আন্তর্জাতিক

উড়িষ্যা ঘূর্ণিঝড় দানা’-র দাপটে লন্ডভন্ড

  প্রতিনিধি ২৫ অক্টোবর ২০২৪ , ৫:০৪:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

0Shares

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।ভারতে উড়িষ্যা উপকূলে বুধবার রাতে ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় দানা।শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সেই ঝড়ের দাপট চলে।

‘দানা’-র দাপটে তছনছ হয়ে গেছে উড়িষ্যা উপকূল।গাছ উপড়ে গেছে।বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।চলছে তুমুল ঝড়বৃষ্টি।ওদিকে,পশ্চিমবঙ্গে দানায় একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কায় ছিল উড়িষ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ।এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দুই রাজ্যের একাধিক অঞ্চলে পড়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে একজনের মৃত্যু হলেও জড়ে তেমন তাণ্ডব দেখা যায়নি।আবার উড়িষ্যাতে তুলনামূলকভাবে ক্ষতি বেশি হলেও প্রাণহানি এড়ানো গেছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার রাতে উড়িষ্যার ভিতরকণিকা এবং ধামরার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে ঝড় আঘাত হানে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।শুক্রবার সকালে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের শেষ অংশ।

উড়িষ্যার ভদ্রক,কেন্দ্রাপাড়া,বালেশ্বর,জগৎসিংহপুরে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাওয়ার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার।অতিভারি বৃষ্টি হচ্ছে এই এলাকাগুলোতে।

উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে একের পর এক গাছ উপড়ে পড়েছে।ভুবনেশ্বরেও ঝড়ের প্রভাব পড়েছে। তুমুল ঝড়বৃষ্টিতে সেখানে স্পেশাল রিলিফ কমিশনারের কার্যালায়ের গাছই ভেঙে পড়েছে।উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। কাঁচা বাড়ি ভেঙে গেছে, বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে।

যত্রতত্র ভেঙে পড়ে রয়েছে দোকানের সাইনবোর্ড,উড়ে গেছে বাড়ির চাল।সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসের জেরে পুরীর সমুদ্র সৈকতের ক্ষতি হয়েছে।পর্যটকরা হোটেলবন্দি হয়ে পড়েছেন।

দর্শন বন্ধ রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে।উড়িষ্যার বিজু পট্টনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়।শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কোনও উড়োজাহাজ ওড়েনি।

অন্যদিকে,পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম,খেজুরিসহ একাধিক এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে।প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী অংশেও।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টি হলেও ঝড়ের তাণ্ডব তেমন দেখা যায়নি।উড়িষ্যায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সময় কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।

মাঝরাত থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি চললেও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট তেমন ছিল না।আবহবিদদের কেউ কেউ মনে করছেন,দানার ব্যপ্তি কম ছিল।অর্থাৎ,এই ঘূর্ণিঝড় ছিল স্বল্প পরিসরের মধ্যে আবদ্ধ।ঘূর্ণিঝড়ের ব্যপ্তি বেশি হলে তার প্রভাবও বেশি হয়।দানার ক্ষেত্রে তা হয়নি।

পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য দুই রাজ্যেরই উপকূলবর্তী অঞ্চলে যেখানে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।মোতায়েন করা হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর বড় দল।

শুক্রবার উপদ্রুত অঞ্চলে বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ কাজ চালায়।তবে আশঙ্কা থাকলেও তেমন বড়সড় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সোমনাথ দত্ত জানান,দানা স্থলভাগে প্রবেশের পর পরই দুর্বল হতে শুরু করে।এ কারণেই তার প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে তার মতে,এ সবের পাশাপাশি,ঘূর্ণিঝড় যেখানে রয়েছে,সেখানকার বায়ুস্তর,জলীয় বাষ্পও বিবেচনায় নিলে তবেই জানা যাবে কী ভাবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেকে রক্ষা পেল পশ্চিমবঙ্গ।

0Shares

আরও খবর

Sponsered content

0 Shares