জাতীয়

রাষ্ট্রের অঙ্গগুলো যত গণমাধ্যমবান্ধব হবে,ততই শক্তিশালী হয়ে উঠবে গণতন্ত্র-প্রধান বিচারপতি,ওবায়দুল হাসান

  প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২৪ , ৬:৪৪:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ণায়ক হচ্ছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা।রাষ্ট্রের অঙ্গগুলো যত গণমাধ্যমবান্ধব হবে,ততই শক্তিশালী হয়ে উঠবে গণতন্ত্র।ততটাই বিস্তৃতি পাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা।

শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতায় বজলুর রহমান স্মৃতিপদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি কথাগুলো বলেন।

বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক সংবাদের সম্পাদক বজলুর রহমান ২০০৮ সালে আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন।তারপর তাঁর স্ত্রী বর্তমানে জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরীর উদ্যোগে এই পদক প্রবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।১৬ বছর ধরে নিয়মিতভাবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সেরা প্রতিবেদনের জন্য এ পদক দেওয়া হচ্ছে।এর আর্থিক মূল্য এক লাখ টাকা,সঙ্গে একটি ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।বিকেল চারটায় আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।মতিয়া চৌধুরী অনুষ্ঠানে দর্শকসারিতে উপস্থিত ছিলেন।

এ বছর ছাপা সংবাদপত্রের বিভাগে যৌথভাবে পদক পেয়েছেন দৈনিক ভোরের কাগজের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার ঝর্ণা মণি এবং দ্য ডেইলি স্টারের রিপোর্টার আহমদ ইসতিয়াক। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে পদক পেয়েছেন চ্যানেল আইয়ের স্টাফ রিপোর্টার লায়লা নওশীন।প্রধান বিচারপতি তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক প্রদান কমিটির বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘গণমাধ্যম হচ্ছে সমাজের দর্পণ,সমকালের নির্ভুল প্রতিফলন। আমাদের বোধ ও বুদ্ধি নির্মাণের প্রভাবক।অচিন্তনীয় ঝুঁকির বোঝা মাথায় নিয়ে সাংবাদিকেরা তথ্য সরবরাহ করছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন উপাংশের জবাবদিহি নিশ্চিত করছেন। গণতন্ত্রকে সার্থক রূপ দিয়ে যাচ্ছেন।তাঁরা সমাজের সবচেয়ে কঠিন দায়িত্বই পালন করছেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিলেন।নব্য স্বাধীন দেশে তিনি বিশ্বের অন্যতম আধুনিক যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন,সেখানে নাগরিকসহ সংবাদমাধ্যমের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে মৌলিক অধিকারের মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।

বিচার বিভাগ সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন,এ বিভাগ নাগরিকের সর্বশেষ আস্থার স্থল।ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত গন্তব্য।’জনগণের আস্থাকে বিচার বিভাগের সবচেয়ে বড় সম্পদ উল্লেখ করে তিনি বলেন,গণমাধ্যমে এ আস্থা প্রতিফলিত হয়।এ জন্য তিনি তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সচেতনতা প্রত্যাশা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন,মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে যুক্ত।ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত থাকে,সে জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এই পদক প্রবর্তন করা হয়েছে।দেশে সব সময়ই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সাংবাদিকতার চর্চা প্রয়োজনীয় হয়ে থাকবে। তিনি পদক বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান।

সূচনা বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী বলেন,গত ১৬ বছরে একঝাঁক তরুণ সাংবাদিক ও নির্মাতার পরিশ্রমের ফলে মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ পেয়েছে,স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে। বিশিষ্ট সাংবাদিক বজলুর রহমানে মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী মতিয়া চৌধুরী স্বামীর উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সমুদয় অর্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে প্রদান করে এ পদক প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়ায় তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের শংসাবচন পাঠ করেন বিচারকমণ্ডলীর সদস্য ফরিদুর রেজা সাগর ও এ এস এম সামছুল আরেফিন। সঞ্চালনা করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন,এই পদক প্রদান অনুষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিবছরের কর্মসূচির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে উঠেছে।নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের মুক্তিযুদ্ধের তথ্যকে নতুন দৃষ্টিতে দেখে তা জনগণের কাছে তুলে ধরতে অনুপ্রাণিত করাই এ পুরস্কারের প্রধান উদ্দেশ্য।এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সাংবাদিকতা ভবিষ্যতে আরও গভীরতা ও বিস্তৃতি লাভ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরও খবর

Sponsered content