বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংবাদ

৭২ দিনের প্রচেষ্টায় উদ্ভাবনী বাস-ট্রাকের মতই ডেমু চালানোর প্রযুক্তি

  প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১:৪৩:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

0Shares

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দেশের প্রকৌশলীরা চীনের লুকিয়ে রাখা প্রযুক্তি হটিয়ে নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিজেল ওয়ার্কশপে সচল করেছে ৫টি ডেমু ট্রেন।
.
সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ সেট ডেমু ট্রেন আমদানি করা হয় ২০১৩ সালে। উদ্দেশ্য ছিল ওই ট্রেনের মাধ্যমে কাছাকাছি দূরত্বে ব্যাপক যাত্রী পরিবহন করা। চীনের তানশাং ইন্টারন্যাশনাল ও ডানিয়াল টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ওই ডেমু ট্রেনের নির্মাতা।

কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ওই ট্রেনগুলো এক ধরনের বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত, যে প্রযুক্তি কখনোই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে হস্তান্তর করেনি।

এর মডিউল বিকল হলে নতুন মডিউলের সঙ্গে সফটওয়্যার সেটআপ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিত। এর জন্য ধর্ণা দিতে হত চীনা প্রকৌশলীদের কাছে। যা ছিল অনেক ব্যয়বহুল। একটি ডেমুতে ৪০টি মডিউল রয়েছে। যার এক একটির দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা। চীনা প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি হস্তান্তর না করায় একটার পর একটা ট্রেন বিকল হতে থাকে।
.
২০২০ সালে মেরামতের অভাবে ট্রেনগুলো বিকল হয়ে যায়। এসব সচল করতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জনাব মো. মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী দেশি প্রকৌশলীদের সহযোগিতা নিয়ে ডেমু ট্রেন মেরামতে দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উদ্যোগী হন।
.
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী ও আনবিক শক্তি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানের সহযোগিতা চাওয়া হয়। আসাদুজ্জামান ডেমু নিয়ে ইতোমধ্যে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণাগার হিসেবে তিনি বেছে নেন সৈয়দপুর রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাবের একটি কক্ষ। ৭২ দিনের প্রচেষ্টায় তিনি উদ্ভাবন করে ফেলেন বাস-ট্রাকের মতই ডেমু চালানোর প্রযুক্তি। ব্যয়বহুল মডিউল হটিয়ে দেন তিনি। সেক্ষেত্রে বসানো হয় মাত্র ২টি কন্ট্রোলার। আর চালু হয়ে যায় অচল ট্রেন।
.
এভাবে ৫ সেট ডেমু সচল করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দু’মুখে দুটি ইঞ্জিন মাঝখানে একটি কোচ। এরপর পর্যায়ক্রমে লোড বাড়িয়ে ট্রায়াল রান সম্পন্ন করা হয়েছে। এভাবে ৮টি ট্রায়াল রানের প্রতিটিতেই সাফল্য এসেছে।
.
অকেজো ডেমু মেরামত করে আমাদের প্রকৌশলীরা যুগান্তকারী সাফল্য দেখিয়েছেন। একটি ডেমু ট্রেন মেরামতে ব্যয় হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা, যা আমদানি করা হলে কয়েক গুন বেশি টাকা ব্যয় হত। এ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) করতে গিয়ে আমাদের জনবলও দক্ষ হয়েছেন। তাদের মাধ্যমে পরবর্তী মেরামত কাজ সহজ হয় ।

0Shares

আরও খবর

Sponsered content

0 Shares