সারাদেশ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় এক্স-রে ফিল্মে ১০৭টির বেশি পিলেট পাওয়া গেছে

  প্রতিনিধি ১৪ মার্চ ২০২৩ , ৬:৩৬:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি।।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় শরীরে শতাধিক গুলির ‘পিলেট’ নিয়ে এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থী।পিলেট ঢুকে তাঁর পাচকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে গেছে।গত রোববার চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করা হয়।তাঁর এক্স-রে ফিল্মে ১০৭টির বেশি পিলেট পাওয়া গেছে।চিকিৎসকেরা বলছেন,ওই শিক্ষার্থীর অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হন ওই শিক্ষার্থী।অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে।ওই শিক্ষার্থীর নাম মশিউর রহমান ওরফে মিহাদ (২৩)।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক ছাত্র।তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রামের ইসলামপুর গ্রামে।খবর পেয়ে তাঁর ভাই আতাউর রহমান রাজশাহীতে এসেছেন।

এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় গতকাল সোমবার চার শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চোখের ‘ভিট্রিয়ল রেটিনাল ইনজুরি’র কারণে তিনজনকে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এবং মাথায় গুলি লাগার কারণে আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো শিক্ষার্থীরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আলিমুল ইসলাম,আইন বিভাগের শেষ বর্ষের মো. আল-আমিন ইসলাম ও ফারসি বিভাগের শেষ বর্ষের মিসবাহুল।আর মাথায় গুলির কারণে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী স্মারক মাহমুদকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

মশিউরের সহপাঠী সাগর জানান,ঘটনার দিন সবাই বিনোদপুর গেটের দিকে যাচ্ছিলেন।সেখানে কী হয়েছে,দেখার জন্য তাঁরাও গিয়েছিলেন।রাত ১০টার পর পুলিশের গুলিতে মশিউর গুরুতর আহত হন।তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।শুরুতে তাঁর ক্ষতস্থানের রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না।পরদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।

সাগর প্রথম আলোকে বলেন,গুলিতে মশিউরের নাড়ি ছিদ্র হয়ে গেছে।অস্ত্রোপচার করে সেটা জোড়া দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর থেকে তাঁকে সার্জারির পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে।তিনি বলেন,তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন,তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।

মশিউরের ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন,গুলির পিলেট ঢুকে ছেলেটির পাচকতন্ত্রে ছিদ্রের মতো হয়েছিল।দীর্ঘ সময় অস্ত্রোপচার করে সেটি ‘রিপেয়ার’ করা হয়।অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে বের করে তাঁকে পোস্ট অপারেটিভ আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন উন্নতির দিকে।

এদিকে রাকিবুল হাসান নামের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে গত রোববার আইসিইউ থেকে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।হাসপাতালের পরিচালক জানান,তাঁর অবস্থাও এখন বেশ ভালো।

শিক্ষার্থীদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন,চোখের সমস্যায় যাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে,তাঁদের চোখের ভেতরে জমাট রক্ত ছিল।সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে।তাঁদের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি বোর্ড করা হয়েছে।আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছাত্রকে আজ প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে কাল পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।তিনি বলেন,ছাত্রদের চিকিৎসা ব্যয়ের পুরোটাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করছে।

আরও খবর

Sponsered content