প্রতিনিধি ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ , ১:৫৪:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি।।ইন্দোনেশিয়া থেকে আমাদানি করা নন এসি প্রথম শ্রেণির কোচ দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা ও পার্বতীপুর রেল ইয়ার্ডে পড়ে আছে।
তাহলে কী পড়ে পড়ে নষ্ট হবে কোটি কোটি টাকায় আমদানি করা রেলকোচগুলো? কেন ওই কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত হচ্ছে না? এ রকম নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগীদের মনে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়,গত ২০১৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্রডগেজ লাইনের (বড় লাইন) ৫০টি ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে।আধুনিক ওই কোচগুলো ইন্দোনেশিয়া রেলওয়ে কারখানা পিটি ইনকায় তৈরি।
ওই বহরে ছিল শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) স্লিপার কোচ, এসি চেয়ার কোচ,নন এসি চেয়ার কোচ ও ট্রেনের বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পাওয়ার কার।ওই কোচগুলোর সঙ্গে ছিল চারটি নন এসি প্রথম শ্রেণির স্লিপার কোচ।
যা দিয়ে চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচলকারী নীলসাগর এক্সপ্রেসসহ চারটি ট্রেন চালু করা হয়।নন এসি প্রথম শ্রেণির সিপ্লার কোচগুলো চারটি ট্রেনে যুক্ত ছিল।কিন্তু করোনাকালে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কোচগুলো রেলবহর থেকে খুলে রাখা হয়।পরে আবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ওই কোচগুলো আর রেলবহরে যুক্ত হয়নি।এর দু’টি সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপে ও দু’টি পার্বতীপুর রেল ইয়ার্ডে পড়ে আছে।
কী কারণে কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত করা হচ্ছে না জানতে চাইলে লালমনিরহাটের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই) মো. তাসরুদ জামান বলেন,কিছু টেকনিক্যাল ত্রুটি আছে ওই কোচগুলোতে।একটি কোচের সঙ্গে আরেকটি কোচ যুক্ত করতে আমাদের দেশে যে সংযোগের ব্যবস্থা রয়েছে,ওই কোচগুলোতে তার ভিন্নতা রয়েছে।যেমন এর দু’টি স্ক্রু কাপলিং ও দু’টিতে রয়েছে সিভিসি ব্যবস্থা।কাজেই সব ট্রেনের সঙ্গে এগুলো যুক্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি বলেন,এ ধরনের ত্রুটি অপসারণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
রেলের হিসাব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ দত্ত বলেন,ওই চারটি কোচ তিন বছর ধরে পড়ে আছে।কেন পড়ে আছে,তা আমি জানি না।অথচ এসব রেলবহরে যুক্ত হলে অনেক টাকা রাজস্ব আয় হবে।এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ কেন ভাবছে না,তা বোধগম্য নয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় গিয়ে দেখা যায়,দু’টি প্রথম শ্রেণির নন এসি কোচ পড়ে আছে ওয়াগন শপের ইয়ার্ডে। এরই মধ্যে এসবে জং ধরতে শুরু করেছে।আশপাশে জঙ্গলে ভরে গেছে।কোচগুলোর ভেতরে আরও ভয়াবহ অবস্থা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক কর্মচারী জানান, কোচগুলো এভাবে পড়ে থাকায় আমাদের কষ্ট হচ্ছে।এরই মধ্যে এসব কোচ থেকে খুলে নেওয়া হয়েছে চাকা।যা মেরামতের জন্য অন্য কোচে ব্যবহার হয়েছে।
রেলের একটি সূত্র জানায়,আমদানি করা এর একেকটি কোচের মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।কোচগুলো আবার মেরামত করে রেলবহরে যুক্ত করা যেতে পারে।
এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগী তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমানের সঙ্গে।তিনি বলেন, নন এসি কোচগুলো ভালো অবস্থাতেই আছে।সংশ্লিষ্টরা চাহিদা পত্র দিলেই সামান্য মেরামত করে কোচগুলো রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা যাবে।