অপরাধ-আইন-আদালত

আটোয়ারীতে সাংবাদিক রেজিনার উপর হামলার মামলা নিয়ে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা!

  প্রতিনিধি ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১:২৩:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:- পঞ্চগর জেলার আটোয়ারী উপজেলার বাসিন্দা দৈনিক আজকের বসুন্ধরার সাংবাদিক রেজিনা আক্তারের উপর পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষের হামলা হয়।

সেই হামলায় মারাত্মক আহত হয়ে বেশ কিছুদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এখন কিছুটা সুস্থ সে। এ বিষয়ে আটোয়ারী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন সাংবাদিক রেজিনা আক্তার।

গত ৮ জুলাই ২০২২ ঘটে যাওয়া বিষয় নিয়ে থানায় দায়ের করা এজাহার মারফত জানা যায়, ঐ মামলায় আসামীরা হলেন, মোঃ মশির উদ্দীন (৬৮) পিতা মৃত: হাফিজ উদ্দিন, মোঃ মকবুল হোসেন (৪১) পিতা মোঃ মশির উদ্দিন, জয়নুল ইসলাম (৪২) পিতা মোঃ হাবিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান (৭০) পিতা মৃত: আব্দুল গফুর। সর্বসাং নলপুখুরী, ডাকঘর: মির্জাপুর, থানা আটোয়ারী, জেলা: পঞ্চগর। মামলার সাক্ষীগণ হলেন, মোঃ ফজলুর রহমান (৫৬) পিতা মৃত: হাফিজ উদ্দীন, মোঃ আবু সাঈদ (২১) পিতা: মোঃ ফজলুর রহমান, মোঃ খায়রুল ইসলাম (৩৮) পিতা মৃত: নাজিবুল সরকার, জিয়াউর রহমান (৪২) পিতা নজিবুল সরকার, মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৪৯) পিতা মৃত: লুৎফর রহমান, ননী গোপাল (৪৬) পিতা মৃত: যগেন্দ্রনাথ।
মামলার ঘটনার বিবরনে জানা যায়, সাংবাদিক রেজিনা আক্তারের পিতা মামলার ১নং সাক্ষী মোঃ ফজলুর রহমান ৩নং আসামী মোঃ জয়নুল ইসলামের নিকট হইতে জমি রেজিষ্ট্রি করার জন্য কথাবার্তা চুড়ান্ত করলে ১নং আসামী মোঃ মশিরউদ্দিন ও ২নং আসামী মোঃ মকবুল হোসেন অজ্ঞাত কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে নানারকম ষড়যন্ত্র করে ২নং আসামী মোঃ মকবুল হোসেন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভূমিদস্যু, লাঠিয়াল সন্ত্রাসী লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে বাদীর পরিবারকে নানারকম ক্ষতি করতে ১, ৩ ও ৪নং আসামীর সাথে গভীর আতাতঃ করতে থাকে।

তখন রেজিনা বেগম ৩নং আসামীর সাথে জমি ক্রয়ের দলিল ক্রয়ের জন্য উভয় পক্ষ স্থানীয় দলিল লেখক গোলাম উদ্দিন সরকারের কাছে দলিল লেখা সম্পন্ন করেন।ঘটনার দিন দলিলে ৩নং আসামীর স্বাক্ষর আনতে গেলে সে দলিলে স্বাক্ষর না করার জন্য বিভিন্ন টালবাহানা করতে শুরু করে।

এঘটনার এক পর্যায়ে রেজিষ্ট্রি অফিস সংলগ্ন ৫০ গজ দক্ষিণ পশ্চিম পাশে পাকা রাস্তার উপর মামলার ১নং আসামীর বাদী রজিনা আক্তারকে হঠাৎ অশ্লীল, অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। তখন ৩ ও ৪নং আসামী চিৎকার করে বলতে থাকে, চট্টগ্রাম থেকে মকবুল ফোন দিছে এ জমি রেজিষ্ট্রি হবে না। সে ফোনে আরও বলে যারা জমি রেজিষ্ট্রি করতে এসেছে তাদের সবাইকে মেরে তাড়িয়ে দাও। এই হুকুম পাওয়া মাত্র মামলার ১নং আসামী মোঃ মশিউর উদ্দিন রেজিনার উপর চড়াও হয়ে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে রাস্তার উপর ফেলে দেয়।নখের আচর দিয়ে বাদীর বামগালে ছেচরানো কাটা রক্তাক্ত যখম এবং বুকে, পিঠে পায়ে থেতলানো মারাত্মক যন্ত্রনাদায়ক যখম হয়। ১নং আসামী রেজিনার পড়নে থাকা ছেলোয়ার, ওড়না টানা হেচরা করে কাপড় ছিড়ে ফেলে এবং বিবস্ত্র করে বাদীর শ্লীলতাহানী ঘটায়। ঘটনার সময় মামলার বাদী ৫ মাসের অন্তঃসত্বা ছিল।

তাকে ১নং আসামী তলপেটে জোড়ে লাথি মারে। তখন বাদী ভ্রনকেটে রক্ত বাহির হওয়ার কারণে তার পেটের বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট মামলার বাদী থানায় জমা দিয়েছে বলে জানা যায়।

আসামীরা রেজিনা আক্তারকে গলা চেপে ধরে হত্যা চেষ্টা চলায়।তখন তার বেঁচে থাকার জন্য ঘো ঘো শব্দে আশপাশের মানুষ এসে তাকে প্রাণে রক্ষা করে। এই অবস্থায় মামলার বাদী জ্ঞান হারাইয়া ফেলিলে তাকে মামুর্ষ অবস্থায় আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।তখন অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এবিষয়ে আটোয়ারী থানায় দায়ের করা মামলা নিয়ে গড়িমসি করতে থাকে আটোয়ারী থানা পুলিশ।তারা মামলার আসামীদের গ্রেফতার না করে তাদের দায়ের করা একটি কাউন্টার মামলায় মূল মামলার বাদী পক্ষকে হয়রানী করতে থাকে এবং গ্রেফতারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। রেজিনা আক্তারের মামলায় চট্টগ্রামে অবস্থানরত মোঃ মকবুল হোসেন এখনও জামিন না নিয়ে সেখানে থেকেই বাদীকে নানা রকম হুমকি দিয়ে আসছে।রজিনা আক্তারের মামলায় আটোয়ারী থানা পুলিশের গাফলতির কারণে কয়েকজন আসামী জামিনে এসে বাদীকে মামলা প্রত্যাহারসহ নানারকম জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে মামলাটির অবস্থাও বাদীকে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি আটোয়ারী থানা পুলিশ।

আসামী পক্ষ বাদীকে হয়রানী করতে নানারকম মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। রেজিনা আক্তার তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান করায় আটোয়ারীতে মামলার খোঁজখবর রাখতে নানা সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ভুক্তভোগী সাংবাদিক রজিনা আক্তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

আরও খবর

Sponsered content