প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৩ , ৫:০১:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার মাসুমা খাতুনকে নির্যাতন ও অপহরণের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।প্রাক্তন স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার পরিকল্পনায় ওই নারী কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান,এই অপহরণে অংশ নিয়েছে ওই নারী কর্মকর্তার আগের গাড়ি চালক মাসুদসহ সাতজন।
পঞ্চাশ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে অপহরণের পর নির্যাতন করে পা ভেঙে দেয়ার ঘটনার পরেই আলোচনায় আসেন ওই নারী কর্মকর্তা।
এর আগে ওই কর্মকর্তার বর্তমান স্বামী রমনা মডেল থানায় একটি অপহরণের জিডি করেন,সেই জিডিতে আগের স্বামী হারুন অর রশিদকে সন্দেহ করেন তিনি।পরে উদ্ধার হওয়ার পর ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে আগের গাড়ি চালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
যদিও র্যাব জানায়,মামলার অভিযোগপত্রে প্রথম স্বামী হারুনের নাম উল্লেখ করেননি ভুক্তভোগী নারী৷ সেই সময় তিনজকে গ্রেফতার করা হলেও মূল আসামিসহ তিনজন পলাতক ছিল।
এই ঘটনায় শুক্রবার মধ্যরাতে মূল আসামি মাসুদসহ তিনজনকে গাজীপুর ও ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব৷ প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে তারা জানিয়েছে,হারুন অর রশিদ এই অপহরণের মূলহোতা।র্যাব জানায়,অপহরণের জন্য অগ্রিম ৭০ হাজার টাকা নেয় চক্রটি।
খন্দকার আল মঈন বলেন,পরিকল্পনা অনুযায়ী হারুন ৫০ হাজার টাকায় হাতিরঝিল এলাকায় একটি বাসা নেন।তবে অপহরণের পর মাসুমাকে ওই বাসায় নেয়া সম্ভব হয় না।এর বদলে তাকে নেয়া হয় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকার একটি গ্যারেজে।সেখানে গাড়িতেই মাসুমাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরদিন তাকে নেয়া হয় মাদারটেক এলাকায়।সেখানে তার চিৎকারে এলাকাবাসীর হাতে আটক হন তিনজন।পালিয়ে যান মাসুদসহ চারজন।
তিনি বলেন,ওই নারী কর্মকর্তার আগের চালক ২০ দিন গাড়ি চালিয়েছেন,তখন নানান অনিয়মের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।তখন থেকেই তার প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় ওই চালকের।তবে এর আগে থেকেই ওই নারীর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল ওই চালকের।
এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী সাবেক স্বামী হারুন অর রশিদের ব্যাপারে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে র্যাব।
মাসুদ ছাড়াও শুক্রবার আরও যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন- আব্দুল জলিল ওরফে পনু ও মো. হাফিজ ওরফে শাহিন।এলাকাবাসীর হাতে আটক তিনজন হলেন- সাইফুল ইসলাম,আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে সাব্বির ও ইয়াছিন আরাফাত রাজু।
জানা গেছে,গত ১৮ অগাস্ট রাত ৮টার দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মাসুমা ও তার গাড়িচালককে কয়েকজন মারধর করে।এরপর মাসুমাকে তুলে নিয়ে সবুজবাগ থানা এলাকার একটি গ্যারেজে ১৮ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।এসময় ওই কর্মকর্তার পা ভেঙে যায়।তার চোখেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়।