প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২২ , ১২:১৭:০০ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:-গত কয়েকদিন আগে একটি চায়ের দোকানে মোটরবাইক থামিয়ে দু’কাপ চায়ের অর্ডার দিলাম,চা খেতে খেতে টুকটাক গল্প করছিলাম সহকর্মীর সাথে,হঠাৎ চোখে করলো ৩০-৩৫ বছর বয়সী একজন লোক অপসোনিন কোম্পানির একটি সিট পড়ে মুখস্ত করার চেষ্টা করছে!
তাকে দেখে মনে হলো সকাল থেকে এখনো পর্যন্ত খাওয়ার কিছুই জোটেনি,কৌতুহলী হয়ে নিজেই জিজ্ঞাসা করলাম ভাই একটু কথা বলতে পারি,আপনার সাথে নিন চা খান!উত্তরে তিনি জানালেন এখনও ভাই নাস্তাই করিনি!!কি বলছেন,, পৌনে একটা বাজে এখনো নাস্তা করেননি কি বিষয় আমাকে একটু খুলে বলবেন কি আর কি পড়ছেন?!
তিনি তার পরিচয় দিয়ে বিস্তারিত আমাকে জানিয়ে বলেন, ডাক্তার তার ঔষধ প্রেসক্রিপশন করবে এই মর্মে ডাক্তার সাহেবের সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যান নিয়ে আসেন।এমনকি ডাক্তার সাহেব মাঝেমধ্যে ফোন করে বলেন আমার বার্গার খেতে ইচ্ছে করছে একটা বার্গার নিয়ে আসেন!!!!!
কোন কারণে যদি ডাক্তার সাহেবের কথা মতো অর্ডার পালনে ব্যর্থ হই তাহলে সিনিয়রের কাছে রিপোর্ট দেন।যে তার প্রতিনিধি ‘স্মার্ট ‘না ব্যস চাকরি শেষ!!
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ২৬৯টি এলোপ্যাথিক, ২০৬টি আয়ুর্বেদিক, ২৬৬টি ইউনানি, ৩২টি হার্বাল এবং ৭৯টি হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানি রয়েছে।যাদের সবকটির কাজই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ-মনিটরিং করেছেন।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের ব্যক্তিত্ব খুইয়ে ডাক্তারদের গোলাম বনে যান।
আরও ব্যক্তি জানালেন কোম্পানির কাছে রিকোয়েস্ট করে দুই ডাক্তারকে হজে পাঠিয়েছেন।
কিন্তু ডাক্তাররা হজ থেকে ফিরে এসে তাদের ঔষধ।যেহেতু হজে পাঠানোর টাকা ডাক্তারদের ক্যাশ দিতে হয়েছে এবং কোন ডকুমেন্ট নেই তাই নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের গোলামী করা ছাড়া কিছুই করার নেই।প্রায় সব প্রতিনিধিরাই কোনো না কোনো ডাক্তারের কাছে জিম্মি হয়ে আছেন।আর সে কারণেই খাওয়া-দাওয়া ভুলে দিনরাত এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতলে এক ডাক্তারের চেম্বার থেকে অন্য ডাক্তারের চেম্বারে ছুটোছুটি করেন এবং প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলেন।
প্রতি রাতেই তাঁকে অন্তত দশটি প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এরপর কোম্পানির কাছে থেকে বনসাই দিয়ে ডাক্তার কে খুশি করার জন্য নগদ অর্থ ( টিভি ফ্রিজ এসি ফ্ল্যাট গাড়ি) কিনে দিয়ে অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ।
ধারাবাহিক চলবে…