সারাদেশ

প্রতিদিন ২০ টাকা করে জমিয়ে বছর শেষে সে টাকা দিয়ে কেনেন কোরবানির গরু

  প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২৩ , ১:৫৪:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।দশে মিলে করি কাজ,হারি জিতি নাহি লাজ’ এমন প্রবচনকে সার্থক করে তুলেছেন- ২২ জন হতদরিদ্র মানুষ।কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের মূল সতাল গ্রামে তারা গঠন করেছেন হতদরিদ্র সমিতি।যার মাধ্যমে কারো কাছে হাত না পেতে নিজেদের অর্থেই দেবেন কোরবানি।তাইতো প্রতিদিন ২০ টাকা করে জমিয়ে বছর শেষে সে টাকা দিয়ে কেনেন কোরবানির গরু।

এ সমিতির লক্ষ্য একটাই ঈদুল আজহাতে কারও দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেদের মতো করে কোরবানি দেওয়া। তাই তো সাত বছর ধরে কোরবানি ও নিজেদের প্রয়োজনে প্রতিদিন ২০ টাকা করে সঞ্চয় করেন সমিতির সদস্যরা। সমিতির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন সদস্যদের কাছ থেকে প্রতিদিন টাকা সংগ্রহ করেন।তিনিসহ সমিতির তিন সদস্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সবাই দিনমজুর শ্রেণির।

সমিতির সদস্যরা জানান, এ বছর এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা দিয়ে কোরবানির গরু কিনেছেন তারা।তবে গরু কিনতে গিয়ে ছয় হাজার টাকার মতো কম পড়েছিল।পরে সমিতির সবাই আরও কিছু টাকা দিয়ে সেটি পরিশোধ করেছেন। তাছাড়া প্রতি বছরই গরু কিনে টাকা উদ্বৃত্ত থাকলে,সেটা কোরবানির মাংসের সঙ্গে সব সদস্যকে সমানভাবে বণ্টন করা হয়।
তারা আরও জানান,কোরবানির ঈদের পরদিন থেকে আবারও ২০ টাকা করে জমানো শুরু হয়।সমিতির শুরুতে তারা ১০ টাকা করে জমা করে কোরবানি দিতেন।কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জিনিসপত্রসহ পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় দৈনিক জমার টাকা বাড়িয়েছেন।

সমিতির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন জানান,সাত বছর ধইরা আমরা এই সমিতি করছি।নিজেরার টেহা জমাইয়া সাত বছর ধইরা কোরবানি দিতাছি।প্রতিদিন আমরা ২০ টেহা কইরা সঞ্চয় করি।বছর শেষ অইলে,সেই টেহা দিয়া কোরবানির গরু কিনি।আমরা নিজেরার টেহা দিয়া কোরবানি দেই,পরিবারের বউ-পুলাপাইনও অনেক খুশি হয়।কারও কাছে হাত পাততে অয় না,এইডাই আমরার তৃপ্তি।আল্লাহ আমরার সহায়, হেইডাই অনেক কিছু।

নানা প্রতিকূলতা আর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই এসব হতদরিদ্র মানুষরা,নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য বদলেছেন।এখন আর কোরবানিতে কারও মুখের দিকে তাকাতে হয় না।পরিবারের সদস্যরাও ঈদের দিনটি আনন্দে কাটাতে পারেন।সবার মাঝেই ঈদ আনন্দের কোনও ঘাটতি থাকে না।

আরও খবর

Sponsered content