বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংবাদ

মাস্কের কাজের চাপ সপ্তাহে ১২০ ঘন্টার বেশি

  প্রতিনিধি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:১৬:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।আকর্ষণীয় করে তোলা রাতে নিজের বিছানায় শুয়ে ঘুমের মধ্যেও সেসব নিয়েই ভাবতে থাকেন মাস্ক।কিন্তু এসবের মূল্য দিচ্ছে ৫১ বছরের মানুষটির শরীর।
অক্টোবরের শেষের দিকে টুইটার ইনকর্পোরেটেডের মালিকানা নেওয়ার পর থেকে,মাস্কের কাজের চাপ সপ্তাহে ১২০ ঘন্টার বেশি হয়ে গেছে।একটি সম্মেলনে বিনিয়োগকারী রন ব্যারনকে তিনি নিজেই একথা বলেছেন।

মাস্ক বলেন তাঁর রুটিনটা এখন ঠিক এরকম-আমি ঘুমাতে যাই,জেগে উঠি, কাজ করি। আবার ঘুমাতে যাই,জেগে উঠি,কাজ করি—সপ্তাহে সাত দিন এটাই করি। তবে আমি মনে করি একবার টুইটার সঠিক পথে সেট হয়ে গেলে এটি স্পেসএক্স বা টেসলার চেয়ে পরিচালনা করা অনেক সহজ হবে ।”মাস্ক টুইটার সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন: “গত ৩ মাস অত্যন্ত কঠিন ছিল…। এই কষ্ট কারো কাম্য নয়।”

টেসলার বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ নিয়ে এবং কেউ কেউ তাকে এটি চালানো থেকে সরে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন।

তিনি অবশেষে টুইটারের সিইও পদে নতুন কাউকে বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সমালোচনাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে বলেছেন যে তিনি তার ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের অন্যান্য অংশের সাথেও সমানভাবে জড়িত।টেসলা গত বছরের শেষ তিন মাসে রেকর্ড মুনাফা অর্জন করেছে। মাস্ক নভেম্বরেই টুইট করে লিখেছিলেন -”আমি এখনও টেসলায় অনেক কাজ করি,গভীর রাত পর্যন্ত আমাকে অফিসে থাকতে হয় ।”মাস্ক বলেছেন যে তিনি সাধারণত ভোর ৩ টার দিকে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে ওঠার আগে চেষ্টা করেন অন্তত ছয় ঘন্টা চোখ বন্ধ করে রাখতে।এরপর চোখ খুলেই যেকোন নতুন জরুরী খবর পেতে অবিলম্বে তার ফোন চেক করেন। এখন মাস্ক সান ফ্রান্সিসকোতে টুইটারের সদর দফতরেই ঘুমাচ্ছেন।এমনকি তিনি কর্মচারীদের জন্য সেখানে বিছানাও দিয়েছেন।

গত মাসে,সোশ্যাল মিডিয়ায় একজন ভক্তের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মাস্ক নিজের ব্যস্ত জীবনের বিবরণ দিয়ে বলেন – ” আমি সন্ধ্যায় নেভাদায় একটি টেসলা ইভেন্টে যোগ দিয়েছিলাম,সেদিনই রাতে টেসলার কৃত্রিম-বুদ্ধিমত্তা দলের সাথে মিটিং করি।তারপর মধ্যরাতে টুইটার সদর দপ্তরে পৌঁছাই দিনটা খুব দীর্ঘ ছিলো আমার কাছে।বছরের পর বছর ধরে, মাস্ক পিঠ এবং ঘাড়ের ব্যথার সাথে লড়াই করে চলেছেন।

২০১৮সালে টেসলাকে প্রাইভেটে নেওয়ার জন্য তিনি যেভাবে আদাজল খেয়ে নেমেছিলেন তা জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।সেই বছর,গাড়ি কোম্পানিটি মডেল ৩-এর উৎপাদন বাড়াতেও লড়ে যাচ্ছিলেন তিনি,যার ফলে মাস্ককে কারখানার মেঝেতেও ঘুমাতে দেখা গেছে।ঘুমের জন্য তাঁর অ্যাম্বিয়েনের ব্যবহারও মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল।

আরিয়ানা হাফিংটন ২০১৮ সালের কোনো এক সময়ে মাস্ককে অনুরোধ করেছিলেন নিজের যত্ন নেবার জন্য। হাফিংটন হলেন “দ্য স্লিপ রেভোলিউশন” এর লেখক।এটি এমন একটি বই যা অন্বেষণ করে যে কীভাবে ঘুমের অভাব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে।মাস্ককে একটি খোলা চিঠিতে তিনি বলেছিলেন-“মানুষ মেশিন নয়। ঘুম ছাড়া আপনি ভাল সিদ্ধান্ত নিতে এবং আপনার বিশ্ব-পরিবর্তনকারী উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জন করতে পারে এমন কোনও উপায় নেই।এর উত্তরে টুইটের সাথে নিজে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মাস্ক বলেন,ফোর্ড এবং টেসলা হল একমাত্র ২টি আমেরিকান গাড়ি কোম্পানি যা দেউলিয়া হওয়া এড়াতে পারে। আমি এইমাত্র কারখানা থেকে বাড়ি ফিরেছি।এরপরও আপনি মনে করেন কোনো বিকল্প থাকতে পারে? ”সেই সময় থেকে তিনি এখনও বিতর্কের মুখোমুখি হচ্ছেন।

গত মাসে সান ফ্রান্সিসকোতে ফেডারেল আদালতে সাক্ষ্য দেবার সময়ে পিঠে ব্যথার কথা প্রকাশ্যে আনেন মাস্ক। মাস্কের বিরুদ্ধে শেয়ারহোল্ডাররা অভিযোগ তুলেছিলেন যে টুইটার কেনার পর থেকে তিনি বিভ্ৰান্ত হয়ে পড়েছেন। মামলা জয়ের পর মাস্কের মা তাকে টুইটারে অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন”বড় স্বস্তি,এখন তুমি ঘুমাও।”

আরও খবর

Sponsered content