অপরাধ-আইন-আদালত

মুন্সীগঞ্জে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করায় এএসআই ক্লোজড

  প্রতিনিধি ২১ মার্চ ২০২৩ , ২:১২:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এক দোকান মালিককে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগে এক এএসআইকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজড করা হয়েছে।

অভিযুক্ত এএসআইয়ের নাম সুমন মিয়া।আর ভুক্তভোগী দোকান মালিকের নাম শাকিল ফরাজী (২৬)।তিনি গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী এমদাদুল হক ফরাজীর ছেলে।

ভুক্তভোগী শাকিল অভিযোগ করে বলেন,মধ্য বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ডে আমার একটি দোকান আছে।রবিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় গজারিয়া থানার এএসআই সুমনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার নামে নাকি নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় মাদক মামলা হয়েছে।আমি গত কয়েক মাসের ভেতরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় যাইনি বলে জানাই।এ সম্পর্কিত কাগজপত্র দেখতে চাইলে দেখাতে চাননি এএসআই সুমন।’

শাকিল বলেন,সোমবার (২০ মার্চ) সকালে একটি প্রাইভেট কারে করে কথা বলার কথা বলে আমাকে দোকান থেকে তুলে নেন এএসআই সুমন।এ সময় গাড়িতে তারা দুজন ছাড়াও টিশার্ট পরিহিত এসআই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি, কনস্টেবল রফিকুল ও গাড়ির চালক ছিলেন।চালক গাড়িটিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চর বাউশিয়া এলাকার নাবিস্কো কোম্পানির এক নির্জন স্থানে নিয়ে যান।সেখানে নিয়েই একটি পিস্তল দেখিয়ে আমাকে ২ লাখ টাকা দিতে বলেন এএসআই সুমন।তার দাবি করা টাকা না দিলে মাদক মামলার আসামি হিসেবে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন।এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করা হয়।পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে।’

ভুক্তভোগী শাকিলের মা রোকসানা বেগম বলেন,সকালে পুলিশ শাকিলকে তুলে নেওয়ার পরে বিভিন্ন জায়গায় তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ২-৩ ঘণ্টায় গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজ করা হয়।পরে জানতে পারি একটি জঙ্গলের ভেতরে শাকিলকে আটকে রাখা হয়েছে।স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পরে পুলিশের হাত থেকে শাকিলকে উদ্ধার করা হয়।’

গজারিয়া থানার এএসআই সুমন জানান,তার এক বন্ধু নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় কর্মরত।সেখানে শাকিলের নামে মাদক মামলা হয়েছে।তার বন্ধু গজারিয়া থানায় আসেন এবং বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য শাকিলকে নাবিস্কো গ্রুপের বাগানে নিয়ে যান তারা।

তবে আসামিকে আটক না করে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য কেন অন্য জায়গায় নিতে হবে জানতে চাইলে উত্তর দেননি এএসআই সুমন।

বন্দর থানার দায়িত্বরত তার এসআই বন্ধুর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,এখন ব্যস্ত আছি।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোয়েব আলী জানান,দুপুরের দিকে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে এএসআই সুমনকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল মামুন বলেন,এ রকম একটা কথা আমিও শুনেছি।তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে এএসআই সুমনকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও খবর

Sponsered content