সারাদেশের খবর

গোপালগঞ্জের এসিল্যান্ডকে স্যার না বলায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপেছেন!

  প্রতিনিধি ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ২:২৫:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি।।স্যার না বলে ভাই বলায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের ওপর রেগে গেলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুন খান।শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুঠোফোনে একটি সংবাদের বক্তব্য নেওয়ার সময় ভাই সম্বোধন করায় স্থানীয় ওই সাংবাদিকের ওপর রেগে যান এসিল্যান্ড।

সদর উপজেলার ঘোষেরচর মৌজার একটি জমির বিষয়ে মুঠোফোনে বক্তব্য নিতে তাকে ফোন করেন জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি আশিক জামান। এ সময় এসিল্যান্ডকে নিজের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার শুরুতেই ‘ভাই যে বিষয়ে ফোন দিয়েছি’ বলাতে এসিল্যান্ড রেগে গিয়ে সাংবাদিককে বলেন,তার আগে বলেন আপনি এসিল্যান্ডকে ভাই কেন বলতেছেন,আমি আপনার কেমন ভাই’।পরে একজন সাংবাদিক এসিল্যান্ডকে কী বলে ডাকবে তা জানতে চাইলে মামুন খান বলেন,একজন সাংবাদিক কী এসিল্যান্ডকে ভাই বলে ডাকবে?আপনার স্যার ডাকতে হবে না।আপনার ভাব বেশি।আপনি স্যার বলতে বাধ্য নন কিন্তু মিনিমাম একটা ডেকোরাম আছে’।

স্যার ডাকলে তিনি খুশি কিনা জানতে চাইলে এসিল্যান্ড বলেন, ‘না না আপনার স্যার ডাকতে হবে না।কিন্তু কখনো ভাই ডাকবেন না।এটা ফরমাল কোনো ডেকোরাম না।’

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ রিপোর্টার্স ফোরামের নির্বাহী সদস্য বাদল সাহা বলেন,সাংবাদিকরা কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে স্যার বলতে বাধ্য নয়।যদি তাকে স্যার ডাকতে হয় তবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরাই ডাকবেন।কোনো সাংবাদিক তাদের স্যার ডাকবেন না।এ বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কড়া নির্দেশনাও দিয়েছেন।আর ভাই বলাটা দোষের না।

গোপালগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেত আহমেদ বলেন,প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তাকে কেন স্যার ডাকতে হবে?!আর ভাই বলা তো দোষ বা ভুল কিছু না।ভাই ডাক শুনে যদি কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারী ক্ষেপে যান তাহলে বুঝতে হবে সেটি তার অহংকারের বহিঃপ্রকাশ।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম হুমায়ুন কবির বলেন,শুধু সাংবাদিকরাই নয়,একজন সাধারণ মানুষও একজন এসিল্যান্ডকে স্যার ডাকতে বাধ্য নয়।এটা আশা করা টা ঠিক নয়।তার অধীনে যারা চাকরি করেন তারা তাকে স্যার ডাকতে পারেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান জাকিয়া মুক্তা বলেন,রাষ্ট্রীয় পদস্থ কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকেই সাধারণ জনগণের স্যার সম্বোধন করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।উক্ত সম্বোধন কেবল পদস্থ কারোর অধস্তন কেউ করতে বাধ্য।বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী,অর্থাৎ জনগণই এর মূল ক্ষমতার উৎস। স্যার সম্বোধন করতে হলে বরং সাধারণ জনগণকে তারা করবে,যেহেতু জনগণের করের টাকায় তাদের বেতন হয়। সুতরাং সম্মান দেখিয়ে কেউ যদি তাদের স্যার ডাকে,তখন বরং বক্তাকে তাদের পক্ষ থেকে বলা প্রয়োজন তারা সাধারণের সেবক,স্যার বা ঊর্ধ্বতন কেউ নয়।এ ধরনের যেকোনো ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও এ রকম দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো প্রয়োজন বলেই আমি মনে করছি।

গোপালগঞ্জের প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি আমি জেনেছি।তার কাজ হচ্ছে সেবা দেওয়া কে ভাই বললো বা স্যার বলে ডাকলো সেটি দেখা তার কাজ নয়।তাছাড়া একজন সাংবাদিক তাকে ভাই বলে ডাকলে সে তো রাগ হতে পারে না।আমি বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখছি এবং তার কাছে শুনতেছি কেন তিনি ভাই বলায় রেগে গেলেন।

আরও খবর

Sponsered content