অপরাধ-আইন-আদালত

কমিশনের চেয়ারপারসনের বক্তব্যে আইন ও সালিশ কেন্দ্র যারপারনাই বিস্মিত

  প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২৪ , ৪:৩৭:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন দাবি করে দেয়া মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসনের বক্তব্যকে দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।সংগঠনটি বলছে,১০টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলছে,একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তার এমন বক্তব্য নি:সন্দেহে আমাদের শংকিত করে তোলে এবং চূড়ান্তভাবে হতাশ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) সারা বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং ৩১ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।ওই সংবাদ সম্মেলনে আসক এর কাছে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বর্তমানে কী পর্যায়ে আছে সে বিষয়ে সাংবাদিকরা আসকের মতামত জানতে চাইলে আসকের পক্ষ থেকে সংগঠনটির চেয়ারপারসন,সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না বর্তমানে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘অস্বস্তিকর’ বলে মন্তব্য করেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদন ও মন্তব্য প্রসঙ্গে একটি বেসরকারি টেলিভিশন থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের কাছে মতামত জানতে চাওয়া হলে,তিনি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘কোনোভাবেই অস্বস্তিকর পর্যায়ে নেই’ বলে মন্তব্য করেন।বরং এক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।তিনি আরও বলেছেন, ‘কাউকে কালিমালিপ্ত করার জন্য ঢালাও কথা বলে দিলে তো হলো না।একেবারে শেষ হয়ে গেছে,অস্বস্তিকর আছে, এসব কথা ভিত্তিহীন।’

এমন অবস্থায় আসক উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, কমিশনের চেয়ারপারসনের বক্তব্যে আইন ও সালিশ কেন্দ্র যারপারনাই বিস্মিত।আসকের প্রতিবেদন মূলত ১০টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ভিত্তিতে সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে। মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে নাগরিক সংগঠন ও মানবাধিকারকর্মীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর প্রতিষ্ঠিত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তার কাছ থেকে এমন বক্তব্য আসা ‘অপ্রত্যাশিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক’।

বিদ্যমান মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে এরইমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে সংশ্লিষ্টরা,আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন কিংবা জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার ব্যবস্থা সময়ে সময়ে তাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার বিষয়টি জানিয়েছে।মত প্রকাশ ও নাগরিক অধিকার চর্চার ক্ষেত্র দিন দিন যে আরো বেশি সংকুচিত হয়ে পড়েছে,সে বিষয়টি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিবেদনে সুষ্পষ্টভাবে এবং বারবার উঠে এসেছে।এমন পরিস্থিতিতে কমিশনের চেয়ারপারসন,যিনি মূলত সরকার এবং নাগরিক সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীদের সংযোগস্থল হিসেবে এবং মানবাধিকারকর্মীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করবেন বলেই প্রত্যাশিত এবং সুনির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত,তার এমন বক্তব্য নিঃসন্দেহে আমাদের শঙ্কিত করে তোলে এবং চূড়ান্তভাবে হতাশ করে।

আরও খবর

Sponsered content