স্বাস্হ্য ও জীবন পরিচর্যা

আজমত উল্লাহ খান তিন ঘণ্টা সড়ক বন্ধ রেখে জনসভা করছে

  প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২৩ , ৫:০৯:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি।।জনগণ বা যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে,এমন কোনো সড়কে পথসভা না করার নির্দেশনা রয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধিমালায়।কিন্তু আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণায় গিয়ে এ নির্দেশনা মানলেন না আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান।নগরের পূবাইল মাজুখান এলাকার একটি সড়কের ওপর নির্বাচনী পথসভার আয়োজন করেন তিনি। এতে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল।

সড়কটির নাম মাজুখান-হারবাইদ সড়ক।সড়কটি টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের মাঝুখান বাজার এলাকায়। এ সড়ক ধরে হারবাইদের বিভিন্ন এলাকা ও চট্টগ্রাম সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত উলুখোলা যাওয়া যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়,সড়কের মুখেই আয়োজন করা হয় পথসভার।সেখানে প্রার্থী আজমত উল্লাসহ অতিথিদের বসার জন্য রাখা হয় বড় আকারের একটি টেবিল।সামনে বসানো হয় বেশ কিছু চেয়ার। নেতা–কর্মীদের উপস্থিতিতে সড়কটি দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।বেলা ১১টা থেকে কর্মী–সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে জড়ো হন সভাস্থলে।বেলা পৌনে দুইটার দিকে সভা শেষ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় সড়কের ফুটপাতও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।বিকল্প রাস্তা না পেয়ে পথচারীরা বাধ্য হয়ে নেতা–কর্মীদের ভিড়ের মধ্যে ঠেলেঠুলে কোনোরকমে রাস্তা পার হচ্ছিলেন।

অনেক কষ্টে সড়কটি পার হচ্ছিলেন রোকসানা বেগম নামের এক নারী।নিজেকে নগরের মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন,এটাই তাঁর বাসায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তা।সকালেও রাস্তা পরিষ্কার দেখে বের হয়েছিলেন।এর মধ্যে বাসায় ফেরার পথে দেখেন এ অবস্থা। বাসায় যেতে ভিড় ঠেলে যাওয়া ছাড়া তাঁর কোনো গতি ছিল না।

সড়ক বন্ধ করে পথসভার বিষয়ে জানতে আজমত উল্লার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।তিনি বলেন,আমি কোনো সড়কে পথসভা করি নাই।পথসভা হইছে সড়কের পাশে।আর আমি কোথাও গেলে এত মানুষজন আসে,তাতে আমার তো কিছু করার নাই।আমি বাসা থেকে একটা গাড়ি নিয়া বার হই,কিন্তু তারপরও মানুষে ভরে যায়।’

এর আগে নির্বাচনের প্রচার শুরুর আগেই আজমত উল্লার বিপক্ষে আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ এনেছিল নির্বাচন কমিশন।নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত মানুষ নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়েছিলেন তিনি।এ ছাড়া প্রতীক বরাদ্দের আগেই ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে নৌকার মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।যেখানে প্রার্থী আজমত উল্লা খানও উপস্থিত ছিলেন।

দুই দফা আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে আজমত উল্লাকে সশরীরে ডেকে পাঠায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।৭ মে ইসিতে গিয়ে আচরণবিধির ভাঙার জন্য দুঃখ প্রকাশ করার পাশাপাশি ক্ষমা চেয় আসেন তিনি।

নির্বাচনী আচরণবিধিমালা অনুযায়ী,কোনো পথসভা বা ঘরোয়া সভা করতে হলে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে সভার জায়গা ও সময় সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে, যেন ওই স্থানে চলাচল ও আইনশৃঙ্খলার জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

তবে জনগণ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে,এমন কোনো সড়কে পথসভা করতে পারবেন না।কোনো মঞ্চও স্থাপন করা যাবে না।ওই সব জায়গায় মিছিল বা শোভাযাত্রার ওপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।প্রমাণ পাওয়া গেলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সড়কে চলাচলের বিঘ্ন ঘটিয়ে পথসভার বিষয়ে জানতে চাইলে পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন,আমরা খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম।তারা যতটুকু সম্ভব বলে-কয়ে রাস্তা ফাঁকা রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের সঙ্গে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট ছিল না,তাই আমরা কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারি নাই।’

২৫ মে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে।নির্বাচনে মেয়র পদে ৮, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৮ এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।৯ মে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।

আরও খবর

Sponsered content