অপরাধ-আইন-আদালত

ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গ করে বাইকে আগুন দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে কারাগারে

  প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৩:৪৯:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাজধানীর আফতাবনগর হাউজিং এলাকায় ট্র্যাফিক পুলিশ বাইকের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা দিয়েছে— এমন অভিযোগ তুলে বাইকে আগুন দেন রাসেল ওরফে জুনিয়র টাইগার শ্রফ।সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই তিনি বাইকে আগুন দেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি পুলিশ বলছে,রাসেলের সঙ্গে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।বরং তার এক বন্ধুকে ট্র্যাফিক আইন ভাঙার দায়ে মামলা দেয় ট্র্যাফিক পুলিশ।তিনি সেই মামলার স্লিপ দেখিয়ে নিজের পাঁচ লাখ টাকা দামের বাইকে আগুন দেন।তিনি এই ভিডিও থেকে আয় করেছেন ২০০ ডলার।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন,বর্তমানে আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বাইকারের ভিডিও দেখতে পাই।তাদের মধ্যে ছেলে-মেয়ে উভয়ই মূলত ইউটিউবার।তারা একটা গ্রুপ নিয়ে নিয়মিত দ্রুত গতিতে বাইক চালায়।সে নিজেকে জুনিয়র টাইগার পরিচয় দিত।তার একটি গ্রুপ আছে,সেই গ্রুপে মেয়েরাও আছে।এসব মেয়েদের নিয়ে সে দ্রুতগতিতে বাইক চালায়।

সম্প্রতি রাসেল পাঁচ লাখ টাকা দামের একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়।পরবর্তী সময়ে আমরা তাকে আটক ও তার মোটরসাইকেল জব্দ করি।পরবর্তী সময়ে দেখা যায়,তার মোটরসাইকেলে উচ্চ শব্দের একটি যন্ত্র লাগিয়েছে।এসব যন্ত্র লাগানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।তার ভিডিওতে যে মামলার তথ্য দিয়েছে,আসলে এমন কোনো ঘটনা তার সঙ্গে ঘটেনি।বরং ফুয়াদ নামে তার এক বন্ধুর মামলার স্লিপ।সেই ফুয়াদও বিপজ্জনকভাবে মোটরসাইকেল চালানো,সিগন্যাল অমান্য করা এবং অবৈধ উচ্চ শব্দের যন্ত্র সংযোজনের দায়ে এই মামলা খেয়েছে।

মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর এলাকার প্রবাসী পিতা-মাতার সন্তান রাসেল।সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জুনিয়র টাইগার শ্রফ পরিচয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে অন্যের বানানো নানা ধরনের কনটেন্ট পোস্ট করত।যার অধিকাংশই অর্থহীন, অশালীন ও দেশের আইনবিরোধী।

বখে যাওয়া রাসেল ২০২০ সালে এইচএসসি পাশ করার পরে আর কোনো পড়াশোনা করেনি।মাঝে কিছু সময় ইন্ডিয়াতে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে জুনিয়র টাইগার শ্রফ পরিচয় দিত।সে মোটরসাইকেল স্পিডিং স্ট্যান্টসহ বিভিন্ন ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছাড়ত।এতে তার সামান্য আয় হতো।সে তার আয় বাড়াতে এই কাজ করেছে।

রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়,তার বাবা-মা বিদেশে থাকে।দেশে বসে একটি মোটরসাইকেল কিনে বখাটে বখে যাওয়া রাসেল প্রতিদিন রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট রোড, মাওয়া আফতাবনগর এলাকায় বিকট শব্দের বাইক খেলা, হাই স্পিডিং,বাইক স্ট্যান্ড এবং দলবেঁধে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অশ্লীলপনা চালিয়ে আসছিল।এছাড়া,সে যুবক-যুবতীদেরকে নিয়ে বিপজ্জনক ও অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ভিউ বাড়ানোর চেষ্টা করে।তার কিছু ভিডিওতে মিলিয়ন ভিউ হলে সে নিয়মিত জুয়ার সাইট প্রমোট করত।

হারুন অর রশিদ বলেন,প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল হতে ও হিরোইজম দেখাতে গিয়ে সে এ কাজটি করেছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।রাসেলের সঙ্গে জড়িত তরুণ-তরুণীদের নাম-পরিচয় পেয়েছে ডিবি।তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content