ব্যবসা ও বাণিজ্য সংবাদ

ব্রয়লার মুরগি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে!

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২৩ , ১:৩৪:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।চারটি বড় কোম্পানি দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর যে মুরগির দর কেজিপ্রতি দুইশ টাকার নিচে নেমে এসেছিল,তা আবার দিয়েছে লাফ।

পাঁচ দিন আগে রাজধানীর দুটি বড় পাইকারি বাজারে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা দরে।

কারওয়ানবাজার ও মিরপুর শাহ আলী বাজারে এই চিত্র দেখে কয়েকজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।দুইশ টাকার নিচে নেমে গেছে জেনে কিনতে এসে এই দর দেখে মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি তারা।

আহসান মোল্লা নামে এক যুবক বলেন,শুনলাম ব্রয়লারে দাম ২০০ এর নিচে নেমেছে।তাই ভেবে কিনতে এসেছিলাম।কিন্তু এসে দেখি দাম আবার বেড়েছে।পাঁচ কেজি নেব ভেবে এসেছিলাম,তিন কেজি নিলাম।”

শাহ আলী বাজারে বিক্রেতা মো. মিলন বলেন, “ব্রয়লার আজকে ২১০ টাকা কেজি মাঝারিটা,আর বড়টা যাচ্ছে ২২০ টাকা কেজিতে।আজকে আমরা কিনছি ১৯৮ টাকায় আর কোম্পানিগুলো খামার থেকে দাম দিয়েছে ১৮৫ টাকা।”

বিক্রেতা রেজাউল করিম জানান,মুরগি সরবরাহকারীরা তাদের ২০২ টাকা দরে মুরগি দিয়েছে।তারা ১০ থেকে ১৫ টাকা লাভে বিক্রি করছেন।

ফেব্রুয়ারি থেকে ব্রয়লার মুরগির দর অস্বাভাবিকহারে বাড়তে থাকে।রোজার আগে আগে দর উঠে যায় ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা।এরপর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাচ্চা, খাবার ও মুরগি সরবরাহকারী বড় কোম্পানি কাজী ফার্মস, আফতাব,প্যারাগন ও সিপি এবং খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে।

একটি বৈঠকে উঠে আসে,বড় কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।কিন্তু তারা পাইকারি বাজারে বিক্রি করছে ২৩০ টাকা পর্যন্ত।এত বেশি মুনাফা করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর গত ১৬ মার্চ চার কোম্পানি মুরগির দর ৪০ টাকা পর্যন্ত কমানোর ঘোষণা দেয়।

পরের সপ্তাহে ২৬ মার্চ মুরগির দর ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় নেমে আসে।এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরে ক্রেতাদের মধ্যে। যদিও ছোট খামারিদের উৎকণ্ঠা বাড়ে।কারণ,তাদের উৎপাদন খরচ বড় কোম্পানির তুলনায় বেশি।

কিন্তু পাঁচ দিনের ব্যবধানে কোম্পানিগুলো ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা থেকে দাম বাড়িয়ে ধরেছে ১৮৫ টাকার আশপাশে।ফলে খুচরা দরও আবার উঠতির দিকে।

ব্রয়লারের পাশাপাশি বেড়েছে সোনালী মুরগির দর।প্রতি কেজি এখন ৩৩০ টাকা থেকে ৩৬০ টাকা।ডিম পাড়া শেষে বিক্রি করে দেওয়া লেয়ার মুরগির কেজি এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়।

গরুর মাংসের কেজি আটশ ছুঁই ছুঁই,খাসির মাংসের দর এক হাজার ছাড়িয়েছে আগেই।এখন ছুঁয়েছে ১১০০ টাকা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা আব্দুল মল্লিক বলেন, “সবকিছুর তো দাম বাড়তি,আমরা স্বস্তিতে নাই৷বেতন-বোনাস বাড়ে নাই। চাপ হয়ে যাচ্ছে।আগে পেঁয়াজ পাঁচ কেজি নিলে এখন তিন কেজি নিচ্ছি।তেল,মাছ-মাংস সবকিছুতেই এমন কাটছাঁট করছি।”

মিরপুর ১ নম্বরে ফুটপাতে দর্জির ব্যবসা করা হোসেন মিয়া বলেন,আমার যে ব্যবসা তাতে দিনে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা থাকে। আগে এই টাকায় ভালোই চলতে পারতাম৷এখন হয় না। মাছ এক কেজি কিনতে লাগে ৩০০ টাকা।কোনো রকমে টিকে আছি আরকি।”

শীত শেষে গ্রীষ্মের সবজির ভরা মৌসুম এখনও আসেনি। ফলে দাম বাড়তি।ভালো মানের পটল,ঢেঁড়স,চিচিঙ্গা কিনতে গুণতে হচ্ছে কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

রোজায় বেগুন সব সময় চোখ রাঙায়।এবারও তা বাদ যাচ্ছে না।মৌসুমের আগে আগে গরম আর রোজা বাড়িয়ে দিয়েছে লেবুর দরও।তবে সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে দর।আকার ও মান ভেদে দাম এখন হালিতে ২০ থেকে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে উঠে গিয়েছিল একশ টাকা পর্যন্ত।

আরও খবর

Sponsered content