প্রতিনিধি ২৯ অক্টোবর ২০২৫ , ৫:১৪:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদমর্যাদা হবে দেশের একজন পূর্ণ মন্ত্রীর সমান।আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের প্রতিনিধি কমবে।এ ছাড়া গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের নিয়োগ হবে ‘সার্চ’ বা অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে।

বাংলাদেশ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায় এ কথা বলা হয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন,দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে খসড়াটি করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ,অর্থসচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেককে গভর্নর আলাদা চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন,বিদ্যমান বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার,১৯৭২ সংশোধন করে এ অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।অধ্যাদেশ জারির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উপদেষ্টা ও সচিবদের সহযোগিতা চান তিনি।
চিঠিতে গভর্নর বলেছেন,এ ধরনের সংশোধন আনতে অতীতে একাধিকবার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।কিন্তু রাজনৈতিক কারণ ও প্রশাসনিক সদিচ্ছার অভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।এ অর্ডার সংশোধন করার জন্য বর্তমান সময়টিই সবচেয়ে উপযুক্ত।এটি করা গেলে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে।
সংশোধন করা গেলে আর্থিক খাতে অতীতের ভুল ও অনিয়মের পুনরাবৃত্তি রোধে দৃঢ় আইনগত ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও জানান গভর্নর।
বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা।ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দেয় সরকার। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা রাষ্ট্রাচারের মর্যাদাক্রমে গভর্নরের অবস্থান এখন সচিবদের ওপরে।তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নিচে।অ্যাটর্নি জেনারেল,মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) এবং গভর্নরের অবস্থান একই।
কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজ মুদ্রানীতি তৈরি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখা হয়,যাতে তারা স্বাধীনভাবে নীতি নির্ধারণ করতে পারে।কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময় কোনো কোনো দেশে দেখা গেছে,কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।অবশ্য বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অতীতে গভর্নর পদে থাকা ব্যক্তিদের সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে ভূমিকা রাখতেই বেশি দেখা গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে গভর্নরের মর্যাদা বাড়িয়ে এবং নিয়োগপ্রক্রিয়া বদলানোর প্রস্তাব করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদে উপস্থাপিত হয় এবং তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গভর্নরকে মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন আমলারা।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে গত সোমবার বলেন,এটা অনেক সংবেদনশীল বিষয়।কাজটি অত সহজ নয়।আমরা এটা দেখছি।নিজেরা পর্যালোচনা করব এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও আলোচনা করতে যাব।তার আগে এর কোনো দিক নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
যুক্তরাজ্য,সিঙ্গাপুর,ভারত,শ্রীলঙ্কা,মালয়েশিয়া,থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা মন্ত্রীর সমান পদমর্যাদা ভোগ করেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর কেন পূর্ণ মন্ত্রীর সমমর্যাদা চান
উপদেষ্টা ও সচিবদের দেওয়া চিঠিতে আহসান এইচ মনসুর বলেছেন,গভর্নরের পদমর্যাদা একজন পূর্ণ মন্ত্রীর সমমর্যাদায় উন্নীত হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা বাড়বে।এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত স্বাধীনতা,আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় একটি মৌলিক কাঠামোগত পদক্ষেপ হিসেবে তা বিবেচিত হবে।
যুক্তরাজ্য,সিঙ্গাপুর,ভারত,শ্রীলঙ্কা,মালয়েশিয়া,থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা মন্ত্রীর সমান পদমর্যাদা ভোগ করেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন গভর্নর।তিনি বলেন, এতে তাঁদের নীতিগত স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে সহায়ক হয়।গভর্নর পূর্ণ মন্ত্রীর সমমর্যাদাসম্পন্ন হলে সরকারের অন্যান্য অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন নিশ্চিত হবে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০২১ সালে ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বাধীনতা কাঠামো’ নামে যে কাঠামো করেছে,তার সুপারিশের সঙ্গেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের মন্ত্রী মর্যাদা সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন আহসান মনসুর।তিনি গত সোমবার মুঠোফোনে বলেন,দর্শনটা হলো, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন।গভর্নর পদ পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদার সমান হলে স্বায়ত্তশাসন বাড়বে।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের প্রতিনিধি বর্তমানের তিনজন থেকে কমিয়ে একজন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।বিপরীতে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ সদস্য দুজন বেড়ে চারজন থেকে বেড়ে হবেন ছয়জন।
পর্ষদে সরকারের প্রতিনিধি কমবে কেন
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে বর্তমানে ৯ জন সদস্য রয়েছেন,যার চেয়ারম্যান গভর্নর।আরও থাকেন অর্থসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব,একজন ডেপুটি গভর্নর এবং বেসরকারি খাত থেকে চারজন।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের প্রতিনিধি বর্তমানের তিনজন থেকে কমিয়ে একজন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।বিপরীতে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ সদস্য দুজন বেড়ে চারজন থেকে বেড়ে হবেন ছয়জন।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুশাসন মডেল অনুসরণ করে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় পেশাদারি,বৈচিত্র্য ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানানো হয় গভর্নরের চিঠিতে।এতে বলা হয়,যুক্তরাজ্য, জাপান,দক্ষিণ আফ্রিকা,সিঙ্গাপুর,নিউজিল্যান্ড,কানাডা, আয়ারল্যান্ড ইত্যাদি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদে সরকারি প্রতিনিধিত্ব সীমিত।
গভর্নর সুনির্দিষ্ট উদাহরণ দিয়ে চিঠিতে বলেন,যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ ১২ সদস্যের।গভর্নর ও দুই ডেপুটি গভর্নর ছাড়া বাকি ৯ জনকে বেসরকারি খাত থেকে নিয়োগ দেয় সরকার।এখানে কোনো সরকারি লোক নেই।কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৫ জনের পর্ষদ এবং জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯ সদস্যের পর্ষদেও কোনো সরকারি প্রতিনিধি নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদে সরকারি প্রতিনিধি কমানোর প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন,অনেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদে একজনও সরকারি প্রতিনিধি থাকেন না।পর্ষদে তিনজন সরকারি প্রতিনিধি থাকা নিয়ে আইএমএফেরও আপত্তি আছে।
একটি আধুনিক ও স্বায়ত্তশাসিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌলিক শর্ত হিসেবে এর শীর্ষ পদে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত উপায়ে এবং দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্যই এমন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানান গভর্নর।
গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ-অপসারণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর পদে নিয়োগপ্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ,নিরপেক্ষ ও পেশাদার করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।এসব পদ শূন্য হলে রাষ্ট্রপতি ও সরকারের মাধ্যমে যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে তিন সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হবে।এ কমিটির নেতৃত্ব দেবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী বা অর্থ উপদেষ্টা,পরিকল্পনামন্ত্রী বা পরিকল্পনা উপদেষ্টা অথবা একজন বিদায়ী বা সাবেক গভর্নর। সার্চ কমিটির গঠন,কার্যপরিধি ও প্রক্রিয়া আলাদা বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
একটি আধুনিক ও স্বায়ত্তশাসিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মৌলিক শর্ত হিসেবে এর শীর্ষ পদে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত উপায়ে এবং দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্যই এমন প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানান গভর্নর।
এদিকে গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের অপসারণবিষয়ক কোনো অভিযোগ উঠলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটির মাধ্যমে তা পর্যালোচনা করা হবে।তাঁদের অপসারণ নিশ্চিত হবে আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে,নির্বাহী কর্তৃপক্ষের একক বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে নয়।
নিজস্ব জনবলের বেতনকাঠামো বাংলাদেশ ব্যাংক নিজে ঠিক করবে এবং পদ সৃষ্টিসহ শীর্ষ পর্যায়ের নিয়োগও নিজেই দেবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে অধ্যাদেশের খসড়ায়।
সাবেক ব্যাংকাররা বলছেন,গভর্নর যদি মন্ত্রীর মর্যাদাপ্রাপ্ত হন, তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে নীতি সমন্বয়ের বদলে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে।
সমন্বিত তদারককাঠামো প্রতিষ্ঠা হবে
ব্যাংক খাতে অনিয়ম,অব্যবস্থাপনা ও স্বার্থের সংঘাত প্রতিরোধের মাধ্যমে শৃঙ্খলা,স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।এ জন্য অধ্যাদেশে নতুন একটি অনুচ্ছেদ সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে,যার মাধ্যমে একটি আধুনিক সমন্বিত তদারককাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক।এ কাঠামো ব্যাংক খাতে অনৈতিক কার্যক্রম,তথ্য গোপন,স্বজনপ্রীতি ও একচেটিয়া আচরণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে গভর্নর মনে করেন।
নীতি বাস্তবায়নে নির্বাহী–নির্ভরতা কমানোর জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব বিধি প্রণয়ন ক্ষমতাও সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া অধ্যাদেশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন তিন কোটি টাকা। খসড়া অধ্যাদেশে এ আকার ৩৩ গুণের বেশি বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে দেশের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন ব্যাংকারের সঙ্গে কথা বলেছে প্রতিবেদক।তাঁরা বলছেন,বাংলাদেশ ব্যাংককে অতি ক্ষমতাশালী করা হলে তার জবাবদিহি কীভাবে হবে,সে প্রশ্নও আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কার কাছে জবাবদিহি করবে,এমন প্রশ্নের জবাবে আহসান মনসুর বলেন,বাংলাদেশ ব্যাংকের জবাবদিহি থাকবে জাতীয় সংসদের কাছে।সংসদীয় কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডের বিচার-বিশ্লেষণ করবে।শুনানিও নেবে সংসদীয় কমিটি।সংসদীয় কমিটি কতটুকু কী পারে,তার কোনো ভালো উদাহরণ অতীতে দেখা যায়নি—এ বিষয়ে গভর্নর বলেন,সরকারি দল থেকে ৫০ শতাংশ ও বিরোধী দল থেকে ৫০ শতাংশ সদস্য থাকতে পারে কমিটিতে।তখন এ কমিটির কাজ অধিকতর কার্যকর হবে।
সাবেক ব্যাংকাররা আরও বলছেন,গভর্নর যদি মন্ত্রীর মর্যাদাপ্রাপ্ত হন,তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে নীতি সমন্বয়ের বদলে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে। পর্ষদে সরকারি প্রতিনিধি কমলে জবাবদিহি–ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।সরকারি প্রতিনিধি কমলে নীতি নির্ধারণে জনস্বার্থ ও রাজস্বনীতির দিকটিও উপেক্ষিত হতে পারে। উন্নত দেশে স্বাধীন সদস্য থাকলেও তাঁদের জন্য কঠোর জবাবদিহি কাঠামো থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ও সাবেক পর্ষদ সদস্য মুস্তফা কে মুজেরী বলেন,গভর্নরের পদমর্যাদা পূর্ণ মন্ত্রীর সমান হওয়াটা বড় কথা নয়।দায়িত্ব পালন ঠিকভাবে হচ্ছে কি না,সেটা বড়।বেতন বা ক্ষমতা বাড়িয়ে এবং মন্ত্রীর মর্যাদা দিলেই যে ভালো কিছু হয়ে যাবে,তা নিশ্চিত নয়। এটা অনেকটা ব্যক্তির ওপরও নির্ভর করে।
মুস্তফা কে মুজেরী বলেন,বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ক্ষমতাবান করা দরকার।পাশাপাশি তাঁর ও তাঁর দপ্তরের জবাবদিহির জায়গাটাও পরিষ্কার করা উচিত।আবার এ–ও মাথায় রাখতে হবে,অতিরিক্ত স্বাধীনতা স্বৈরাচারী, পরাক্রমশালী ও দানব হওয়ার পথ তৈরি করে দেয়।

















