অপরাধ-আইন-আদালত

১৪নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০২৩ , ১২:৫৪:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

ইউসুফ আলী সৈকত (মেহেন্দিগঞ্জ) প্রতিনিধি।।বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১৪নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন একই পরিষদের সদস্য (মেম্বার)।গত মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর ) বরিশাল দুদকের উপ-পরিচালক বরাবর চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লার বিরুদ্ধে পরিষদের সব ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ নিয়ে অভিযোগটি দেন ইউপি সদস্য মোঃ মোতাহার জমদ্দার।

শনিবার (২ অক্টোবর) দুদকে অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লা ওই ইউনিয়নের একজন চিহ্নিত দুর্ণীতিবাজ।সে একের পর এক সরকার এবং জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ করিয়া আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রভাবে ধরাকে সরাজ্ঞান মনে করে। ওনি পরিষদের রেজুলেশন ছাড়া পুরাতন ৮টি ব্রিজের মালামাল নিজ হেফাজতে রাখিয়া গোপনে বিক্রি করে সে টাকা আত্মসাৎ করেন।অভিযোগ ওঠা ব্রিজ ও প্রকল্পগুলো হলো শ্রীপুর বাজারের আনোয়ার জমদ্দারের হোটেল এর পাশের ১৩০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ, বাহেরচর শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ১৪০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ, চরফেনুয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার ফায়েজ এর বাড়ির সামনের ১৩০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ, চরফেনুয়া জয়নাল স্যারের বাড়ির সামনের ১৩০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ, বাহেরচর আলেফ খার বাড়ির সামনের ১৫০ ফুট লম্বা আয়রন ও ঢালাই ব্রিজ , মিয়ারচর নিমাই চন্দ্র দাসের বাড়ির সামনের ১৪০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ,শ্রীপুর ভূইয়া বাড়ির উত্তর পাশের কাদের ঘরামির স্ব-মিলের সামনের ১৪০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজ এবং বাহেরচর নিজাম ফকিরের বাড়ির সামনের ৩০ ফুট লম্বা আয়রন ব্রিজের মালামাল বিক্রি করে সে ৩৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের জন্য সরকারের দেওয়া বিনামূল্যে মুজিব বর্ষের ১২২ টি ঘর বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মাথাপিছু ৩০ হাজার টাকা সর্বমোট ৩৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়,গরীবের নামে বরাদ্দ নিয়ে ১০ বান টিন নিজের বাড়ির কাজে ব্যবহার করেন, প্রভাব খাটিয়ে রেজুলেশন এবং টেন্ডার ছাড়াই শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ,সরকারী ১১০ টি গভীর নলকূপ বরাদ্দ পেয়ে তাহা মানুষের কাছে ২৫ হাজার টাকা হারে বিক্রি করেন ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ডানিডা প্রকল্পে ২৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বরাদ্দ পান।সে প্রকল্পে দ্বিন মজুর দিয়ে করানোর নিয়ম থাকলেও তা না করে ভেকু মেশিন ব্যবহার করে ২০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ ,শ্রীপুর ৩ নং ওয়ার্ডের পুরানো রাস্তার বরাদ্দ দেখাইয়া ৪০ দিনের কর্মসূজন কর্মসূচী ও কাবিখা থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ৫৭৫টি ভিজিডি কার্ড বিতরণ করে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা হারে ২৮ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন,কৃষি অফিসের বরাদ্দ ভিয়েতনামের নারিকেলের চারা নিজের ঘেরের পাড়ে রোপণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়াও বাহেরচর মৌজার ডিপি ১২১ নং খতিয়ানের ১৩৯২ নং দাগ।শ্রীপুর ১২০ নং মৌজার এস এ ১১৭২ নং দাগের জমি দখল করেছেন।প্রায় একশো একর খাসজমি দখল করে মাছের ঘের এবং বাগান তৈরি করার অভিযোগ তুলেন। অনুরূপ অভিযোগ তুলে বরিশাল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি রুবেল কাজী।তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো তদন্তে প্রমানিত হবে।ইউপি সদস্য মোঃ মোতাহার জমদ্দার বলেন,আমি ৭ সেপ্টেম্বর বরিশাল গিয়ে দুদক উপ-পরিচালক বরাবর চেয়ারম্যানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিলবে।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ মোল্লা বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে অনেক অভিযোগ।তবে তদন্তে এসব প্রমাণ করতে পারবে না।

আরও খবর

Sponsered content