জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর জন্য হাওরের মাছ আর পনির পাঠাবেন রাষ্ট্রপতি

  প্রতিনিধি ১ মার্চ ২০২৩ , ৩:০২:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের গ্রামের বাড়ি থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো হবে হাওরের মাছ আর অষ্টগ্রামের বিখ্যাত পনির।আজ বুধবার রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তবে এসব উপহারসামগ্রী কবে পাঠানো হবে,ওই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির বাড়িতে অতিথি হয়ে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মধ্যাহ্নভোজে তাঁকে হাওরের ১৬ পদের মাছ দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।মাছের পাশাপাশি দেশি হাঁসের মাংসসহ মোট ২১ পদ খাবারের আয়োজন ছিল।এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে অষ্টগ্রামের বিখ্যাত পনির আর হাওরের রসমালাই দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ,রাষ্ট্রপতির স্ত্রী,বোন,মেয়ে, পুত্রবধূসহ অন্য আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

রেজওয়ান আহাম্মদ বলেন,প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে এসেছিলেন।হেলিকপ্টারে তো কিছু দেওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে প্রধানমন্ত্রী যেহেতু রাষ্ট্রপতির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন,তাঁকে তো কিছু না কিছু উপহার দিতে হবে।সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমরা হাওরের সব ধরনের মাছ আর অষ্টগ্রামের পনির উপহার হিসেবে পাঠাব।প্রধানমন্ত্রী হাওরবাসীদের অনেক কিছু দিয়েছেন,এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না।’

গতকাল কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধনের পর মধ্যাহ্নভোজের জন্য রাষ্ট্রপতির পৈতৃক বাড়িতে যান শেখ হাসিনা।রেজওয়ান আহাম্মদ বলেন,গতকাল দুপুরে আব্বাসহ আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাই। বাড়িতে যাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কিছুক্ষণ আলাপচারিতা হয়।এরপর আমাদের পরিবারের সব সদস্যসহ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বেলা তিনটা পর্যন্ত আমাদের বাড়িতে ছিলেন।প্রত্যন্ত হাওরে আমাদের বাড়িতে দেশের দুই প্রধান ব্যক্তি একসঙ্গে—এটা যে কী অনুভূতি ছিল,সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’

মধ্যাহ্নভোজের সময়ের বর্ণনা দিয়ে রেজওয়ান আহাম্মদ বলেন,সবার সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর প্রধানমন্ত্রী একটু বিশ্রাম নেন। এরপর খাবারের পর্ব আসে।খাবারের টেবিলে সবকিছু আগে থেকেই সাজিয়ে রাখা ছিল।প্রধানমন্ত্রী মাছসহ এত খাবারের আয়োজন দেখে হেসে দেন।বাড়ির সব নারী সদস্য খাবার পরিবেশনের সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন। আব্বা প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসে ছিলেন।আর আম্মা সব খাবার একটু একটু করে প্রধানমন্ত্রীর পাতে তুলে দেন।প্রধানমন্ত্রীও প্রায় সব খাবার চেখে দেখেছেন।হাওরের মাছ অষ্টগ্রামের বিখ্যাত পনির খেয়ে অনেক তৃপ্তি পেয়েছেন তিনি।’

প্রধানমন্ত্রীর আগমনে রাষ্ট্রপতিসহ তাঁর পরিবারের সবাই বেশ খুশি বলে জানালেন রাষ্ট্রপতির ছেলে।তিনি বলেন,আব্বা রাষ্ট্রপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বে ছিলেন।কিছুদিনের মধ্যে অবসরে যাবেন।এই শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে এসেছেন,এতে আব্বাসহ আমরা সবাই অনেক খুশি।এর প্রায় ২৫ বছর আগে,১৯৯৮ সালে আব্বা যখন ডেপুটি স্পিকার ছিলেন,তখন প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন মিঠামইনে।ওই সময় প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের বাড়িতে আনার জন্য কোনো রাস্তা ছিল না।তখন দূরের বাজার থেকে আব্বা প্রধানমন্ত্রীকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলেছিলেন,ওইটা আমার বাড়ি।” সেই থেকে মনে একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল,প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের বাড়িতে আনার।আর প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় আমাদের বাড়ির আশপাশের রাস্তাঘাটসহ এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সেটাও প্রধানমন্ত্রীকে স্বচক্ষে দেখানোর ইচ্ছা ছিল আব্বার। কিন্তু সময়–সুযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আসা হয়নি।তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আসতে পেরেছেন এবং হাওরবাসীকে দেখে গেছেন,এতেই রাষ্ট্রপতিসহ আমরা সবাই খুশি।হাওরের বাসিন্দারাও এ নিয়ে গর্ব বোধ করছেন।’

দুই দশকেরও বেশি সময় পর এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রথম মিঠামইন সফর।মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।পরে মিঠামইন উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে নির্মিত এ সেনানিবাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও পতাকা উত্তোলন করেন তিনি।পরে বিকেলে স্থানীয় হেলিপ্যাড মাঠ প্রাঙ্গণে হাওরবাসীর উদ্দেশে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।এরপর বিকেলে ঢাকা ফেরেন তিনি।

আরও খবর

Sponsered content