জাতীয়

নির্বাচনের সময় কোনো কোনো মহল ভারতবিরোধী তাস খেলার চেষ্টা করেছে-পররাষ্ট্রমন্ত্রী,হাছান মাহমুদ

  প্রতিনিধি ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৩:৩০:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।ভারত সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন,নির্বাচনের সময় কোনো কোনো মহল ভারতবিরোধী তাস খেলার চেষ্টা করেছে।নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা রয়েছে।ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম বাংলাদেশ কেনে।আগামী দিনেও কিনবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভারত সফরের তৃতীয় দিনে নয়াদিল্লিতে ‘বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনে’ এক অনুষ্ঠানে ভাষণের পর প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনাবেচাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,‘আমরা ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনি। এ জন্য ভারত ৫০ কোটি ডলার ঋণও দিয়েছে।সেটার সদ্ব্যবহারও আমরা করছি।তবে আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী নই।এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞও নই।কাজেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রযুক্তিগত বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করার যোগ্য নই।তবে এটুকু বলতে পারি, এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে।ভারত থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমরা কিনি।ভবিষ্যতেও কিনব।’

এটা সামান্য একটা সমস্যা।এর চেয়ে অনেক বড় সমস্যার সমাধান আমরা দুই দেশ মিলেমিশে করেছি।যেমন স্থলসীমান্ত নির্ধারণ। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে অধরা সেই সমস্যার সমাধান আমরা দুই দেশ আলোচনার মধ্য দিয়ে করেছি।এই সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,ভারতের তৈরি হালকা সামরিক বিমান ‘তেজস’, ‘ধ্রুব’ হেলিকপ্টারসহ বেশ কিছু সামরিক সম্ভার পেতে বাংলাদেশ আগ্রহ দেখিয়েছে।বাংলাদেশে রাশিয়ার তৈরি ‘এমআই ১৭’ বহরের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও ভারত আগ্রহ দেখিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারে কতটা অগ্রগতি হয়েছে—সাংবাদিকেরা এমন প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ ওই উত্তর দেন।স্পষ্টতই,২০১৭ সালে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনাবেচার জন্য বাংলাদেশকে যে ঋণ দেওয়া হয়েছিল,এবার তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রীর এটাই প্রথম ভারত সফর।সংগত কারণেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রশ্ন তাঁকে করা হয়।যেমন প্রশ্ন করা হয়,এত সহযোগিতা সত্ত্বেও সে দেশে ভারতবিরোধিতার মাত্রা কেন বেড়ে চলেছে।এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক কালের ‘আউট ইন্ডিয়া’ ক্যাম্পেইন বা ভারতীয় পণ্য বর্জন করার বিষয়টিও ওঠে।এর জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,নির্বাচনের সময় কোনো কোনো মহল ভারতবিরোধী তাস খেলার চেষ্টা করেছে।কিন্তু তা কাজে আসেনি।এখন তারা যা করছে (আউট ইন্ডিয়া),সেই ট্যাবলেট বা ক্যাপসুলেও কোনো কাজ হবে না।ওই তাস অকেজো হয়ে গেছে।তিনি বলেন,বিএনপি–জামায়াত ওই কার্ড ভোটের আগেও খেলেছিল।কাজ হয়নি।এবারেও হবে না।

বাংলাদেশে এ মুহূর্তে অন্যতম আলোচিত বিষয় ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’র জিআই ট্যাগ পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া। এ নিয়ে বিস্ময়ের পাশাপাশি ক্ষোভের উদ্‌গিরণও ঘটে চলেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন,ভারতকে ধন্যবাদ।ভারত সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ।কারণ,তারা গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে।নির্বাচনী প্রক্রিয়া বানচাল করতে চেয়েছিল অনেকে।ভারত তা প্রতিহত করেছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে ভারত পাশে দাঁড়িয়েছিল,এবার ভোটের সময়েও তেমনই দৃঢ়তা দেখিয়েছে। সেই কারণে নির্বাচনও সুষ্ঠু,অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ও ভারতীয় উপমহাদেশের নিরিখে এই নির্বাচন ভালো হয়েছে।

বাংলাদেশের মন্ত্রীদের সংবাদ সম্মেলনে সব সময় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ‘অত্যাচার’ ও তাদের অবস্থাজনিত প্রশ্ন ওঠে। হাছান মাহমুদকেও তেমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশের হিন্দুদের অধিকার রক্ষিত আছে।সেটা রয়েছে, কারণ ধর্মনিরপেক্ষতা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। যদিও কিছু কিছু মৌলবাদী এই সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করেই চলে।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে তাদের মোকাবিলা করেন,যারা ধর্মের নামে সমাজকে বিভক্ত করতে চায়।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন,সরকারের নীতি ও দেশের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র রক্ষার জন্যই বাংলাদেশে প্রতি ৩০০ জনের জন্য একটি করে দুর্গাপূজার আয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গে সে ক্ষেত্রে আয়োজন হয় প্রতি এক হাজার জনের জন্য একটি দুর্গাপূজার।

বাংলাদেশে এ মুহূর্তে অন্যতম আলোচিত বিষয় ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’র জিআই ট্যাগ পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া।এ নিয়ে বিস্ময়ের পাশাপাশি ক্ষোভের উদ্‌গিরণও ঘটে চলেছে।হাছান মাহমুদকে এ নিয়েও প্রশ্ন করা হয়।জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা সামান্য একটা সমস্যা।এর চেয়ে অনেক বড় সমস্যার সমাধান আমরা দুই দেশ মিলেমিশে করেছি।যেমন স্থলসীমান্ত নির্ধারণ। ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে অধরা সেই সমস্যার সমাধান আমরা দুই দেশ আলোচনার মধ্য দিয়ে করেছি।এই সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে।’ বোঝা যাচ্ছে, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’র জিআই ট্যাগ নিয়ে গড়ে ওঠা বিতর্কের অবসান ও স্পর্শকাতরতা দূর করতে দুই দেশ যৌথভাবে এগোতে চাইছে।

আরও খবর

Sponsered content