প্রতিনিধি ১০ নভেম্বর ২০২২ , ১২:২১:০১ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল প্রতিনিধি।।মুখ্য প্রশিক্ষকের (অধ্যক্ষ) অপসারণ দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ বিক্ষোভ করেছেন বরিশালের রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া তারা কক্ষের বাইরে তালা দিয়ে মুখ্য প্রশিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (দুপুর ২টা) মুখ্য প্রশিক্ষক অবরুদ্ধ রয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে মিডটার্ম পরীক্ষা বর্জন করে মুখ্য প্রশিক্ষকের অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ইনস্টিটিউটের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে তারা কক্ষের বাইরে তালা দিয়ে মুখ্য প্রশিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এছাড়া দুপুর ১২টার দিকে ইনস্টিটিউট সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। আধাঘণ্টার মতো তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এসময় বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তারা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) মুখ্য প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ক্লাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বিনা কারণে হেনস্তা করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। তিনি ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করেন। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন। ছাত্রদের মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। প্রতি সেমিস্টারে ছাত্র কল্যাণ তহবিলের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নেওয়া হয়। তবে কোনো শিক্ষার্থীদের অসুবিধার জন্য ছাত্র তহবিল থেকে কিছু অর্থ সাহায্য চাইলে অপমান করেন।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেন, মুখ্য প্রশিক্ষকের কারণে সবাই অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দাবিগুলো হলো- মুখ্য প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে অপসারণ, দ্রুত নতুন মুখ্য প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া, শিক্ষার্থীদের হেনস্তা ও হয়রানি বন্ধ করা, শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি বন্ধ করা, অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ করা এবং ছাত্রদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে ইনস্টিটিউটের ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করা। দাবি মানা না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মুখ্য প্রশিক্ষকের কক্ষের তালাও খোলা হবে না।
ঘটনাস্থলে থাকা এয়ারপোর্ট থানার এসআই অলিপ কুমার সাহা বলেন, দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ইনস্টিটিউট সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ করেন। পরে প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক থেকে সরে যান। আপাতত তারা ইনস্টিটিউটের মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) মুখ্য প্রশিক্ষক (অধ্যক্ষ) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মোবাইলফোনে বলেন, সকাল ৯টার দিকে মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা বর্জন করে হঠাৎ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে তারা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করছেন। তবে তারা তো আগে কখনো আমাকে বা অন্য কোনো শিক্ষককে বিষয়টি জানাতে পারতেন। আসলেই এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কী-না তাও বলতে পারছি না। জানতে পেরেছি, বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইনস্টিটিউটে এসেছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। দেখা যাক কী হয়।