প্রতিনিধি ১০ মে ২০২৫ , ২:৫৯:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চলছে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খাল পুনর্খনন কর্মসূচি।কিন্তু চারটি খালের ৪০ কিলোমিটার পুনর্খনন করতে গিয়ে দুই পাশে চলছে নির্বিচার গাছ নিধন।ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির পাঁচ হাজারের বেশি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।খাল পুনর্খনন পুরোপুরি শেষ হতে আরও পাঁচ হাজার গাছ কাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে,চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন খালের ৪০ কিলোমিটার খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে শাহ মোহছেন আউলিয়া (রহ.) খালের ৮ কিলোমিটার,বৈরিয়া খালের ৫ কিলোমিটার,কুদালা খালের ৮ কিলোমিটার,গুবাদিয়া খালের ৫ কিলোমিটার খননের কাজ চলছে।দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে এসব খাল ৩০ ফুট চওড়া,পৌনে ৫ ফুট গভীর করে খনন করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়,মোহছেন আউলিয়া খাল ও বৈরিয়া খাল খননে বিএডিসি নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে খননের কাজ করছে।কিন্তু এক্সক্যাভেটর মেশিন চলাচলের জন্য খালের পাশের হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।কিছু কিছু স্থানে গাছের মালিকরা নিজ খরচে গাছ কেটে ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন।আবার কিছু মালিক স’মিলে গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন।
আবু সিদ্দিক নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, মোহছেন আউলিয়া খালের পাশে আমার নানা রকমের ৩০টির বেশি গাছ ছিল।এক্সক্যাভেটর দিয়ে গাছগুলো ঠিকাদারের লোকজন ভেঙে ফেলেছে।শুধু এক্সক্যাভেটর চলাচলের সুবিধার্থে গাছগুলো কাটা হচ্ছে।অথচ গাছ রেখে খাল খনন করা সম্ভব,কিন্তু তারা তা করছে না।
শুনছি খাল খননে ১০ হাজারের বেশি গাছ কাটতে হবে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি কাটা হয়ে গেছে।তারা সম্পূর্ণ নিয়মবর্হিভূতভাবে সাধারণ জনগণের কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করছে।
মো. সাবের নামে আরেক ব্যক্তি বলেন,খাল খননে দুই পাশের হাজার হাজার গাছ কাটা হচ্ছে।মোহছেন আউলিয়া খালের পাশে আমার শখের শত বছরের শিরিষ গাছ কেটে ফেলেছে।তারা খাল খননেও অনিয়ম করছে।খাল খননের পরিমাণ একেক স্থানে একেক রকম হচ্ছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী আজমানুর রহমান জানান,ভূ-উপরিস্থ পানির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ৪০ কিলোমিটার খাল পুনর্খনন করা হচ্ছে।খাল খননের কাজে নিয়োজিত এক্সক্যাভেটর চলাচলের সুবিধার্থে দুইপাশের গাছগুলো কাটা হচ্ছে।গাছের ক্ষতি হলেও খাল পুনর্খননের জন্য গাছ কাটার বিকল্প নেই।তবে কেটে ফেলা গাছের সংখ্যা ১০ হাজার হবে না।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মোজাহিদুর রহমান বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত না।খোঁজ নিয়ে দেখব, ওই প্রকল্পে গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা।তবে গাছ কাটার বিষয়টি বন অধিদপ্তর দেখে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,জানতে পেরেছি কেটে ফেলা গাছগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীন।বন বিভাগের কোনো অনুমতি ছাড়াই গাছগুলো কাটা হচ্ছে।আমরা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।












