সম্পাদকীয়

জনগণের বন্ধু পুলিশকে কেন বলির পাঁঠা বানানো হবে—–!

  প্রতিনিধি ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ২:১২:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ১২ হাজার।বাংলাদেশ পুলিশ গঠিত হয়- পুলিশ আইন ১৮৬১ দ্বারা। উপমহাদেশে পুলিশ প্রথা চালু করেন- লর্ড ক্যানিং, ১৮৬১ সালে।বাংলাদেশ পুলিশ যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের সদস্য হয়- ১৯৭৬ সালে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে,বর্তমানে দেশে এক লাখ মানুষের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন ১২০ জন পুলিশ সদস্য। সেখানে ভারতে ১৫০ জন,নেপালে ১৯৩ জন, মিয়ানমারে ১৭০ জন,পাকিস্তানে ১৮১ জন,মালয়েশিয়ায় ৩২০ ও যুক্তরাষ্ট্রে ২৮৪ জন পুলিশ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

সাবেক মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) ৮৮ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।এর বাইরে আরও ১১ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে।পুলিশের পাঁচ হাজার ৭৩টি অস্ত্র ও ছয় লাখ পাঁচ হাজার ১৭৭ রাউন্ড গুলি লুট করা হয়।সারাদেশের সাড়ে চারশতাধিক থানায় হামলা,ভাঙচুর,লুটপাট,অগ্নিসংযোগ,৩২০৮ পুলিশ সদস্যকে হত্যা,৩শ,৭৩জন পুলিশ নিখোঁজ বা গুম হলেও সরকারি হিসাবে ৪৪জন নিহত দাবি করলেও পুলিশ হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দেয়া হয়।জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সরকারের দাসত্ব প্রতিবেদনেও ৪৫০ থানায় হামলা,পুলিশ হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির সুপারিশ করা হয়।দশ হাজারেও অধিক পুলিশকে বদলি,পাঁচ হাজারেও অধিক পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমুলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।বাধ্যতামূলক অবসর,ওএসডি, চাকরিচ্যুত করার খবর পাওয়া গেছে।পাশাপাশি দীর্ঘদিন অবসরে থাকা বা চাকরিচ্যুত পুলিশকে ফিরে এনে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা করা হয়।পুলিশ হযবরল সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশের মনবল ও আইনি অবকাঠামো ভেঙে দেয়া হয়।জঙ্গি ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেনা পুলিশ!অন্তবর্তী সরকার ফ্যাসিস্টবাদী পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করতে পুলিশকে বাধ্য করা হয়।পতিত সরকার অনুসারীদের গনহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

পুলিশের পূর্ণরুপ >>P = Polite (নম্র, ভদ্র) O = Obedient (বাধ্য, অনুগত) L = Loyal ( বিশ্বস্ত) I = Intelligent (বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান) C = Courageous (সাহসী, নির্ভীক) E = Efficient (দক্ষ) …
পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়ার পর দেশে আজও স্থিতিশীল পরিস্থিতি ফিরে আসেনি।উল্টো প্রতিনিয়ত ভয়াবহতার দিকে এগুচ্ছে দেশ।সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রিসি ক্ষমতা দেয়ার পরও দেশে আজ অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অথচ পুলিশ এই সময় তার পূর্ণশক্তি নিয়ে মাঠে থাকলে মারামারি চাঁদাবাজি,গুম,খুন,চুরি,ডাকাতি,হত্যা,রাহাজানি,হামলা-মামলা,অগ্নিসংযোগ কিছুই হতোনা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এতো অবনতি ঘটতো না।

দেশের মানুষ অন্তত শান্তিতে বসবাস করতে পারতো।কিন্তু পুলিশের সেই মনোবল আর অবকাঠামো আগের মতো নেই।সবকিছু ধংস করে পুলিশ বাহিনীর মাঝা-কোমর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।যেখানে পাড়া মহল্লা থেকে শুরু করে সারাদেশে পুলিশ বাহিনী যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রাখে তা অন্য কোন বাহিনীর দ্বারা সম্ভব নয়।দেশে অপরাধীদের আতঙ্ক পুলিশ এবং সাংবাদিক।এটা যতক্ষণ আপনারা ব্যাক্তিস্বার্থ এবং দলীয়স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থ চিন্তা না করবেন,ততক্ষণ আপনাদের মাথায় ঢুকবে না।

সবাই বলে পুলিশ ঘুষ খায়!তাদেরও তো সংসার,বউ-বাচ্চা,পরিবার পরিজন আছে।এরপর বলে পুলিশ সরকারের তাঁবেদারি করে!করবেই না কেন?পুলিশ বাহিনীকে এইভাবেই তৈরি করে রেখেছে দেশের আইন/সিস্টেম।বাংলাদেশে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে তারাই নিজেদের মত করে পুলিশকে ব্যবহার করবে।হুকুম না মানলে নির্যাতিত হতে হবে,বদলি হতে হবে,চাকরি থাকবেনা।আবার দলীয় সরকারের হুকুম মানলে বিরোধী দলের হাতে প্রতিনিয়ত গালি শুনতে হবে,মার খেতে হবে,পুড়িয়ে,নির্যাতন করে,নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করতে হবে।জনগণের বন্ধু এই পুলিশকে কেন বার বার বলির পাঁঠা বানানো হবে!?


তাই সম্মানিত নীতিনির্ধারকগণের উদ্দেশ্যে বলছি,সবজায়গায় সংস্কার হচ্ছে!রাজনীতির উর্ধ্বে রেখে নির্দলীয় রাষ্ট্রপতির অধীনে পুলিশ বাহিনীকে নিরেপক্ষ একটি কমিশন করে দিন যাতে তারা ক্ষমতাসীন সরকারের হুকুমের গোলাম হতে না হয়।কারো তাঁবেদারি করতে না হয়।সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে জনগণের সেবায় পুলিশ বাহিনীকে নিয়োজিত করুন।তারপর পুলিশের এক্টিভিটিস দেখুন।দেখবেন পুলিশের প্রতি সাধারণ জনগণের কোন অভিযোগ থাকবে না।দেশ ও দেশের জনগণ সবাই শান্তিতে থাকবে।

আরও খবর

Sponsered content