সারাদেশ

মেহেন্দিগঞ্জে মা ইলিশ রক্ষায় জেলেদের বিশেষ বরাদ্দ ভিজিএফ’র চাল মেম্বার-চেয়ারম্যানের পেটে!

  প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২৫ , ১১:২৬:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের মা ইলিশ রক্ষায় জেলেদের বিশেষ বরাদ্দ ভিজিএফ’র চাল মেম্বার-চেয়ারম্যানের পেটে!

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মৎস্য অফিস সুত্রে জানাগেছে,মা ইলিশ রক্ষায় শ্রীপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্র ১৮শ ৮জন জেলে পরিবারের তালিকায় গড়ে ২৫কেজি ৪৫.২০০মেট্রিক টন ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ হয়।রোববার (১২ অক্টোবর ২০২৫) সকালে জেলেদের চাল বিতরণের উদ্দেশ্যে স্লিপ সিস্টেম করে আগেরদিন স্লিপ জেলেদের বিতরণের জন্য স্হানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জেলেদের প্রদান করা হয়েছে। জেলেদের অভিযোগ বাহেরচর গ্রামের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার সুলতানা রেখা জেলেদের নামের তালিকার ৯০টি স্লিপ বিরতণ না করেই রেখে দেন।পরেরদিন চাল বিতরণের সময় নিজস্ব লোকের মাধ্যমে স্লিপ দিয়ে চাল ছাড়িয়ে নিয়ে নিজের জিম্মায় রেখে বিক্রি করে।স্হানীয় জেলেরা প্রতিবাদ পূর্বক আফসার আকনের ছেলে রিয়াজ আকনের ঘর ঘেরাও করে শ্রীপুর পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওমর সানীর নেতৃত্বে ঘরটি তল্লাশি করে ৫০কেজি ওজনের ১১ বস্তা জেলেদের চাল উদ্ধার করছে। মেহেন্দিগঞ্জ থানার পুলিশ ৫শ কেজি চাল জব্দ করেছে। এছাড়াও বাহেরচর কওমি মাদ্রাসার ঘাটে জাঙ্গাহীর চৌকিদার ৫০কেজি ওজনের ৩২ বস্তা চাল রেখে ট্রলার দিয়ে নিয়েছেন, এসময় জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানিয়েছেন,তার নামের এক বস্তা,মেম্বার সালাম হাওলাদারের থেকে ৫ বস্তা চাল কিনেছে। আর অবশিষ্ট ২৫ বস্তা চাল চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লা ভোলার ভেদুরিয়া চরচটকিমারার গুচ্ছগ্রামে থাকা চেয়ারম্যানের নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনীকে দিয়েছে।এভাবেই ৫০জন লাঠিয়াল বাহিনীকে বিভিন্ন সুবিধাভোগীদের নামে চাল দিয়ে আসছে।কিন্তু আরও ১ বস্তা বেশী চাল কার? জবাব পাওয়া যায়নি!জাঙ্গাহীর চৌকিদারের চাল নেয়ার প্রমান মাদ্রাসার সিসিটিভি ফুটেজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও থেকে পাওয়া গেছে।

মোঃ মোতাহার হাওলাদারের ছেলে মোঃ আলী হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,আমি একজন দিনমজুর লেবার। রেখা মেম্বারের স্বামী (জামাই) আঃ মন্নান মনু শিকদার একেঁ একেঁ ৪০টি স্লিপ দিয়ে ৫০কেজি ওজনের ২০ বস্তা জেলেদের চাল ছাড়িয়েছে।আমি ভ্যানে করে তার বাড়িতে পৌঁছিয়ে দিয়েছি।আর সালাম হাওলাদারের ৩ বস্তা রেখা মেম্বারের ৮ বস্তা রিয়াজ আকনের কাছে ২২হাজার টাকায় বিক্রি করছে।তবে রিয়াজ আকন জানান,রেখা মেম্বার আমার অনুপস্থিতিতে ঘরের মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে গচ্ছিত রেখেছেন।

শ্রীপুর ইউনিয়নের বিএনপির সহ সভাপতি ও সাবেক মেম্বার আঃ মন্নান শেখ জানিয়েছেন,সংরক্ষিত মহিলা ( ৪, ৫, ৬ ওয়ার্ড)মেম্বার সুলতানা রেখা ১০ বস্তা চাল আফসার আকনের ছেলে রিয়াজের কাছে বিক্রি করছে।মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওমর সানী ও পুলিশ ১০ বস্তা চাল জব্দ করলেও পরবর্তীতে মোটা অংকের ঘুষ বিনিময়ে রফাদফা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করছে স্হানীয় ইউপি সদস্য মোঃ নোমান মোল্লা।

শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মেঝবাউদ্দিন ফরহাদকে গুলি করে বোমা মেরে হত্যার চেষ্টা মামলায় পলাতক থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তবে চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার একমাত্র ছেলে মোঃ তানভীর আহমেদ উপস্থিত জনসাধারণের সম্মুখে জানিয়েছেন,আমি কাউকে কোনো জেলেদের চালের স্লিপ দেয়নি।আমার বাবার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।কারণ সে ১৪মাস গ্রামে আসেনি।আমিই মেম্বারদের নিয়ে চাল বিতরণ করি।জেলেদের চাল লুট করেছে।তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওমর সানীর মোবাইল ফোনে না পেয়ে হোয়াটস্যাপে যোগাযোগ করা হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ওমর সানীর কাছে বক্তব্য জানতে চেয়ে হোয়াটস্যাপ বার্তা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে স্ক্রিনশট প্রেরণ করা হয়েছে।


বিস্তারিত আসছে———প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায়

আরও খবর

Sponsered content