজগুলো হলো:

মিথ্যা কসম খাওয়া ও ধোঁকা দেওয়া

মিথ্যা কসম খাওয়া এবং মানুষকে ধোঁকা দিলে আয়-উপার্জনের বরকত চলে যায়। আর বরকত চলে যাওয়া মানে রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বেচাকেনা করার সময় তোমরা অধিক কসম করা থেকে সাবধান থেকো।কারণ,মিথ্যা কসমের দ্বারা বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু বরকত ধ্বংস হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৬০৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন,ক্রেতা ও বিক্রেতা যতক্ষণ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন না হয়,ততক্ষণ পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা কিংবা বাতিল করার সুযোগ রয়েছে।যদি তারা সত্য বলে এবং পণ্যের প্রকৃত অবস্থা ব্যক্ত করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে।আর যদি মিথ্যা বলে এবং পণ্যের দোষ গোপন করে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত ধ্বংস হয়ে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২,০৭৯

কৃতজ্ঞতা আদায় না করা

মানুষ যখন প্রাপ্ত নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় করে না, তখন তার থেকে সে নিয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয় আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবজীবন এবং কমে যায় রিজিক।আল্লাহ কোরআনে ইরশাদ করেছেন,আর যদি অকৃতজ্ঞ হও,তবে মনে রেখো,আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৭)

পাপকাজে লিপ্ত থাকা

যেসব কাজে মানুষের রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়;তার মধ্যে অন্যতম হলো গুনাহ বা পাপাচারে লিপ্ত থাকা।সাওবান (রা.)–র বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সৎকর্ম মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে এবং দোয়া মানুষের তাকদির পরিবর্তন করতে পারে।আর মানুষ তার পাপ কাজের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,০২২)

হারাম উপার্জন

আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানবজাতি!তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৬৮) স্রষ্টার ঐশী নির্দেশ অমান্য করে হারাম উপায়ে উপার্জন করলে রিজিকে বরকত কমে যায়। হারাম উপার্জনে রিজিকের বরকত কমে যায়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে,তাকে বরকত দান করা হয়।আর যে ব্যক্তি হারাম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করে,সে এমন ব্যক্তির মতো—আহার করেও তৃপ্ত হয় না (অর্থাৎ সে যতই ভক্ষণ করুক না কেন; তার ক্ষুধা নিবারণ হয় না)।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,০৫২)

জাকাত না দেওয়া

জাকাত ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিধান।সঠিকভাবে জাকাতের বিধান আদায় না করলে রিজিকের বরকত উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং এতে রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো জাতি জাকাত আদায় করা বন্ধ করে দেয়; আসমান থেকে তখন বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পৃথিবীর বুকে যদি কোনো চতুষ্পদ জন্তু না থাকত, তাহলে আর কখনো বৃষ্টি হতো না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,০১৯)

সুদের কারবার করা

সুদের মাধ্যমে ব্যবসা বৃদ্ধি হয়,আপাতদৃষ্টে এমনটা মনে হলেও সুদের কারবারে ব্যবসার বরকত নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন,আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সাদাকাকে বর্ধিত করে দেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭৬)

আরও খবর

Sponsered content