সম্পাদকীয়

বিদ্যমান সংবিধানঃ-কোনো বিদেশি নাগরিক সরকারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না

  প্রতিনিধি ২০ মে ২০২৫ , ৫:০০:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সেনা,নৌ,বিমান বাহিনীর প্রধানের অনুরোধে সুপ্রিমকোর্টের রেফারেন্স অনুযায়ী অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করেন।সাংবিধানিক ও আইনি জটিলতা থাকলেও দেশের সংকট নিরসনে জরুরী পদ্ধতি অবলম্বন করাই দায়বদ্ধতা ছিল তার।তবে অন্তবর্তী সরকারের অধিকাংশই ভিনদেশি নাগরিক।যাদের বাংলাদেশ পছন্দ নয়।

এদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

বাংলাদেশ এখন একটি অনির্বাচিত,অসাংবিধানিক স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অধীনে চলছে,যা মূলত বিদেশি এজেন্টদের দ্বারা পরিচালিত।তারা তাদের বিদেশি প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এখানে এসেছে।ইতিমধ্যেই তারা আরাকান আর্মিকে আমাদের মাটিতে প্রবেশাধিকার দিয়েছে।

এখন তারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলছে।এভাবে তারা বাংলাদেশকে আরেকটি আফগানিস্তান বা ইউক্রেনে পরিণত করবে।

দুর্নীতি,দুঃশাসন,অর্থনীতি,নিরাপত্তা,পরিবেশ-প্রতিবেশ মিলিয়ে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে দেশটি!এমন উপলব্ধি থেকে ‘আগাম ব্যবস্থা’ হিসেবে অনেকে গ্রহণ করেছিলেন ‘উন্নত দেশ’-এর নাগরিকত্ব।দালিলিকভাবে জন্মভূমির সঙ্গে ছিন্ন করেছিলেন সম্পর্ক।লাথি মেরে ছেড়ে চলে যাওয়া সেই ব্যক্তিরাই এখন ফিরে আসছেন দেশের হর্তাকর্তা হয়ে। পক্ষান্তরে পতিত সরকারের লাথি-গুতো,জেল-জুলুম সহ্য করেছেন অগণিত মানুষ।হাজারো নিপীড়নের মুখে তারা মাটি কামড়ে পড়েছিলেন নিজ ভূমে।সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন।অথচ এখন তারা নেই দেশ পরিচালনায়।

ভূ-খ-ের বাইরে থেকে অনেকে আন্দোলন সংঘটিত করেছেন।শক্তি ও সাহস জুগিয়েছেন।মানুষের মানসে ছড়িয়েছেন দ্রোহের আগুন।তাদের বড় অংশটিকেও যুক্ত করা হয়নি রাষ্ট্রপরিচালনায়;বরং অন্তর্বর্তী সরকারে ভিড় জমিয়েছে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি।কেউ ‘উপদেষ্টা’ হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পেটের ভেতরে।কেউ হয়েছেন ‘বিশেষ সহকারী’।কেউবা হয়েছেন ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’।অথচ তাদের অনেকের শেকড় পোঁতা আছে বিদেশে।টিকি বাঁধা রয়েছে পশ্চিমাদের কাছে।দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা তাদের নিতান্তই লোকদেখানো।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন,সরকার সংশ্লিষ্ট এসব ব্যক্তিরা হচ্ছেন দুধের মাছি।তাদের পরিবার বসবাস করে বিদেশে।সন্তান ‘মানুষ’ হচ্ছে পশ্চিমা আলো-হাওয়ায়।স্বার্থ ফুরালে উড়াল দেবেন ফুরুৎ করে।ফিরে যাবেন পরিবারের সান্নিধ্যে। রাজনীতির বাতাস উল্টো দিকে বইতে শুরু করলে খুঁজে পাওয়া যাবে না তাদের।অন্তর্বর্তী সরকার যদি ব্যর্থ হয়Ñ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম হবে।আর পুনরায় হাসিনার শাসন ফিরে এলে টার্গেট হবেন সেই সব যোদ্ধারা,যারা শুধুমাত্র দেশ প্রেম ও বিবেকের তাড়নায় জুলাই জাগরণে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।যারা ক্ষমতার স্বাদ পাননি।যাদের যাওয়ার মতো দ্বিতীয় কোনো গন্তব্য নেই।আন্দোলনের মূল অংশীজনদের সরকারের বাইরে রাখা হয়েছে।বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা নির্ধারণ করছেন জাতির ভবিষ্যৎ।
সমালোচকদের কেউ সরকারকে আখ্যায়িত করছেন ‘এনআরবি ক্লাব’ নামে।কেউবা নাম দিয়েছেন ‘এনজিও-বিষয়ক ব্যুরো’।কারণ সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদে বসা অনেকেই এদেশের নাগরিক নন।নিরাপদ ঠিকানা’ হিসেবে তারা পছন্দ করেছেন ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াকে।বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে কোন্ কোন্ উপদেষ্টা,সংস্কার কমিশনের প্রধান কিংবা বিশেষ সহকারী পশ্চিমা নাগরিকত্ব নিয়েছেন সেই তালিকা ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।এ কারণে অনেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিদেশিদের সরকার’ বলেও অভিহিত করছেন।তবে দেশের মানুষকে সন্দিহান করে তুলেছে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা এই ‘বিদেশি’দের কথা-বার্তা, কার্যকলাপ ও সিদ্ধান্ত।গৃহযুদ্ধে পর্যুদস্ত মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ দেয়ার আলাপ চলছে।চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর পরিচালনার কার্যভার বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার কথা হচ্ছে।পরিবেশ রক্ষার নামে সেন্টমার্টিনে মানুষের প্রবেশাধিকার রহিত করা হয়েছে।মানুষ মনে করছে,এসবই ঘটছে পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনে,পশ্চিমা ফুটপ্রিন্ট বাড়ানোর স্বার্থে। যা দেশের সার্বভৌমত্ব,অখন্ড-তা ও নিরাপত্তাকে সমূহ ঝুঁকির মুখে ফেলছে।গত ৯ মাসে সম্পাদিত খন্ড- খন্ড- কার্যকলাপ এক সাথে করলে জনমনে এমন সংশয় জাগার অবশ্য যথেষ্ট কারণও রয়েছে।

নাগরিকত্ব বিধানাবলির অস্পষ্টতা :সরকার পরিচালনায় নাগরিকত্ব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।অন্তর্বর্তী সরকারে তাই ‘নাগরিকত্ব’ প্রসঙ্গটি উচ্চারিত হচ্ছে জোরেসোরে।বিদ্যমান সংবিধান বলছে,কোনো বিদেশি নাগরিক সরকারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী অনেকের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ তথা দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার অভিযোগ তদন্ত চলছে।সাংবিধানিক পদ,এমকি সরকারে থাকা ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ সংবিধানে কঠোরভাবে বারিত।

সংবিধানের প্রথমভাগে (অনুচ্ছেদ ৬ এর ১) ‘নাগরিকত্ব’ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে।বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে।জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের নাগরিকত্বের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে সংবিধানের পঞ্চম ভাগের ‘আইনসভা’-বিষয়ক অনুচ্ছেদে।এমপি নির্বাচনে ‘যোগ্যতা ও অযোগ্যতা’ বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৬ (২) এর (গ) তে বলা হয়েছে।কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না,যদি (২) কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না,যদি ওই ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন।নির্বাচিত সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ রাখা হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু নেই সংবিধানে।

অন্যদিকে ‘নাগরিকত্ব’ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ ৬ (১) এ বলা হয়েছে,নাগরিকত্ব আইন দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে,বাংলাদেশে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ কোনো আইন নেই।১৯৫১ সালে প্রণীত একটি আইন রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৭২ সালে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত একটি সরকারি আদেশ (অস্থায়ী বিধান) রয়েছে।যাতে দ্বৈত নাগরিকত্বকে বারিত করা হয়েছে।১৯৭২ সালের বিধান অনুযায়ী ইউরোপ অথবা উত্তর আমেরিকা অথবা সরকার কর্তৃক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্ধারিত অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের নাগরিককে সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে পারে।

১৯৫১ সালের নাগরিকত্ব আইনের ১৪ ধারায় দ্বৈত নাগরিকত্ব অথবা জাতীয়তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।নাগরিকত্ব আইন,১৯৫১ এর ১৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এ ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে যদি কোনো ব্যক্তি এ আইনের বিধানাবলির অধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন এবং একই সময়ে অন্য কোনো দেশের নাগরিক বা অধিবাসী হয়ে থাকেন,তিনি যদি না ওই দেশের আইন অনুযায়ী তার নাগরিক অথবা অধিবাসী মর্যাদা পরিত্যাগ করে ঘোষণা প্রদান না করে থাকেন,সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া হতে বিরত হবেন।

১৯৫১ সালের এই আইনটি হালনাগাদ করতে জাতীয় আইন কমিশন সুপারিশ করলেও স্বাধীনতার পরবর্তী কোনো সরকারই সেটি করেনি।ফলে অনেকটা অস্পষ্টতা নিয়েই চলছে ‘নাগরিকত্ব আইন’-এর বিধান।অস্পষ্টতা থাকায় নাগরিকত্ব আইনের অপব্যাখ্যা এবং অপব্যবহারও চলছে ব্যাপক।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও আইনজ্ঞ ইকতেদার আহমেদের মতে,সংবিধান অনুযায়ী বিদেশি নাগরিকত্ব বহাল রেখে এমপি হওয়ার ক্ষেত্রে বা অপরাপর সাংবিধানিক পদধারী হওয়ার ক্ষেত্রে ভাবাগতভাবে বিধিনিষেধ সাংবিধানিক পদধারীদের অনুরূপ হওয়া সত্ত্বেও অনেকে বিষয়টি উপেক্ষা করে দেশের সর্বোচ্চ আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। এটি জাতির সঙ্গে উপহাস মাত্র।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীব ব্যারিস্টার আকবর আমীন সরকারি পদ এবং সাংবিধানিক পদ-পদবি ধারণে সাংবিধানিক বাধার কথা উল্লেখ করেন।তিনি বলেন,বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ সাংবিধানিক বাধা রয়েছে। সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগে বিচারক নিয়োগ বিষয়ে বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৯৫(২) অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হইবেন না যদি তিনি বাংলাদেশের নাগরিক না হন।বাস্তবতা হচ্ছে,হাসিনা সরকার অনেক বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন,যারা একাধারে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিচারক নিয়োগ বাগিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন। তারা আবার মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রেরও নাগরিক।আইনজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান সাপেক্ষে এটি একটি প্রতারণা ও মিথ্যাচারিতা। এমনটি ঘটত না যদি ‘নাগরিকত্ব’ বিষয়ক শক্ত আইন থাকত।

বিদেশী নাগরিকরা হলেন:

১. প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস একজন মার্কিন নাগরিক।(তিনি জার্মানি,ইতালি এবং ফ্রান্সেরও নাগরিক)

২. পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান,ব্রিটিশ নাগরিক।

৩. প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী,সুইস নাগরিক।

৪. জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান,মার্কিন নাগরিক।

৫. আনিসুজ্জামান চৌধুরী,প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী। প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা,অর্থ মন্ত্রণালয় – অস্ট্রেলীয় নাগরিক।

৬. সুফিউর রহমান,প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা,পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।সুইস নাগরিক।

৭. শেখ মাইনু উদ্দিন,প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, প্রতিমন্ত্রী,সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। মার্কিন নাগরিক।

৮. ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব,প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী,প্রতিমন্ত্রী,ডাক,টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।ডাচ নাগরিক।

৯. আশিক চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদা,বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA)।ব্রিটিশ নাগরিক।

১০. আলী রিয়াজ,সাংবিধানিক সংস্কার কমিটির প্রধান। ঐক্যমত কমিশনের উপ-সভাপতি।মার্কিন নাগরিক।

১১. বদিউল আলম মজুমদার,নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান। মার্কিন নাগরিক।

১২. কামাল আহমেদ,গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান। ব্রিটিশ নাগরিক।

১৩. মোস্তাক হোসেন খান,দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) সংস্কার কমিশনের সদস্য।ব্রিটিশ নাগরিক।

১৪. লামিয়া মোরশেদ, সিনিয়র সচিব, ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। পরিবারের সদস্যরা কানাডীয় নাগরিক।

১৫. মনির হায়দার, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, সিনিয়র সচিব মর্যাদা। মার্কিন নাগরিক।

১৬. এম. মুশফিকুল ফজল আনসারী,সিনিয়র সচিব মর্যাদা। বাংলাদেশের মেক্সিকোতে রাষ্ট্রদূত,মার্কিন নাগরিক।

১৭. শাজিব এম. খায়েরুল ইসলাম,প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিব,যুগ্ম সচিব মর্যাদা। মার্কিন নাগরিক।

আরও খবর

Sponsered content