শিক্ষা

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব কটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘একক’ ভর্তি পরীক্ষা

  প্রতিনিধি ১০ অক্টোবর ২০২৩ , ৪:৩৬:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।আগামী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব কটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘একক’ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নেওয়া হয় আগেই।এখন আগামী শিক্ষাবর্ষে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত একটি অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসির কমিটির সভায় আজ মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে এ সুপারিশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।ইউজিসির সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত জুলাই মাসে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

বর্তমানে দেশে ৫৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে।এর মধ্যে সম্প্রতি তিনটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।এ তিনটি হলে দেশে মোট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হবে ৫৭টি।এ ছাড়াও দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১১৩টি।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদাভাবে ভর্তি করা হয়।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ঢাকা,রাজশাহী,চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা ভর্তি পরীক্ষা হয়। তবে ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুচ্ছভুক্ত হয়,তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েট) আরেকটি গুচ্ছে এবং কৃষি ও কৃষি শিক্ষাপ্রধান সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় অপর একটি গুচ্ছভুক্ত হয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে।এসব ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এখনো নানামুখী অভিযোগ ও অসুবিধা আছে।

এ জন্য চলতি বছরের ৩ এপ্রিল ইউজিসির এক সভায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘একক’ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়।তখন বলা হয়েছিল,নতুন নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা নিতে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামের পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে

ইউজিসির আজকের সভায় বলা হয়,দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক আওতাভুক্ত করে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন।এনটিএ গঠনের আগ পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে।ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যা–ই থাকুক না কেন,এ অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাবে।এ ছাড়া ইউজিসির একজন সদস্যের নেতৃত্বে একটি কমিটিকে অধ্যাদেশের খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুহাম্মদ আলমগীর বলেন,রাষ্ট্রপতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।তাঁর অভিপ্রায় অনুযায়ী জনস্বার্থে একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে যে আদেশ জারি করা হয়েছে,সেটি বাস্তবায়নে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষকদের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।আচার্যের অভিপ্রায় বা আদেশের বাইরে গিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের সহ–উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমদাদুল হক চৌধুরী,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম,শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ,চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কামালউদ্দিন,বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সহ–উপাচার্য খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন এবং ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উপস্থিত কমিটির সদস্যরা একক ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।তাঁরা বলেন,একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সদিচ্ছা।এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করতে পারেন,যা বাস্তবায়নে দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নেতৃত্ব দিতে পারে।

আরও খবর

Sponsered content