ইসলাম ও জীবন

মানুষ যা চেষ্টা করে,তাই সে পায়——

  প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:৩৮:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।সূরা নাজমের ৩৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ মানুষ যা চেষ্টা করে,তাই সে পায়।
وَأَن لَّيْسَ لِلْإِنسَانِ إِلَّا مَا سَعَى

অর্থাৎ,আল্লাহ এখানে বলছেন যে বান্দার কোনো চেষ্টাই বিফলে যায় না।কেউ আখিরাত পাওয়ার আশায় চেষ্টা করলে তিনি যেমন তাদের আখিরাতের সফলতা দান করেন,আবার কেউ দুনিয়ার কোনো সফলতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করলেও তিনি তাদের নিরাশ করেন না।

এখন আমার প্রশ্ন হল -যা আপনি পাওয়ার জন্য হার্ট অ্যান্ড সোল ট্রাই করবেন সেটাই আপনি পাবেন,আল্লাহ’র এই কথা কি আপনি বিজ্ঞান দিয়ে প্রমাণ করতে পারবেন?অনেকেতো অনেক কিছু চেয়েও পায় না।আবার এটাও বলা যায়,যে “চেষ্টা”র সংজ্ঞা কী হবে?কী কী করলে সেটাকে যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছে বলা যাবে?

মানুষ যা চেষ্টা করে,তাই সে পায় – সুরা নাজমে দেড় হাজার বছর আগে আল্লাহ’র বলা এই কথাটা মাত্র কয়েক দশক আগে সাইকোলজিস্ট ও ফিলোসফিস্টরা মেনে নিয়েছেন। নাম দিয়েছেন “ল অব অ্যাট্র্যাকশন”। কগনিটিভ রিফ্রেমিং ও ক্রিয়েটিভ ভিজুয়ালাইজেশন ব্যবহার করে নিউরোলজিস্টরা চেষ্টা করছেন এই ব্যাপারটাকে সাইন্টিফিক মেনিফেস্টেশন দিতে, এখনও পারেননি।বিজ্ঞান সম্পোর্কে আমরা যা ভাবি বিজ্ঞান নিজেও নিজের সম্পর্কে তা ভাবে না।আমরা এমন একটা ভান করছি যেন বিজ্ঞান সব কিছু জেনে বসে আছে।অথচ বিজ্ঞানের আছে অনেক অনেক সীমাবদ্ধতা।

কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্স দৃশ্যপটে আসার আগ পর্যন্ত কিন্তু আমরা ধরে নিয়েছিলাম যে থিওরিটিক্যাল ফিজিক্সের সব কিছু বের করা শেষ। কিন্তু এরপরই কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ বা Blackbody Radiation আর আলোক তড়িৎ ক্রিয়া বা Photo Electric Effect ব্যাখ্যা করতে না পেরে বুঝতে পারলাম যে, নাহ! আমাদের আরও অনেক জানার বাকী আছে।

ধরুন,এক মায়ের সন্তান হয়তো বিদেশে আছে।সে ছেলেটা আজকে মারা গিয়েছে বা কোন দূর্ঘটনায় পড়েছে।অনেকসময় আমরা এরকম শুনেছি যে মা নাকি ফিল করতে পারে যে সামথিং ইজ রং,মায়ের মনে নাকি জানান দেয়।এখন প্রশ্ন হল,সায়েন্স এটার ব্যাখ্যা কি দিবে?

বেশী না,আজ থেকে মাত্র ৫০ বছর আগে এই প্রশ্ন করা হলে তখনকার বিজ্ঞানের ধ্বজা-ধারীরা রেগে মেগে প্রায় চিৎকার করে বলত,এগুলো সব বোগাস কথা বার্তা। কমপ্লিটলি আন-সায়েন্টিফিক।অথচ কোয়ান্টাম মেকানিক্স এখন যে পর্যায়ে এসেছে তাতে করে আমরা এন্টেঙ্গেলমেন্ট থিওরি দিয়ে বুঝতে পারি যে,একজন মা’য়ের এমনটা এক্সপেরিয়েন্স করা আসলে একটা সায়েন্টিফিক প্রসেস যা আমরা এতদিন জানতাম না।

এন্টেঙ্গেলমেন্ট থিওরি আমাদের বলছে দুটো ইলেকট্রন যদি ক্লোজলি কানেক্টেড থাকে এবং এর একটাকে যদি আমরা অনেক দূরে নিয়ে গিয়ে সেটার মোমেন্টাম,স্পিন, পোলারাইজেশন এর মত যে কোন একটা প্রপার্টিজ চেঞ্জ করি,ইন্সট্যান্টলি এই প্রান্তের ইলেকট্রনেও সেই চেঞ্জটা আসে। ম্যাথমেটিক্যালি এই ব্যাপারটাকে প্রকাশ করা হয় (∂ + m) ψ = 0 ইকুয়েশন দিয়ে যেখানে ∂ হচ্ছে পার্শিয়াল ডেরিভাটিভ, m হচ্ছে ইলেকট্রনের ভর আর ψ হচ্ছে ওয়েভ ফাংশন।

কাজেই, “এই বিষয়টাতো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত না” – কোন বিষয়ে এই কথা বালাটাই হল সবচেয়ে বড় অবৈজ্ঞানিক কথা।

তাহলে বিজ্ঞান যদি এতই পরিবর্তনশীল হয় তবে কী সেই বিষয় যা অক্ষয়,অনন্ত ও অবিনশ্বর?

জ্বী,সেটাই ধর্ম।সেটাই ইসলাম।
একটা উদাহরণ দেই।

এই হল আমাদের বিজ্ঞান। যার বড়াই করতে গিয়ে আমরা ধর্মকে অবজ্ঞা, অবহেলা ও অপমান করি।

আরও খবর

Sponsered content