প্রতিনিধি ১৬ নভেম্বর ২০২৫ , ৫:১৬:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ওঠার পর কমতে শুরু করেছে।গত এক মাসে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৯৯ ডলার ৬২ সেন্ট কমেছে। সেই সঙ্গে পশ্চিমা দুনিয়ার শেষ কার্যদিবস,অর্থাৎ গত শুক্রবার সোনার দাম কমেছে ১০৯ ডলার ৭৩ সেন্ট।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ও পুরো মাসে সোনার দাম কমলেও গত সপ্তাহে আউন্সপ্রতি দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। সেই সঙ্গে রুপা,প্লাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের মতো ধাতুর দামও গত সপ্তাহে বেড়েছে।খবর রয়টার্স ও গোল্ড প্রাইস ডট অর্গ
এদিকে আগামী ডিসেম্বর মাসের জন্য গোল্ড ফাউচার্স বা সোনার আগাম দাম নির্ধারিত হয়েছে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯৪ ডলার।দেখা যাচ্ছে,এ ক্ষেত্রেও দাম কমেছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ।
বাস্তবতা হলো,যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে।প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কের কারণে দেশটির বাজারে আমদানি করা পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, মানুষ পড়েছে চাপে।এ পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু পণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়েছেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সম্ভবত ডিসেম্বর মাসে আর নীতি সুদহার কমাবে না।মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান হাই রিজ ফিউচার্সের ধাতু ব্যবসার পরিচালক ডেভিড মেগার বলেন,ফেড নীতি সুদহার কমাবে না—সেই সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ায় সোনা ও রুপার দৌড় আপাতত থেমে গেছে।এ ছাড়া ফেড কঠোর নীতিগত অবস্থান নিচ্ছে—এ ইঙ্গিতের আসার পর মার্কিন শেয়ারবাজারেও ধস নেমেছে।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দীর্ঘতম শাটডাউন (সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকা) হয়ে গেল।বৃহস্পতিবার সেই শাটডাউন শেষ হয়েছে। কিন্তু সরকারের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তথ্য–উপাত্তের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে ফেড ও বিনিয়োগকারীরা আগামী মাসের নীতিনির্ধারণী বৈঠকের আগে কার্যত তথ্যের ঘাটতিতে আছেন।
বিনিয়োগকারীদের আশা ছিল,নতুন তথ্য থেকে বোঝা যাবে, অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে। এতে ডিসেম্বরে সুদের হার কমানোর সুযোগ মিলত,সেই সঙ্গে সুদহীন বিনিয়োগ সোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ত।
তথ্য–উপাত্তের ঘাটতির কারণে ফেডারেল রিজার্ভ আরও সতর্ক অবস্থানে চলে গেছে।এ পরিস্থিতিতে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আছে—এমন প্রত্যাশা আরও ম্লান হয়ে গেছে।
সিএমই গ্রুপের ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী,ফেডের পরবর্তী বৈঠকে ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট সুদহার কমানো হবে,গত সপ্তাহের শুরুতে সেই সম্ভাবনা ছিল ৫০ শতাংশ।এখন তা কমে প্রায় ৪৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
অন্যদিকে যখন সাধারণত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকে বা সুদের হার কম থাকে,তখন সোনার দাম হু হু করে বাড়ে।
বাজার–বিশ্লেষকেরা বলেন,সবাই যখন ঝুঁকি কমাতে তৎপর হয়,তখন বিক্রির চাপ পড়ে এবং সে কারণে সোনার দামও সাময়িকভাবে কমতে পারে।এ ছাড়া গত সপ্তাহে এশিয়ার বড় বাজারগুলোতে সোনার চাহিদা কম ছিল।
শুক্রবার অন্য ধাতুগুলোর মধ্যে স্পট মার্কেটে রুপার দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে আউন্সপ্রতি ৫০ দশমিক ৮৪ ডলারে নেমে এসেছে।যদিও সামগ্রিকভাবে গত সপ্তাহে রুপার দাম ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে।
এ ছাড়া শুক্রবার প্লাটিনামের দাম ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৫৪৭ ডলার ৩০ সেন্ট এবং প্যালাডিয়ামের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৮৭ ডলার ২৫ সেন্টে নেমে এসেছে।
দেশের বাজারেও বাড়ছে–কমছে
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ছে–কমছে।বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে সাধারণত দেশের বাজারেও দাম বাড়ানো হয় আবার কমলে দেশের বাজারে কমানো হয়।
সর্বশেষ গত বুধবার বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি সোনার দাম ভরিপ্রতি ৪ হাজার ১৮৮ টাকা বাড়িয়েছে।তার দুই দিন আগেও সোনার দাম একবার বাড়ানো হয়েছিল।ফলে সেই দুই দিনে সোনার ভরি ৯ হাজার টাকার বেশি বেড়েছে।এর আগে দাম একাধিকবার কমানোও হয়েছে।শুক্রবার থেকে সোনার নতুন দর সারা দেশে কার্যকর হয়েছে। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

















