প্রতিনিধি ১ অক্টোবর ২০২৫ , ৭:৩৩:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।বাংলাদেশে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য শুধু দলিলই নয়,আরও কিছু সরকারি স্বীকৃত নথিপত্র মালিকানা নিশ্চিত করতে পারে।সুপ্রিম কোর্টের রায় ও বর্তমান ভূমি ব্যবস্থাপনার আলোকে এখন পাঁচটি মূল প্রমাণের ভিত্তিতেই আইনি স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব।

অনেক সময় দলিল হারিয়ে যায়,অগ্নিকাণ্ডে নষ্ট হয়,কিংবা পারিবারিক শত্রুতার কারণে গায়েব করে দেওয়া হয়।এ ধরনের পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই—যদি নিচের পাঁচটি নথি আপনার কাছে থাকে,তবে আইনের চোখে আপনিই জমির বৈধ মালিক।
জমির মালিকানা প্রমাণের ৫টি মূল নথি
*১. খতিয়ান (CS, SA, RS, BS ইত্যাদি)
সরকারি জরিপ অনুযায়ী জমির মালিকানা,দাগ নম্বর, পরিমাণ,সীমানা ও খাজনা সংক্রান্ত তথ্য থাকে খতিয়ানে। এটি মালিকানার প্রাচীনতম ও প্রধান প্রমাণ।
*২. নামজারি/খারিজ (Mutation Record)
জমি ক্রয় বা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়ার পর নিজের নামে সরকারি খতিয়ানে নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে হয়।এটিই মালিকানার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
*৩. ভোগদখলের প্রমাণ
জমি দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করা,ঘরবাড়ি নির্মাণ বা ব্যবহার করা মালিকানার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।আইনি ভাষায় এটিকে প্রকৃত দখল বলা হয়।
*৪. খাজনার রশিদ (Tax Receipt)
সরকারি খাজনা নিয়মিত পরিশোধ করা জমির বৈধ মালিকানা নিশ্চিত করে।বর্তমানে অনলাইনেও খাজনা পরিশোধ করে রশিদ পাওয়া যায়।
*৫. ডিসিআর (Duplicate Carbon Receipt)
নামজারি সম্পন্ন হলে ডিসিআর পাওয়া যায়।এটি মালিকানা পরিবর্তনের সরকারি প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়।
পারিবারিক বণ্টন ও বাটোয়ারার নিয়ম
পরিবারে জমি ভাগ না হলেও,রেকর্ড যদি কেবল কিছু ভাইয়ের নামে থাকে,তবুও অন্য ভাই-বোনদের অধিকার থাকে। প্রয়োজনে বাটোয়ারা মামলা করে নিজ নিজ অংশ আদায় করা যায়।
অতিরিক্ত কাগজপত্র ও হলফনামা যেগুলো প্রয়োজন হতে পারে
* জাতীয় পরিচয়পত্র,জন্ম নিবন্ধন,পাসপোর্ট
* নাম সংশোধনের হলফনামা
* ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা
* বিবাহ/তালাক সংক্রান্ত হলফনামা
* কোড ম্যারেজ বা যৌথ বিবাহের হলফনামা
যেকোনো হলফনামা বা এফিডেভিটের জন্য সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বা সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
বিশেষ পরামর্শ
* দলিল না থাকলেও খতিয়ান,নামজারি,ভোগদখল,খাজনা রশিদ ও ডিসিআর থাকলে জমির মালিকানা প্রমাণ করা সম্ভব।
* যেকোনো জটিল পরিস্থিতিতে অবশ্যই অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
* ভূমি অফিস বা স্থানীয় এসিএল (সহকারী কমিশনার-ভূমি) এর সঙ্গে যোগাযোগ করলে মালিকানা বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
















